মনিরত্নম কি গণপিটুনির প্রতিবাদে কোনও চিঠিতে সই করেছিলেন? একটি তথ্য যাচাই
কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম অচেনা উৎস উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে মনিরত্নম নাকি এ ধরনের কোনও প্রতিবাদী চিঠিতে স্বাক্ষর করার কথা অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর সইটি নাকি জাল করা হয়েছে।
কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দেশে গণপিটুনি এবং সাম্প্রদায়িক ঘৃণাসূচক অপরাধের বৃদ্ধি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বুদ্ধিজীবীদের খোলা চিঠিতে নাকি মনিরত্নম স্বাক্ষর করেননি। দাবিটি ভুয়ো। মনিরত্নমের সহকারী জানিয়েছেন, এই চলচ্চিত্র পরিচালক প্রতিবাদপত্রটিতে স্বাক্ষর করেছেন এবং তাঁর সই জাল হওয়ার খবরটি সর্বৈব মিথ্যা।
যে ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি নরেন্দ্র মোগীকে চিঠি পাঠিয়ে দেশে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন, তাঁদের অন্যতম এই মনিরত্নম। অন্য স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন অপর্ণা সেন, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনেগাল, আদুর গোপালকৃষ্ণন ও রামচন্দ্র গুহ।
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম যাচাই-না-করা উত্স উদ্ধৃত করে দাবি করতে থাকে যে, মনিরত্নম নাকি ওই প্রতিবাদী চিঠিতে সই দেননি এবং তাঁর সইটি জাল করা হয়েছে।
বুম মনিরত্নমের সহকারী শিব অনন্তর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, “মনিরত্নম অবশ্যই মোদীকে লেখা খোলা চিঠিতে তাঁর স্বাক্ষর দিয়েছেন। এ কথা ঠিক, তিনি যে নৈতিক বিষয়টির প্রতি সংহতি জানিয়ে এই স্বাক্ষর করেছেন, তা নিয়ে বিশদে কিছু বলতে চান না। তবে তিনি যে নিজে থেকেই চিঠিতে সই দিয়েছেন, এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই।”
২৪ জুলাই প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আজ তক জানায়, “এমনকী মনিরত্নমের সহকারীরাও এক কথায় উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করার কথা। তাঁদের মতে, মনিরত্নম এখন তাঁর আগামী ছবির কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। না তিনি কোনও চিঠিতে সই দিয়েছেন, না তাঁকে কেউ এ বিষয়ে অনুরোধ করেছে।”
প্রতিবেদনটিতে এর পরেই উল্লেখ করা হয় মনিরত্নমের এই অস্বীকার কীভাবে চিঠিটি নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিতে পারে, যে চিঠিতে দেশের উদারমনস্ক বিদ্বজ্জনরা স্বাক্ষর করেছেন।
শিব অনন্তর কাছে আমরা জানতে চাই, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার জন্য মনিরত্নমের কোনও আলাদা টিম আছে কিনা। তিনি আমাদের জানান, “দলের জনসংযোগের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিই কেবল এ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন এবং চলচ্চিত্রের বাইরে আমরা কোনও বিষয়ে পারতপক্ষে কথা বলি না।” যে সব সাংবাদিক মনিরত্নমের কাছে আসা যাওয়া করেন, তারাও শিব অনন্তের বক্তব্যই সমর্থন করেন।
সোশাল মিডিয়া এবং ওয়েবসাইট ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছে
আজতক-এর প্রতিবেদনটির উপর ভিত্তি করে রচিত নিউজ-১৮ সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনকে আধার করে দক্ষিণপন্থী প্রচারমাধ্যম স্বরাজ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
মজার বিষয় হল, দক্ষিণপন্থী প্রচারের অন্য একটি ওয়েবসাইট অপইন্ডিয়া মনিরত্নমের সই না-করার খবর দেওয়া প্রতিবেদনটি হুবহু টুকে দেয়। পরে তারা প্রতিবেদনটি মুছে দেয়, তবে বুম সেটির একটি আর্কাইভ সংস্করণ সংগ্রহ করেছে।
অনেক টুইটার ব্যবহারকারীও মনিরত্নমের সই না করার ভুয়ো খবরটি বিশ্বাস করে ফেলেন।
অবার কেউ কেউ বুম ইংরেজিতে তথ্যযাচাই করলে সংশোধন টুইট-এ সেকথা জানান।
আরও পড়ুন: ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো কোনও কারণ ঘটেনি: ভুয়ো উদ্ধৃতি সম্পর্কে জাভেদ আখতার
নবরাত্রি নিয়ে সাম্প্রদায়িক উদ্ধৃতিকে ভুয়ো আখ্যা দিলেন শাবানা আজমি