সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আলেপ্পো শহরে ঘটা এক বিস্ফোরণের ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় উঠে এসেছে পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার বাতালায় সংঘটিত একটি বাজি কারখানার সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের ছবি হিসাবে।
৪ সেপ্টেম্বর গুরুদাসপুরের বাতালার বাজি কারখানায় এই বিধ্বংসী বিস্ফোরণে কারখানাটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় এবং তাতে ২৩ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়।
৩০ সেকেন্ডের এই ভিডিও ক্লিপটির ক্যাপশন হলো, ''বাতালার বিস্ফোরণের ভিডিও।'' বেশ কিছুটা দূর থেকে তোলা এই বিস্ফোরণের প্রচণ্ডতা এতটাই যে ক্যামেরা পর্যন্ত তার অভিঘাতে কেঁপে উঠেছে।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম খুব সহজেই বুঝতে পারে যে ভিডিওটি বাতালা বিস্ফোরণকাণ্ডের নয়, কেননা যে সব ছবি ও ভিডিও সেই বিস্ফোরণের পর প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলির সঙ্গে ওই ভিডিওটির কোনও মিল নেই। ভুয়ো ভিডিওটির শেষ অংশে ক্যামেরা ঘুরে শহরের দিকে তাক করে, যে শহরটি আদৌ কোনও ভারতীয় শহরের মতো নয়।
আমরা ভিডিওটিকে মূল ফ্রেমে ভেঙে-ভেঙে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড বসিয়ে খোঁজ লাগিয়ে দেখি, এই একই ভিডিওর ফুটেজ দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল আলেপ্পো শহরের কার্লটন হোটেলে সংঘটিত এক বিধ্বংসী বিস্ফোরণের রিপোর্টে, ২০১৪ সালের মে মাসে, যাতে গোটা শহরটাই কেঁপে উঠেছিল।
ভিডিওটির বিবরণ ছিল এই রকম, "এই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে আলেপ্পোর একটি হোটেল এবং আরও কয়েকটি বাড়ির সম্পূর্ণ ধুলিসাৎ হয়ে যাওয়ার ছবি। এই বিশাল বিস্ফোরণে ওই হোটেল এবং আরও কয়েকটি বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে যায়, যেগুলি সিরিয়ার সেনাবাহিনী তার সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করতো। এ কথা বৃহস্পতিবার সরকারি টেলিভিসন সংস্থা এবং সরকারবিরোধী কিছু সক্রিয় কর্মীদের তরফে জানানো হয়েছে।"
বিবিসি-ও ওই একই ফুটেজ ব্যবহার করে ওই বিস্ফোরক হামলার রিপোর্ট করেছিল। নীচে সেই রিপোর্টেরই কিছুটা অংশ:
সরকার-বিরোধী বিদ্রোহী যোদ্ধারাই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সরকারি সৈন্যরা যেহেতু এই হোটেলেই ঘাঁটি গেড়েছিল, তাই হোটেলটির নীচের একটি সুড়ঙ্গে বোমা রেখে বিদ্রোহীরা সেটি উড়িয়ে দেয়। অন্তত ব্রিটেনস্থিত সিরীয় মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনের তরফে সে কথাই বিবিসি জেনেছে।