অসমের রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট অমল মেধির এক কার্টুনকে অদল-বদল করে মার্কিন রাজনৈতিক কার্টুনিস্ট বেন গ্যারিসন’র কাজ বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে কার্টুনটি। তাতে ভারতের পরিস্থিতির প্রতি কটাক্ষ করে দেখানো হয়েছে যে, দেশের সব সুফল ভোগ করছে ক্ষমতাসীন পার্টির সমর্থকরা।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি গরু, যেটিকে বিজেপি হিসেবে দেখানো হয়েছে। সে একটা পাতা খাচ্ছে, আর পাতাটির আকৃতি ভারতের ম্যাপের মত। গরুর দুধ জমা হচ্ছে একটি পাত্রে, যেটি নরেন্দ্র মোদী-পরিচালিত বিজেপি পার্টি ও তার সমর্থকদের প্রতীক। আর গরুটির গোবর জমা পড়ছে একটা গামলায়, যার গায়ে লেখা ‘ভারতের মানুষ’। কার্টুনটির ওপর এক জায়গায় লেখা আছে “ভারতের পরিস্থিতি তুলে ধরছে আমেরিকান কার্টুনিস্ট বেন গ্যারিসনের অসাধারণ কার্টুন”।
পোস্টটি নীচে দেওয়া হল; সেটির আরকাইভ সংস্করণ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্য যাচাই
বুম আমেরিকান কার্টুনিস্ট বেন গ্যারিসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, উনি জানান, ওই রকম কোনও কার্টুন তিনি আাঁকেননি। “এটা বেন গ্যারিসনের কার্টুন নয়। এমনকি বেন’র স্টাইলের ধারে কাছেও যায় না। বেন’র সব কার্টুনই grrrgraphics.com-এ রাখা আছে। ওই কার্টুনটি যদি সেখানে না থেকে থাকে, তা হলে বুঝতে হবে সেটি জাল।”
এমনকি, ওই কার্টুনিস্টের নিজস্ব টুইটার হ্যান্ডল থেকে আগে জানানো হয়েছিল যে, ভুলবশত ওই কার্টুনটির জন্য তাঁকে কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ চালালে ওই কার্টুনের স্রষ্টা অমল মেধির ফেসবুক পেজ উঠে আসে। ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, মেধি বলেন তাঁর কার্টুন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, পুনরায় প্রচারিত হওয়ায় উনি মোটেই আশ্চর্য হচ্ছেন না।
“আমি জানি যে আমার কার্টুন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ একাধিকবার ফোটোশপে বদলানো হয়েছে। নিজেদের ক্যাম্পেনের স্বার্থে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সে কাজ করেছে। ওই কার্টুনটি আমি তৈরি করি এবং ফেসবুকে চার বছর আগে পোস্ট করি। আমি কোনও খবরের কাগজের সঙ্গে সেটি শেয়ার করিনি। কোনও ম্যাগাজিনেও সেটি ব্যবহার করা হয়নি,” জানান মেধি ।
আসল কার্টুনটি নীচে দেওয়া হল।
কপিরাইট লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে মেধি কোনও অভিযোগ করেননি। কিন্তু তিনি বলেন যে, বারবার তাঁর কাজ কপি হতে থাকায় উনি “ক্লান্ত” বোধ করছেন।
কার্টুনটি আগেও ফোটোশপে হয়েছিল
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কার্টুনটি ভারতের পরিস্থিতি বোঝাতে আগেও ব্যবহার করা হয়েছে। তখন সেটি কাজে লাগানো হয়েছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সেখানে, গান্ধী পরিবারকে দুধের পাত্র হিসেবে দেখানো হয়, আর গোবরের গামলাটিকে দেখানো হয় সাধারণ মানুষের প্রতীক হিসেবে।