মুম্বাইয়ে বাড়ি ভেঙে পড়ার ছ’বছরের পুরনো এক চাঞ্চল্যকর ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সেটি নাকি মঙ্গলবার ডোঙ্গরিতে ঘটে যাওয়া ওই একই ধরনের এক মর্মান্তিক ঘটনার ছবি।
তিরিশ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপটি হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেটির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “ডোঙরিতে বাড়ি ভেঙে পড়ার লাইভ রেকর্ড-করা দৃশ্য”। মঙ্গলবার দক্ষিণ মুম্বাইয়ের ডোঙ্গরিতে একটি বহুতল বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দশ জনের মারা যাওয়ার কথা জানা গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ৪০ থেকে ৫০ জন এখনও চাপা পড়ে আছে ধ্বংসস্তূপের নীচে (এখানে ক্লিক করুন)। ডোঙরির ওই ঘটনার পরেই সোশাল মিডিয়ায় ওই ক্লিপটি ছড়াতে থাকে।
ওই ভিডিওটির সত্যতা জানতে চেয়ে সেটিকে বুমের হেল্পলাইনে (৭৭০০৯০৬১১১) পাঠান এক ব্যক্তি।
ওই ক্যাপশন দিয়ে আমরা ফেসবুকে সার্চ করি। দেখা যায়, ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইরাল
তথ্য যাচাই
‘জেজে বিল্ডিং লাইভ’, এই শব্দগুলি দিয়ে ইউটিউবে সার্চ করলে, আমরা একই রকম এক ভিডিওর সন্ধান পাই। সেটি ২০১৭ সালে আপলোড করা হয়েছিল।
তাছাড়া, ভিডিওটি থেকে নেওয়া স্ক্রিনশটগুলির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে প্রকাশিত এনডিটিভির এক প্রতিবেদন সামনে আসে। ‘কট অন ক্যামেরা: ফোর স্টোরি বিল্ডিং কোল্যাপসেস ইন থানে’ (ক্যামেরায় ধরা: থানেতে চার তলা বাড়ি ভেঙ্গে পড়ছে) নামের ওই লেখাটির সঙ্গে আজকের ভাইরাল ভিডিওটিই ব্যবহার করা হয়েছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মহারাষ্ট্রের মুম্ব্রায় ‘বানো অ্যাপার্টমেন্ট’ নামের একটি চারতলা বাড়ি ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে ভেঙে পড়ে। ওই বাড়িতে ৪২ পরিবার বসবাস করত।
‘মুম্বাই মিরর’ ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে জানায়, তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়, এবং ধ্বংসস্তুপের মধ্যে থেকে বার করে আনা হয় একজনকে।
মুম্বাই মিরর’ জানায় যে, ওই ঘটনায় বাড়িটির দুই নির্মাতা মহম্মদ অকিল শেখ (৬৩) ও তার ছেলে শকিল শেখ (৪১) অভিযুক্ত হন এবং মুম্বরার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
মুম্বাই পুলিশের জনসংযোগ অধিকর্তা মঞ্জুনাথ সিঙ্গের সঙ্গে কথা বলে বুম। উনি বলেন যে, ভাইরাল-হওয়া ভিডিওটি বিভ্রান্তিকর।
মারাঠি সংবাদ মাধ্যম ‘লোকসত্তা লাইভ’ ওই ঘটনা সংক্রান্ত তাদের রিপোর্টে ওই ভিডিওটি আপলোড করেছিল সেপ্টেম্বর ২০১৩ সালে।