২০০৮ সালের জাপানি মডেলের ছবি ছড়াল ভারতে নির্যাতিতা মুসলিম তরুণী বলে
বুমকে চিত্রসাংবাদিক রায়োচি কেরোপি মেডা বলেন—২০০৮ সালে জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত এক পার্টিতে ছবিটি তোলা হয়।
২০০৮ সালে তোলা জাপানি (Japanese) ফোটোগ্রাফারের তোলা এক তরুণী মডেলের অঙ্গ সৌন্দর্য (body art) প্রদর্শনের ছবি ভুয়ো দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় ভারতে মুসলিম (Muslim) তরুণীর উপর নির্যাতন (torture) বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় এক তরুণীর বাম চোখ ও ঠোঁট সেলাই করা হয়েছে। ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "কেউ এড়িয়ে যাবেন না, বোনটির জন্য সবাই দোয়া করবেন, ইসলামের কথা বলার জন্য, তাঁর মুখে সেলাই করে দিয়েছে ভারতে, উগ্রবাদী কিছু সংক্ষক লোক।"
ফেসবুক পোস্টটি দেখা যাবে এখানে। (সতর্কতা: ছবিটি স্পর্শকাতর)
ফেসবুকে একই দাবি সহ ছবিটি ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন: ত্রাণ তহবিলে টাকা দেবেন অনুব্রত মণ্ডল? লটারি নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও
তথ্য যাচাই
বুম রিভার্স সার্চ করে দেখে ছবিটি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মটলি নিউজ নামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল। ওই ছবিটিকে জাপানে স্যালাইন ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে অঙ্গ সোন্দর্যের (Body Art) প্রবণতা বলে দাবি করা হয়। রায়োচি কেরোপি মেডার গ্যালারিতে এই ছবি রয়েছে বলে লেখা হয় ওই প্রতিবদনে।
বুম এই সূত্র ধরে রায়োচি কেরোপি মেডার ব্লগে ছবিটি খুঁজে পায়। ২ অগস্ট ২০১২ প্রকাশিত জাপানি ভাষায় লেখা রায়োচি কেরোপি মেডা (Ryoichi Keroppy Maeda)-র ব্লগের প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট ফোটোগ্রাফারের ছবির প্রদর্শনী বলে দাবি করা হয়েছে। জার্মানির ফাঙ্কফুটে অনুষ্ঠিত হয় ওই প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত ছবি পর্যবেক্ষণ করলে হবহু ভাইরাল ছবির সঙ্গে মিলে যায়।
নিচে ভাইরাল ছবি ও প্রদর্শনীর ছবির তুলনা দেওয়া হল।
কেরোপি মেডা জাপানের বিভিন্ন জনজাতির অঙ্গ সৌন্দর্য ও ট্যাটু নিয়ে ফোটোগ্রাফি করেন। বুম মেডার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রত্যুত্তর পেলে ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রতিবেদনে সংস্করণ করা হবে।
কেরোপি মেডা পেশায় সাংবাদিক। জাপানের বিভিন্ন জন-জাতির অঙ্গ সৌন্দর্য ও ট্যাটু নিয়ে ফোটোগ্রাফি করেন। বুম ইমেল মারফত মেডার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মেডা আমাদের জানান ছবিটি তাঁরই তোলা।
"জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত 'ফেটিশ' পার্টিতে রক্তাক্ত প্রদর্শনের সময় ছবিটি তোলেন। ২০০৮ সালের জাপানি সোশাল মিডিয়া তারকা তুসুকিকা ও তাঁর মডেলরা এই প্রদর্শনী করেন।" বুমকে বলেন মেডা।
ছবিটি আগে তথ্যযাচাইকারী সংস্থা গ্রীসের ইলিনিকা হোয়াক্স ও মার্কিন স্ন্যপস তথ্য-যাচাই করেছে।
আরও পড়ুন: গোরক্ষপুরে নির্মীয়মান গ্যাস পাইপ লাইন বলে ছড়াল জার্মানির পুরনো ছবি