এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’র (এএনআই) এক প্যারডি অ্যাকাউন্ট, ‘আইএনএ নিউজ’ দাবি করেছে যে, পাকিস্তানের করাচি শহরের একটি মসজিদে ‘বোমা পরীক্ষা’ করতে গিয়ে ১৫ বিজ্ঞানী মারা যান ও ১০ জন আহত হন। অনেক টুইটার ব্যবহারকারী খবরটা সত্যি বলে ধরে নেওয়ায়, সেটি ভাইরাল হয়েছে।
টুইটটি দেখতে
">এখানে ক্লিক করুন, আর তার আরকাইভ সংস্করণ দেখতে এখানে।
এই লেখা লেখার সময় পর্যন্ত, ওই প্যারডি অ্যাকাউন্ট থেকে করা টুইট ১,০০০ বারেরও বেশি রিটুইট করা হয়, এবং ৫০০’রও বেশি মতামত আসে। অনেকেই ধরিয়ে দেন যে টুইট করা হয়েছে একটি প্যারডি অ্যাকাউন্ট থেকে, আবার সেটিকে ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআই বলে ভুল করেন অনেকে।
‘দ্য ফিয়ারলেস ইন্ডিয়ান’ বা নির্ভীক ভারতীয় নামের এক ফেসবুক পেজ ওই প্যারডি অ্যাকাউন্ট থেকে করা টুইটের স্ক্রিনশট শেয়ার করে। সঙ্গে ক্যাপশনে হিন্দিতে লেখা হয়: “पाकिस्तान के 15 वैज्ञानिक हूरों से मिलने चले गए.. “। বাংলায় তা দাঁড়ায়, “পাকিস্তানের ১৫ বিজ্ঞানী অপ্সরাদের সঙ্গে দেখা করতে চলে গেছেন…”।
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন, আর তার আরকাইভ সংস্করণের জন্য, এখানে ।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়, পোস্টটি প্রায় ১,৫০০ প্রতিক্রিয়া পেয়েছিল, আর ৩৮৯ শেয়ার। মতামতগুলির ওপর চোখ বোলালেই বোঝা যায় যে, অনেকেই ওই দাবিকে সত্যি বলে ধরে নিয়েছিলেন।
তথ্য যাচাই
‘ইন্টারেস্টিং নিউজ এজেন্সি’ (ইএনএ) হলো এএনআই-এর এক প্যারডি অ্যাকাউন্ট। তার পরিচিতিতে সে কথা ঘোষণাও করা আছে। বলা আছে এটি “এএনআই নয়” এবং সেটি একটি প্যারডি বা কৌতুকের হ্যান্ডল।
অ্যাকাউন্টটি জুলাই ১৫, ২০১৮’য় চালু করা হয়। এখন পর্যন্ত সেটির ১,২০০’র বেশি ফলোয়ার বা অনুগামী আছে। তবে ইইউআরএল ‘আইএনএনিউজ.পিকে, যেটি অ্যাকাউন্টের পরিচিতিতে দেওয়া আছে, সেটি বর্তমানে অকেজো।
তাছাড়া, ওই প্যারডি অ্যাকাউন্টের লোগোটি এএনআই-এর লোগোর প্রতিবিম্ব বলা চলে।
বিস্ফোরণের পর মসজিদের ছবিটার রিভার্স সার্চ করা হয় গুগুলে। দেখা যায়, ফোটো সরবরাহকারী সংস্থা গেট্টি ইমেজেস-এর ওয়েবসাইটে রয়েছে ছবিটি। চিত্রসাংবাদিক আমির কুরেশি ছবিটি তোলেন।
ছবিটি মে ৭, ২০০১৪’য় তোলা হয়। করাচিতে সরকার পরিচালিত এক ধর্মীয় স্কুল সিন্ধ মাদ্রাসা তুল ইসলামের শিয়া মজজিদে এক আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। তাতে ১৪ জন নিহত হন এবং ১২৫ জনেরও বেশি আহত। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের রিপোর্টে বলা হয়, মৃতদের বেশিরভাগই প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যাঁরা শুক্রবারের নামাজ পড়তে মসজিদে গিয়েছিলেন।
এপি’র রিপোর্টে বলা হয়: “ঘটনাস্থলে পুলিশের এক বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বলেন যে, কোনও টাইমার বা রেডিও সিগনাল গ্রহণ করার যন্ত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি। তা থেকে বোঝা যায় যে বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী ব্যক্তির দ্বারাই ঘটানো হয়েছে।”
টুইটারে নিইজ হ্যান্ডলের প্যারডি অ্যাকাউন্টগুলি বিপজ্জনক। অনেক অসতর্ক টুইটার ব্যবহারকারী সেগুলি বিশ্বাস করে বসেন। এ বিষয়ে বুমের রিপোর্ট চড়ুন এখানে আর এখানে ।