“Amit Shah Fans ” নামের একটি ফেসবুক পেজ একটা ভিডিও পোস্ট করেছে । বলা হচ্ছে, এটা যোগী আদিত্যনাথের হেলিকপ্টার পশ্চিমবঙ্গে নামার ফুটেজ । দাবিটি ভুয়া । ৩ মিনিট ৮ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে একটি হলুদ রঙের হেলিকপ্টার থেকে নামতে দেখা যাচ্ছে । ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আদিত্যনাথ তাঁর অনুরাগীদের উদ্দেশে হাত নাড়ছেন, তারপর ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, পিছনে “বন্দে মাতরম” স্লোগান শোনা যাচ্ছে মুহুর্মুহু ।
পোস্টটি এখানে দেখুন ।
পোস্টটির মাধ্যমে এই ধারণা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে যে, বিজেপি নেতাদের এ রাজ্যে সভা-সমাবেশ না করতে দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরিয়া প্রয়াস সত্ত্বেও আদিত্যনাথ মমতার সেই প্রয়াস বানচাল করতে সমর্থ হয়েছেন ।
পোস্টটি মোট সাড়ে ৩.৫ লক্ষ বার দেখা হয়েছে ।
তথ্য যাচাই
একের পর এক সভা করার পরিকল্পনা নিয়ে যোগী আদিত্যনাথের পশ্চিমবঙ্গ সফরের সঙ্গে এই ভিডিওটির কোনও সম্পর্ক নেই । ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি এক বছরের পুরনো এবং আদিত্যনাথ যখন ত্রিপুরায় নির্বাচনী জনসভা করতে গিয়েছিলেন, তখন তোলা হয় । বুম ভিডিওটি বিশ্লেষণ করে দেখেছে যে, এটি আদিত্যনাথের ত্রিপুরার একটা জনসভায় তোলা । ভিডিওটির ২৫ সেকেন্ডের মাথায় স্থানীয় মানুষজনকে শিলচরি ভাষায় কথা বলতে শোনা যাচ্ছে । ভিডিওতে যে মোটরগাড়িগুলি দেখা যাচ্ছে, সেগুলির সবেরই নম্বর ত্রিপুরার—TR. এমনকী যে পুলিশের পাইলট কার কিংবা দমকলের গাড়ি দেখা যাচ্ছে, সেগুলির গায়েও ত্রিপুরা কথাটি লেখা আছে ।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যোগী আদিত্যনাথ দলের হয়ে বিধানসভার নির্বাচনী সফরে ত্রিপুরা গিয়েছিলেন । ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি সভা করতে ধর্মনগর, কাঞ্চনপুর এবং যুবরাজপুর যান । এর আগেও ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকা ভিডিওটিকে ভুয়ো বলে নস্যাত্ করেছে।
মজার ব্যাপার হল, আদিত্যনাথের হেলিকপ্টারকে রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে নামার অনুমতি দেয়নি । কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ায় তিনি সভা করে গিয়েছেন । পুরুলিয়ায় তাঁর হেলিকপ্টার নামতে না দেবার অজুহাত ছিল, ওখানে ঠিকঠাক হেলিপ্যাড নেই । তাই আদিত্যনাথের হেলিকপ্টার প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে নামে আর সেখান থেকেই সড়কপথে আদিত্যনাথ পুরুলিয়ায় সভা করে চলে যান ।
এরই মধ্যে যোগী টেলিফোন বক্তৃতা দিয়েও একটি সভা করে ফেলেন । ৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জে আদিত্যনাথের সভা করার কথা ছিল । রাজ্য সরকার তার অনুমতি না দেওয়ায় তিনি টেলি-কনফারেন্স মারফত দলীয় সমাবেশে বক্তৃতা করে চলে যান । তার আগে বালুরঘাটেও একই ভাবে যোগীকে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি ।