মঙ্গলবার ভোরে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহম্মদের (জেইএম) প্রশিক্ষণ শিবিরের ওপর ভারতীয় বায়ু সেনার আক্রমণের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই, সোশাল মিডিয়ায় তথাকথিত মৃত জেইএম জঙ্গিদের ছবি ছড়াতে থাকে।
বুমের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করে বহু হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকরী ছবিগুলি সম্পর্কে জানতে চান।
এই ছবিতে একাধিক মৃতদেহ সারিবদ্ধভাবে মাটিতে শোয়ানো আছে। আর ছবিটির ওপরে লাল ক্যাপশনে লেখা রয়েছে: “সেনাবাহিনীর দ্বারা সন্ত্রাসবাদী খতম”।
তথ্য যাচাই
রিভার্স সার্চ করে বুম দেখে যে, ছবিটি ডিসেম্বর ১৯, ২০১৪ তারিখে তোলা্। স্টক ছবি সরবরাহকারী এজেন্সি গেট্টি ইমেজেস-এর জন্য ছবিটি তোলেন বাসিত শাহ। (এখানে)
ছবিটির বিবরণে বলা হয় দেহগুলি তালিবান জঙ্গিদের। একটি স্কুলে আক্রমণ করে ১৪৯ জনকে হত্যা করার পর, পাকিস্তানি সেনা অভিযানে ওই জঙ্গিরা নিহত হয়।
ছবি-২
এই ছবিটিতে সেনা বাহিনীর লোকেদের তিনজন মৃত লস্কর-এ-তৈবা জঙ্গির দেহ ঘিরে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। আউটলুক ফটো গ্যালারি-র কথা অনুযায়ী, হান্দওয়ারার ওয়ান্দারবল গ্রামে এক গুলির লড়াইয়ে নিহত হয় ওই জঙ্গিরা। ছবিটির জন্য সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে ক্রেডিট দিয়েছে আউটলুক ফটো গ্যালারি।
ফেসবুক পাবলিক গ্রুপ ‘I Support R.S.S में अपने 100 मित्रों को जोड़ें- এর এক সদস্য ওই ছবিটি শেয়ার করেন, যেন সেটি ভারতীয় বায়ু সেনার বিমান হানার ফলাফলের কোনও দৃশ্য। ওই ফেসবুক গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩০৮,৯৭১। পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আর আর্কাইভ সংস্করণ দেখতে এখানে।
“पाकिस्तान विनाश और बर्बादी का जखीरा देख ले
ये तेरे पाक की तस्वीर है जो आज हुआ
हिन्दुस्तान जिंदाबाद !!”
বাংলা ভাষান্তর করলে দাঁড়ায়:
পাকিস্তান ধ্বংসের চেহারা দেখে নাও
তোমার আজ যা হয়েছে, এটা তারই ছবি
হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ
যে ছবিগুলি শেয়ার করা হয়েছে, সেগুলি অক্টোবর ৮, ২০০৫ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বালাকোটের ছবি। (আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন)।
ছবি-৩
ফারুখ নইম ছবিটি তোলেন ১১ অক্টোবর ২০০৫ সালে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বালাকোটের ভূমিকম্পে মৃত শিশুদের শব সারিবদ্ধভাবে রাখছেন পাকিস্তানের বাসিন্দারা। (এখানে )।
পওলা বার্নস্টাইন ছবিটি তোলেন ১৫ অক্টোবর ২০০৫ সালে। তাতে দেখা যাচ্ছে ভূমিকম্পে ভাঙ্গা বাড়িঘর। (এখানে )
ছবি-৫
এই ছবিটিও ফারুখ নইম তোলেন। তোলা হয়, অক্টোবর ১০, ২০০৫-এ। তাতে পাকিস্তানের বাসিন্দাদের ভূমিকম্পের পরে ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে দেখা যাচ্ছে।
ছবি-৬
নভেম্বর ২, ২০১৪ তারিখে এই ছবিটি তোলেন আরিফ আলি। ওয়াগা সীমান্তে পাকিস্তানের দিকে একটি আত্মঘাতি বোমা বিস্ফোরণের পর এই ছবি তোলা হয়। (এখানে ) বিস্ফোরণে নিহতদের হাসপাতালে রাখা দেহগুলির চারপাশে আত্মীয়স্বজনদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। (আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন।
ছবি-৭
আরিফ আলি এই ছবিটি তোলেন নভেম্বর ২, ২০১৪ তারিখে (এখানে )
ওপরের ছবিটি এক জঙ্গির, যে ২০১৫ সালে গুরদাসপুর হামলায় মারা যায়। (এখানে ) ওই একই একে-৪৭ রাইফেল আর জামাকাপড় ‘ডেইলি ও’-তে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনেও দেখা যাচ্ছে।