একদল মুসলমান পাক-বিরোধী স্লোগান দিতে-দিতে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা পোড়াচ্ছে, এই দৃশ্যের একটি পুরনো ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে শেয়ার করা হচ্ছে।
ভিডিওটিতে বলার চেষ্টা করা হচ্ছে যে, শ্রীনগর উপত্যকায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে কাশ্মীরিরা পাকিস্তান-বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে।
কিন্তু বুম দেখেছে, ভিডিওটি ২০১৬ সাল থেকেই ইন্টারনেটে রয়েছে।
ভিডিওটির হিন্দি ক্যাপশনে দাবি করা হয়েছে—“এখন জম্মু-কাশ্মীর অনেক বদলে গেছে। সেখানে কী উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে, একবার দেখুন।” বলা বাহুল্য, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ও ৩৫(ক) ধারা বিলোপ হওয়ার প্রেক্ষিতেই ভিডিওটি এখন শেয়ার হয়ে চলেছে।
দেড় মিনিটের এই ভিডিওটিতে দেখানো হয়েছে, একদল মুসলমান স্লোগান দিচ্ছে: “পাকিস্তান মুর্দাবাদ”, “হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ”, “জ্বালিয়ে দাও, জ্বালিয়ে দাও, পাকিস্তানকে জ্বালিয়ে দাও”, ইত্যাদি।
এর কিছুক্ষণ পরেই দেখানো হয়েছে, জনতা পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে।
ভিডিওটি নীচে দেখা যাবে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেজ এবং টুইটার হ্যান্ডেলেও ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে:
তথ্য যাচাই
অনুসন্ধান করে বুম দেখেছে, ভিডিওটি ২০১৬ সালের। এবং ইউটিউবে এটি শেয়ার হয়েছে বিভিন্ন ভারতের পক্ষে ক্যাপশন বা শিরোনাম দিয়ে।
পাক-বিরোধী স্লোগান এবং পাকিস্তান মুর্দাবাদ—এই শব্দগুলি বসিয়ে বুম টুইটারে খোঁজ লাগিয়ে দেখেছে, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জনৈক নিসার মেহদি ভিডিওটি শেয়ার করেছিলেন।
মেহদির টুইটার হ্যান্ডেলে তার পরিচিতি হিসেবে ওয়াশিংটন পোস্ট-এর করাচির সংবাদদাতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসএমহোক্সস্লেয়ার সংস্থার তথ্য যাচাই থেকে বুম আর একটি ফেসবুক পোস্ট পেয়েছে, যাতে দাবি করা হয়েছে, দৃশ্যটি উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দে অবস্থিত ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় দারুল উলুম-এর ঘটনা।
২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর উরিতে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিদের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন স্থানীয় মুসলিমরা। ওই হামলায় ভারী-ভারী আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত জঙ্গিরা (যারা নাকি পাকিস্তানে ঘাঁটি গাড়া জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য) জম্মু-কাশ্মীরের উরিতে সেনাবাহিনীর সদর-দফতরে আক্রমণ চালায়।
ভিডিওটি ঠিক কোথায় তোলা হয়েছিল, সেটা বুম নিজে থেকে শনাক্ত করতে পারেনি, তবে এটা যে ২০১৬ সালে তোলা হয়, সে ব্যাপারে বুম নিশ্চিত। দারুল উলুমের প্রতিক্রিয়াও এখনই পাওয়া যায়নি, তা পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি সংস্করণ করা হবে।