২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে শনিবার তৃণমূলে শিবিরে যোগ দিলেন বরিষ্ঠ রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী যশবন্ত সিংহ (৮৩)। যশবন্ত সিংহ নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর এবং শেষের দিকে প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রীসভায় বিদেশমন্ত্রক এবং অর্থ দপ্তরের কার্যভার সামলেছেন। তাঁর ছেলে জয়ন্ত সিংহ এখনও হাজারিবাগের বিজেপি সাংসদ।
যশবন্ত সিংহ ২০১৪ সালে মোদীর নেতৃত্বে দ্বিতীয় এনডিএ সরকার গঠনের সময়েও বিজেপি দলের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি দলে বাজপেয়ী ঘরানার বিজেপি নেতাদের (আদবানি, অরুন শৌরি, মুরলী মনোহর যোশী, রাম জেঠমালানি প্রমুখরা) বিজেপির স্বক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরতে থাকেন। ক্রমশই দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ ও দ্বিমত প্রকাশ করতে শুরু করেন যশবন্ত সিংহ, শত্রুঘ্ন সিংহের মতো নেতারা।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে বিজেপি দলের সংস্পর্শ ত্যাগ করেন প্রাক্তন এই নেতা। কর্মজীবনের শুরুতে অধ্যাপনা, আইএএস আধিকারিক হয়ে পরবর্তীতে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব চালিয়েছেন। বিজেপি থেকে বেরিয়ে এসে দলের মধ্যে স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ আনেন যশবন্ত সিনহা। তিনি প্রশান্ত ভূষণ এবং অরুন শৌরির সাথে একত্রে ভারত সরকারের রাফায়েল বিমান কেনার মধ্যে অনিয়মের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের আবেদন করেন।
শনিবার তৃণমূল ভবনে মন্ত্রী সুব্রত মুখপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও'ব্রায়েনের উপস্থিতিতে তৃণমূল দলে যোগদান করেন যশবন্ত সিংহ। তিনি বলেন, ''মোদী সরকার স্বেচ্ছাচার চালাচ্ছে। এদের বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই। দেশের গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশ। সমস্ত প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র বজায় রাখতেই একজোট হওয়া প্রয়োজন।''
আরও পড়ুন: বিগ্রেড যাওয়া বিজেপি কর্মীরা মজুরি পায়নি এবিপি আনন্দের গ্রাফিকটি ভুয়ো
প্রসঙ্গত অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের শরিক ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও। সে প্রসঙ্গে যশবন্ত সিংহ বলেন, ''অটলজির সময়কার বিজেপি-র থেকে এখনকার বিজেপি অনেক আলাদা। এখন বিজেপি বাকিদেল পদানত করতে চায়। যে কারনে শিবসেনা, অকালি দলের মতো শরিকরা ছেড়ে চলে গিয়েছে। পুরনোদের মধ্যে একমাত্র নীতিশ কুমারই রয়েছেন। মমতাজি আর আমি দু'জনেই অটলজির সংসারে ছিলাম। কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের সময় নিজেকেই পণবন্দী করতে চেয়েছিলেন মমতা।"
গত ১১ মার্চ যশবন্ত সিংহ একটি টুইট করে লিখেন, "বাংলার এই সংগ্রাম ভারতের সংগ্রাম। বাংলার ভোটাররা ভারতের ভবিষ্যতের জন্য ভোট দেবেন।"
নন্দীগ্রামে মমতার আহত হওয়ার ঘটনা নিয়েও যশবন্ত সিংহ টুইট করে লিখেন, "লজ্জা থাকা উচিৎ বিজেপির। মমতার সাথে সহানুভূতি দেখানোর বদলে তাঁরা উপর আক্রমণ নিয়ে উপহাস করছে।"
শনিবার সাংসদ ডেরেক ও' ব্রায়েনের ৬০ বছরের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য বক্তব্য শুরু করেন যশবন্ত সিংহ
দেখুন তৃণমূল ভবনে যশবন্ত সিংহের তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দেওয়ার লাইভ প্রেস কনফারেন্স।
আরও পড়ুন: জেনে নিন বামফ্রন্টের নির্বাচনী ইস্তেহারে কী কী বিষয়ে জোর