জুন মাসে ঝাড়খণ্ডে গণপ্রহারে মারা গিয়েছিলেন তবরেজ আনসারি। একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যাতে বলা হচ্ছে যে তবরেজের স্ত্রী আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই খবরটিকে ভিত্তিহীন গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন।
এই প্রতিবেদনটি লেখার সময় ভিডিয়োটি ৮৩,০০০ বারেরও বেশি দেখা হয়েছে। ভিডিয়োটিতে দৃশ্যের পাশাপাশি একটি ভয়েসওভার আছে, যা ভিডিয়োটিকে একটি নিউজ বুলেটিন হিসেবে বিশ্বাসজনক করে তোলার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
ভিডিয়োটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে “তবরেজ আনসারির স্ত্রী গলায় দড়ি দিলেন।” (হিন্দিতে লেখা হয়েছে: तबरेज अंसारी की बीवी ने लगाई फांसी)
ভিডিয়োটি শুরু হয় একটি নাটকীয় ভয়েসওভার দিয়ে। সেই নেপথ্য কণ্ঠটি জানায়, তবরেজের স্ত্রী শাইস্তা পরভীন স্বামীর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
“নমস্কার। অ্যারাউন্ড নিউজে আপনাকে স্বাগত। তবরেজ আনসারির মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীর প্রবল মানসিক আঘাত লাহে। তবরেজ আনসারির স্ত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন, এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।”
আরও বলা হয়েছে, যেহেতু এখনও অপরাধীদের ধরা হয়নি, তাই শাইস্তা পরভীন এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।
ভিডিয়োটি প্রসঙ্গত জানায়, শাইস্তার কাকা তাঁকে দ্রুত রক্ষা করায় তাঁর জীবন বেঁচে যায়।
ভিডিয়োটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গণপ্রহারে তবরেজের মৃত্যুর পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে প্রতিবাদ হয়, এই ভিডিয়োটিতে তেমনই একাধিক মিছিল ও র্যালির ফুটেজ ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ভিডিয়োটিতে রাউন্ড ওয়ার্ল্ড নিউজ-এর, www.SkyIndianews.com ওয়াটারমার্ক রয়েছে।
এই ক্লিপটি ওই ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটি একটি বিনোদনমূলক সংবাদের ওয়েবসাইট, বলিউডের বাণিজ্য সংক্রান্ত খবর পাওয়া যায় তাতে।
বুম অনুসন্ধান করে দেখেছে যে প্রায় একই বর্ণনাসমেত এই ভিডিয়োটি ইউটিউবেও ভাইরাল হয়েছে।
তবরেজের খুড়তুতো ভাই গুলাম আনসারির সঙ্গে বুম যোগাযোগ করে। তিনি বলেন, “আমি বোকারোয় থাকি এবং তবরেজের পরিবারের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। আমি গত রাতেই ওদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওরা এখন খারসওয়ানে আছে। এই আত্মহত্যার চেষ্টার খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
আমরা তবরেজের কাকা মকসুদ আনসারির সঙ্গেও যোগাযোগ করি। তিনি বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা খবর। দুর্ঘটনাটির পর থেকেই আমি পরিবারের সঙ্গে রয়েছি। এই মর্মান্তিক ঘটনার ধাক্কা সামলাতে শাইস্তার কিছু দিন সময় লাগবে, সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে আত্মহত্যার কোনও চেষ্টা করেনি।”
পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট কার্তিক এস-এর সঙ্গেও বুম কথা বলেন। তিনিও গুজবটিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, “ওই পরিবারের থেকে আমরা এমন কোনও খবর পাইনি। এলাকাটি এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি শান্তিপূর্ণ, এবং ফের উত্তেজনা তৈরি করার জন্যই এই গুজবগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ছড়ানো হচ্ছে।”