গুজরাটের সুরাটে অভিবাসী মুসলিমদের ভয় দেখিয়ে “জয় শ্রী রাম” বলতে বাধ্য করার একটি অস্বস্তিকর ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় আত্মপ্রকাশ করেছে, অথচ এটি যে তিন বছর আগের একটি ঘটনার ভিডিও, সে কথা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি ।
এক মিনিট দীর্ঘ এই ভিডিওটিতে অমিত সিং রাঠোর নামে এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, দুজন মুসলিম শ্রমিককে ভয় দেখিয়ে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে নোংরা-নোংরা কথা বলতে এবং “জয় শ্রী রাম” উচ্চারণ করতে বাধ্য করতে । যে ব্যক্তিটি পুরো ঘটনাটা রেকর্ড করছে, পিছনে তার গলাও শোনা যাচ্ছে ।
টুইটারে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত 2300 জন দেখেছে ।
বুম এই ভিডিওটি প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত না-করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । তবে কেউ যদি এর আর্কাইভ সংস্করণ দেখতে চান, তবে এখানে ক্লিক করুন ।
তথ্য যাচাই
বুম এই ভিডিওটিকে আলাদা-আলাদা ফ্রেমে ভেঙে দেখেছে, 5pillarsuk.com নামে একটি ওয়েবসাইটের দিকে সেটি নির্দেশ করছে, যেটি ভিডিওর একটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করেছিল এবং প্রতিবেদনের ক্যাপশন দিয়েছিলঃ উগ্রপন্থীরা দুই মুসলিম কিশোরকে পিটিয়ে হিন্দু দেবতাদের প্রশংসা করতে বাধ্য করেছে । প্রতিবেদনটি 2016-র অগস্টে প্রকাশিত হয় ।
এরপর আমরা ‘গুজরাটে কিশোরদের পেটানো’ শিরোনাম দিয়ে ইন্টারনেটে খোঁজ লাগালে 2016-র 30 অগস্ট ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট দেখতে পাই, যাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুলিশের গড়িমসির বিরুদ্ধে মুসলিমদের প্রতিবাদের কথাও ছাপা হয় ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট লিখছে—“সোমবার সকালেই সুরাটের লিম্বায়ত অঞ্চলে বিহারের দুই মুসলিম কিশোরকে (যারা জারদোজি ইউনিটে কাজ করে) নিগ্রহ করার ভিডিও প্রকাশিত হতেই উত্তেজনা সৃষ্টি হয় । ভিডিওটিতে দেখা যায়, অমিত সিং রাঠোর নামে এক ব্যক্তি ওই দুই শ্রমিককে গোদাদরা এলাকায় তাদের ভাড়াবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করছে, তাদের নিগ্রহ করছে, জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করছে এবং তারপর অন্য কিছু যুবকের সঙ্গে মিলে তাদের পেটাচ্ছে । রাঠোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।”
বুম সুরাটের লিম্বায়ত থানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা ঘটনাটির ও তার তোলা ভিডিওটির সত্যতা স্বীকার করে । সাব-ইনস্পেক্টর মহেন্দ্র সিং সোলাংকি জানান—“অমিত সিং রাঠোর বাস্তবিকই দুই মুসলিম কিশোরকে 2016 সালে নিগ্রহ করে তাদের ধর্মের বিরুদ্ধে কুকথা বলতে বাধ্য করে । ভিডিওটি সে সময় ভাইরাল হয় এবং মুসলিমরা দোষীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভও দেখান । অতঃপর রাঠোরকে একাধিক অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয় ।”
2016 সালেই মোরাদাবাদে একই ভিডিও ভাইরাল হয়
ওই একই ভিডিও ওই মাসেই উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদে ভাইরাল হয়েছিল ।