জি-২৪ ঘন্টার সরকারি টুইটার হ্যান্ডেল হিন্দিকে ভারতের জাতীয় ভাষা ঘোষণা করায় একটি টুইট করে আপত্তি জানিয়েছে । জি-২৪ ঘন্টার একটি বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়, "হিন্দি যদি আমাদের জাতীয় ভাষা হয়, তাহলে কেন এই ভাষায় আমরা কথা বললে সমস্যা হয়?" @TruthofWB টুইটার হ্যান্ডেলটি এই টুইটের একটি স্ক্রিনশট তুলে বলেছে—জি-২৪ ঘন্টা চ্যানেলটি মিথ্যা কথা প্রচার করছে ।
সেই সঙ্গে আরটিআই আইনের (তথ্যের অধিকার আইন) ঘোষণাও টুইটটি উল্লেখ করেছে, যেখানে স্পষ্ট বলা আছে—হিন্দি আমাদের জাতীয় ভাষা নয় । এখানে দেখুন ।
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, জি-২৪ ঘন্টার বুলেটিনের ছবিটি ওই চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠান ভাইরাল ২৪-এ সম্প্রচারিত হয়েছিল । চ্যানেলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বুম জেনেছে, এই অনুষ্ঠানে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্ট ও ভিডিও সংগ্রহ করে সম্প্রচার করা হয় । এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে অনুষ্ঠান সঞ্চালক দর্শকদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন—"হিন্দি যদি আমাদের জাতীয় ভাষা হয়, তাহলে সেই ভাষায় কথা বললে সমস্যা কী?"
আরটিআই-এর উত্তর
২০০৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর এক প্রশ্নের উত্তরে আরটিআই জানিয়েছিল—'ভারতীয় সংবিধানে হিন্দিকে জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার কোনও বিধান নেই' । কেন্দ্রীয় জন তথ্য অফিসার রাকেশ কুমার জানিয়েছিলেন, ''মহারাষ্ট্রের এক আরটিআই আবেদনকারী জানতে চেয়েছিলেন, হিন্দি আমাদের জাতীয় ভাষা কিনা । আমরা আরটিআই-এর কাছে বিষয়টি নিয়ে গেলে উত্তর পাই—ভারতীয় সংবিধানে অন্তত হিন্দিকে জাতীয় ভাষা হিসাবে ঘোষণা করার কোনও সুযোগ নেই'' ।
হিন্দি একটি তালিকাভুক্ত ভাষা
ভারতীয় সংবিধান অনুসারে হিন্দি আমাদের জাতীয় ভাষা নয় । বস্তুত ইংরাজি হচ্ছে আমাদের সরকারি ভাষা এবং সংবিধআনের ৩৪৪ (১) এবং ৩৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এ দেশে মোট ২২টি তালিকাভুক্ত ভাষা রয়েছে, যার মধ্যে হিন্দি একটি ।
যেখানে হিন্দি সহ ২২টি তালিকাভুক্ত ভাষার কথা উল্লেখিত রয়েছে, সংবিধানের সেই অষ্টম তফশিলটি এখানে পড়ে দেখতে পারেন ।
জি-২৪ ঘন্টার বক্তব্য
জি-২৪ ঘন্টার সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরী জানালেন—"ভাইরাল ২৪ অনুষ্ঠানটি ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ব্যঙ্গমূলক পোস্ট সংগ্রহ করে সম্প্রচার করে । এটি একটি ব্যঙ্গবিদ্রূপাত্মক অনুষ্ঠান, যাতে সঞ্চালক দর্শকদের রকমারি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন ।"তাঁর কথায়—"এই সংবাদ-চ্যানেল কারও ওপর হিন্দি চাপিয়ে দিচ্ছে না l সকলেই জানেন, হিন্দি হচ্ছে দেশের তালিকাভুক্ত ভাষাগুলির একটি, জাতীয় ভাষা মোটেই নয় ।"