নিহত দলীয় কর্মী বলে বিজেপি ছড়াল ইন্ডিয়া টুডে'র সাংবাদিকের ছবি
অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় সোশাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে বলেন তিনি জীবিত। বিজেপির ভিডিওতে তাঁর ছবি ছিল দলীয় কর্মী মানিক মৈত্র বলে।
ভারতীয় জনতা পার্টির পশ্চিমবঙ্গ শাখা তাদের ফেসবুক ও টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, তাতে ইন্ডিয়া টুডে'র সাংবাদিক অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Avro Banerjee) ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার শীতলকুচিতে (Sitalkhuchi) নিহত পার্টি কর্মী মানিক মৈত্রের বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ৩ মে সকালে, তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পরের দিন, মানিক মৈত্রকে (Manik Moitra) অজ্ঞাত পরিচয়ের আততায়ীরা গুলি করে হত্যা করে। মৈত্রর বিধানসভা কেন্দ্র শীতলকুচিতে বিজেপি প্রার্থী বরেণচন্দ্র বর্মন জয়লাভ করেন।
বন্দ্যোপাধ্যায় পরে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে জানান যে, তিনি মানিক মৈত্র নন, যেমনটা দাবি করা হয়েছে ভিডিওটির ক্যাপশনে। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান যে, তিনি জীবিত ও সুস্থ আছেন। বুম বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তাঁর বক্তব্য পেলেই, আমরা এই প্রতিবেদন আপডেট করব।
৫ মে, বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখা তাদের যাচাই করা ফেসবুক ও টুইটার হ্যান্ডেল থেকে, রাজ্যজুড়ে বিজেপি সমর্থকদের ওপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগের একটি সংকলন প্রকাশ করে। সেই ভিডিওতে অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ছবি ছিল, আর লিখিত ক্যাপশনে দাবি করা হয়, উনি হলেন শীতলকুচির মানিক মৈত্র।
ফেসবুক পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
টুইটটি আর্কাইভ করা এখানে।
আরও পড়ুন: পিস্তল, তরোয়াল নিয়ে তৃণমূলের বিজয় উৎসব বলে ভাইরাল বিকৃত ভিডিও ক্লিপ
তথ্য যাচাই
পোস্টটি শেয়ার হওয়ার পরের দিনই, বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ফেসবুক ও টুইটারে জানান যে তিনি মানিক মৈত্র নন, যেমনটা দাবি করা হয়েছে বিজেপির ভিডিওতে। এবং তিনি এও বলেন যে, তিনি জীবিত ও নিরাপদে আছেন।
উনি লেখেন, "আমি অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি শীতলকুচি থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার দূরে বহাল তবিয়তে আছি। বিজেপির আইটি সেল এখন দাবি করছে যে আমি মানিক মৈত্র এবং আমি শীতলকুচিতে মারা গেছি। দয়া করে এই ভুয়ো পোস্টগুলিকে বিশ্বাস করবেন না আর দুশ্চিন্তাও করবেন না। আমি আবার বলছি, আমি (এখনও) জীবিত।"
অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্ট ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখা ভিডিওটি ফেসবুক ও টুইটার থেকে তুলে নেয়।
পশ্চিমবঙ্গে এক মাস ধরে কঠোর ও উত্তেজনাপূর্ণ প্রচার এবং ভোটদানের শেষে, রাজ্য জুড়ে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা, পরিস্থিতিকে ঘোরালো করে তুলেছে। আর হিংসার এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যে আবার ভুয়ো খবরের সংখ্যাও হু হু করে বেড়েছে। সেগুলিতে, দলীয় সংঘর্ষে সাম্প্রদায়িক রঙ চড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে, নয়তো সম্পর্কহীন অপরাধের গায়েও রাজনৈতিক তকমা সেঁটে দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার সঙ্গে জড়াল ধর্ষণ ও খুন হওয়া নির্যাতিতার ছবি