Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available

Explore

HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
MethodologyNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফ্যাক্ট চেকNo Image is Available
বিশ্লেষণNo Image is Available
ফাস্ট চেকNo Image is Available
আইনNo Image is Available
ফ্যাক্ট চেক

না, ১৪ ফেব্রুয়ারির সঙ্গে ভগৎ সিংহের মৃত্যুর কোনও সম্পর্ক নেই

ভ্যালেন্টাইনস ডে-র বদলে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে শাহাদাত দিবস বা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করার আবেদন চোখে পড়ছে অনেক। ভাইরাল হওয়া পোস্টের দাবি, বিপ্লবী ভগৎ সিংহ, রাজগুরু আর সুখদেবকে এই তারিখেই ফাঁসি দেওয়া হয়।

By - Sumit Usha | 15 Feb 2019 4:03 PM IST

ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ এলেই প্রতি বছর একটা ফেক নিউজ মাথাচাড়া দেয়। তার দাবি, ১৯৩১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিন বিপ্লবী স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগৎ সিংহ, শ্রীভরম রাজগুরু আর সুখদেব থাপারকে ফাঁসি দেওয়া হয়। গত কয়েক বছরে এই দাবি খানিকটা পাল্টেছে। এখন বলা হচ্ছে, ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভগৎ সিংহ, রাজগুরু আর সুখদেবের ফাঁসির হুকুম হয়’। এই দাবির পাশাপাশি প্রায় অবধারিত ভাবে থাকে একটি আবেদন: ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনটাকে ভ্যালেন্টাইনস ডে হিসেবে নয়, পালন করা হয়ো শাহাদাত দিবস বা শহীদ দিবস হিসেবে।

Full View
Full View
তিন স্বাধীনতা সংগ্রামীর ফাঁসির হুকুম হয়েছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি, সেই দাবি করে একটি ফেসবুক পোস্ট

বিশ্ব ভারতী জন কল্যাণ মোর্চা নামে একটি পেজে লেখা হয় যে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের ইতিহাসে একটি কালো দিন, কারণ ১৯৩১ সালে এই দিনই লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় এই তিন জনের ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। যদিও ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল সে বছরের ২৩ মার্চ।

Full View
একই দাবির আরও একটি পোস্ট

আর একটি পোস্টে বলা হয় যে শিবসেনা (বাল ঠাকরে)-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরজিৎ কারওয়াল ও শিবসেনা পাঞ্জাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজেশ পালটা বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসার দিন নয়, বরং একটি কালো দিন, কারণ এই দিনেই তিন বিপ্লবীর ফাঁসির হুকুম হয়েছিল।

এই পোস্টগুলির আর্কাইভড ভার্সান এখানেএখানে পাওয়া যাবে।



একই রকম দাবি করে একটি টুইট


১৪ ফেব্রুয়ারি ভগৎ সিংহ, রাজগুরু ও সুখদেবের ফাঁসি হয়েছিল, দাবি করে একটি টুইট

তবে, এই দাবিটিও খানিক পাল্টেছে। নতুন গুজব ছড়িয়েছে যে ১৯৩১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি এই তিন বিপ্লবীর প্রাণরক্ষা করতে একটি ক্ষমাপ্রার্থনা জমা দেওয়া হয়। দাবি করা হচ্ছে যে সেই ক্ষমাপ্রার্থনা গ্রাহ্য না হওয়ায় ভগবতী চরণ বোমা তৈরি করেন, যা ফাটিয়ে এই বিপ্লবীদের ছিনিয়ে আনা হবে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বোমাটি ফেটে যায় ও চরণের মৃত্যু হয়।

ক্ষমাপ্রাথনা সম্বন্ধে একটি ফেসবুক পোস্ট

তথ্যযাচাই:

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী বিপ্লবী ভগৎ সিংহের জন্ম ১৯০৭ সালে, তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের পঞ্জাব প্রদেশের লায়লপুর জেলায়। ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল ভগৎ সিংহ প্রথম গ্রেফতার হন, দিল্লির সেন্ট্রাল অ্যাসেম্বলি থেকে। তিনি ও বটুকেশ্বর দত্ত অ্যাসেম্বলিতে বোমা ছুঁড়েছিলেন। ১৯২৯ সালের ৭ মে এই মামলার বিচার আরম্ভ হয়, এবং এই দুই অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের সাজা দেওয়া হয়।

পরবর্তী কালে ভগৎ সিংহকে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলাতেও অভিযুক্ত করা হয়। জন পি সান্ডার্স নামে এক ব্রিটিশ পুলিশ অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি ছিলেন লাহোরে পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। এই মামলায় ভগৎ সিংহ, রাজগুরু ও সুখদেবকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। সিংহের ডেথ সার্টিফিকেট ও অন্যান্য নথি অনুসারে জানা যায়, তাঁর ও অন্য দুই বিপ্লবীর ফাঁসি হয় ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ।

ভগৎ সিংহের ডেথ সার্টিফিকেট

লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার বিচারের বিস্তারিত খবর প্রকাশিত হয়েছিল দ্য ট্রিবিউন নামের সংবাদপত্রে। ১৯৩১ সালের ২৫ মার্চ সেই কাগজের প্রথম পাতায় এই তিন স্বাধীনতা সংগ্রামীর ফাঁসির খবর প্রকাশিত হয়। সেই রিপোর্টটির ডিজিটালি আর্কাইভড ভার্সান দেখা যাবে এখানে

তিন বিপ্লবীর বিচারপর্বটি দীর্ঘ দিন ধরে চলেছিল এবং সারা দেশেই তা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। ভাইরাল হওয়া দাবিটির সত্যতা যাচাই করার জন্য বুম এই বিচারের বিস্তারিত তথ্য পরীক্ষা করেছে। বিশিষ্ট আইনবিদ এ জি নুরানি তাঁর দ্য ট্রায়াল অব ভগৎ সিংহপলিটিকস অব জাস্টিস বইটিতে এই বিচারপর্বের বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। খুব বিশদে না গিয়ে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তারিখের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করছি।

মৃত্যুদণ্ড কবে ঘোষিত হয়, নুরানি সেই তারিখটি উল্লেখ করেছেন
আবেদনটি কবে পেশ করা হয়, নুরানি সেই তারিখটি উল্লেখ করেছেন

তাঁর বইয়ে এই বিশিষ্ট আইনবিদ জানিয়েছেন যে ফাঁসির আদেশটি দেওয়া হয়েছিল ১৯৩০ সালের ৭ অক্টোবর। মহাত্মা গাঁধী ও লর্ড আরউইনের মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার শর্ত হিসেবে ভগৎ সিংহদের মৃত্যুদণ্ড রদ করার দাবিও উঠতে আরম্ভ করে ১৯৩১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি।

স্পষ্টইত, এই তিন বিপ্লবীর বিচারপর্বের সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারি তারিখটির কোনও যোগের কথা নুরানির বইয়ের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

ভ্রান্ত তথ্য সুখদেবের আত্মীয়রা ক্ষুব্ধ

২০১৭ সালে সুখদেবের আত্মীয়রা পাঞ্জাব পুলিশের মহানির্দেশককে একটি চিঠি লেখেন। তাঁরা জানান যে সুখদেবের মৃত্যুর ভুল তারিখ প্রচারের ঘটনায় তাঁরা অত্যন্ত ব্যথিত। সুখদেবের উত্তরপুরুষরা স্পষ্ট ভাবে জানান যে এই বিপ্লবীর ফাঁসির আদেশ হয়েছিল ১৯৩০ সালের ৭ অক্টোবর, আর ফাঁসি হয়েছিল ১৯৩১ সালের ২৩ মার্চ। এই বিষয়ে একটি নিউজ রিপোর্ট দেখা যাবে এখানে

শহীদ দিবস

যদিও ১৪ ফেব্রুয়ারিকেই এই তিন বিপ্লবীর প্রাণদণ্ডের তারিখ বলে দাবি করা হয়, এবং দিনটিকে শহীদ দিবস ঘোষণা করার দাবি তোলা হয়, ভারত সরকার কিন্তু ভগৎ সিংহ, রাজগুরু আর সুখদেবের সম্মানে ২৩ মার্চ দিনটিকেই শহীদ দিবস হিসেবে গণ্য করে।
২০১৮ সালের ২৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি টুইট করে তিন বীর শহীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করা হয়। অর্থাৎ, ইতিহাস যে কথা বলছে, সরকারি ভাবে ভারতও এই তিন শহীদ সম্বন্ধে একই তথ্য মানছে।



প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভগৎ সিংহ, রাজগুরু ও সুখদেবের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেছেন।

Related Stories