একটি ভাইরাল হোয়াটস্যাপ বার্তায় বলা হয়েছে, ইয়েস ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ওই ব্যাঙ্কের তরফ থেকে খবরটিকে স্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়। মুম্বাইয়ে অবস্থিত পাঞ্জাব অ্যান্ড মহারাষ্ট্র কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের ওপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলে, জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ইয়েস ব্যাঙ্ক সম্পর্কে বার্তাটি সেই অসন্তোষকে আরও বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করছে।
বার্তাটিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, পিএসসি ব্যাঙ্কের পরে এবার ইয়েস ব্যাঙ্কের পতনের পালা। ব্যবসা সংক্রান্ত খবরের ওয়েবসাইট ‘মানিকন্ট্রোল’-এ ব্রোকারদের প্রকাশিত মতামতই ওই বার্তার ভিত্তি বলে দাবি করা হয়েছে। ওই লেখায় ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়া, তার অ্যাসেট বা সম্পত্তির অবনয়ন, এবং মূলধন জোগাড়ের ক্ষেত্রে তার অসুবিধের কথা উল্লেখ করা হয়।
তবে মানিকন্ট্রোল এও স্পষ্ট করে দেয় যে, যারা কথা বলেছেন মতামতগুলি একান্তই তাদের ব্যক্তিগত। মানিকন্ট্রোলের নয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ৪১.৪০ টাকায় নেমে যায়। বিগত ১০ বছরে সেটাই ছিল ওই ব্যাঙ্কের শেয়ারের সবচেয়ে কম দাম। টুইটারে হ্যাসট্যাগ ‘#ইয়েসব্যাঙ্ক’এর মাধ্যমে বার্তাটি ট্রেন্ড করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাঙ্কটি কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। যেমন, দুর্বল আর্থিক ও নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, আরবিআইএর নির্দেশ মতো নেতৃত্বে রদবদল, এবং তার সম্পত্তির মান সম্পর্কে প্রশ্ন চিহ্ন। আর এই সব সমস্যা দেখা দেওয়ায়, ব্যাঙ্কটি কতখানি লাভজনক, সে ব্যাপারে সংশয় দেখা দেয় ।
নীচের বার্তাটি একাধিকবার বুমের হেল্পলাইনে (৭৭০০৯০৬১১১) আসে।
ইয়েস ব্যাঙ্ক বন্ধ হয়ে যাবে, এমন একটা গুজব ও জল্পনায় টুইটার বেশ সরগরম বিগত কয়েকদিন ধরে। টুইটার ব্যবহারকারীরা সরকার ও ব্যাঙ্কের কাছে ওই খবরের সত্যতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
‘ইয়েস ব্যাঙ্কের আর্থিক অবস্থা ভাল’
ভাইরাল বার্তার ফলে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তার অবসান ঘটাতে, ইয়েস ব্যঙ্কের মুখোপাত্র বুমকে বলেন:
“ইয়েস ব্যাঙ্কের স্থিতিশীলতা, অ্যাসেট পোর্টফোলিও এবং ভবিষ্যত বৃদ্ধি সম্পর্কে সোশাল মিডিয়ায় নানা বার্তা চালাচালি হচ্ছে। আমরা ওই সব গুজব দ্ব্যর্থহীন ভাষায় খন্ডন করছি। আমাদের ধারণা যে, লগ্নিকারী আর ক্লায়েন্টদের আস্থাহানি ঘটিয়ে এই সংস্থাকে বেসামাল করে দেওয়ার এক সুপরিকল্পিত ও দুরভিসন্ধিমূলক চেষ্টা চলছে। ইয়েস ব্যাঙ্কের আর্থিক অবস্থা ভাল এবং তার লিকুইডিটি ও কাজের সাফল্যের মান বেশ বলিষ্ঠ।”
ইয়েস ব্যাঙ্কের এমডি ও সিইও রবনীত গিলও একটি প্রেস বিবৃতিতে ওই ব্যাঙ্ক সম্পর্কে ভুয়ো তথ্যগুলি নস্যাৎ করেছেন। তাছাড়া ইয়েস ব্যাঙ্ক কী ভাবে মূলধন জোগাড় করবে, সেই পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তাতে। প্রেস বূিজ্ঞপ্তিতি পড়া যাবে এখানে।
গুজব আর মিথ্যে খবরে আক্রান্ত ব্যাঙ্ক শিল্প
পিএমসি ব্যাঙ্কের ঘটনার পর, ব্যাঙ্ক শিল্প সম্পর্কে যে হতাশাব্যঞ্জক বার্তা সোশাল মিডিয়ায় ছড়ান হয়েছে, ইয়েস ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত গুজবগুলি তারই অঙ্গ বলে মনে করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ভুয়ো খবরের মধ্যে রয়েছে:
- আরবিআই সম্পর্কে গুজব। বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নাকি ৯ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বন্ধ করে দেবে। সে সম্পর্কে এখানে পড়তে পারেন।
- আসন্ন ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের ভুল তালিকা। সেটি প্রকাশ করার উদ্দেশ্য হলো সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বৃত্তি খোয়ানর ভয় সৃষ্টি করা। সে ব্যাপারে পড়ুন এখানে।
পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে, সাধারণ মানুষকে সংশয়মুক্ত করতে আরবিআইকে দু’দিনের মধ্যে দুটো বিবৃতি দিতে হয়।