৫ কেন্দ্রে পুনর্গণনায় জয়ী বিজেপি দাবিতে ছড়াল ভুয়ো সংবাদের গ্রাফিক
বুমকে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলটির নিউজ হেড ও ডিরেক্টর সুপ্রিয় রায় কর্মকার জানান, "নিউজটাইম এই ধরনের কোনও খবর সম্প্রচার করেনি।"
ফেসবুকে নিউজ টাইম বাংলা সংবাদ মাধ্যমের একটি গ্রাফিক পোস্ট করে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের (West Bengal Assembly Election) ফল প্রকাশের পর পুনর্গণনায় ৫ টি কেন্দ্রে বিজেপি (BJP) জয়লাভ করেছে।
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে ২৯২ টি আসনের মধ্যে ২১৩ আসন পেয়ে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান প্রতিদ্বন্ধী বিজেপি পায় ৭৭ টি বিধানসভা আসন। সংযুক্ত মোর্চা ও অন্যান্যরা পায় একটি করে আসন। কিন্তু এই ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে এক সময়ের দলের সঙ্গী বর্তমানে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাতে পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণনার দিন বিকেলে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, নন্দীগ্রামে ১২০০ ভোটে জয়ী হয়েছেন মমতা। কিন্তু তার কিছু পরেই জানা যায়, ওই কেন্দ্রে ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। পরে রাতের দিকে চূড়ান্ত ফলে জানা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন। তৃণমূলের তরফে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল এই দিন রাতে পুনর্গণনার দাবি তুলে নির্বাচন কমিশনের দফতরে যায়। তবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গণনার আর্জি খারিজ করে দেয়।
ফেসবুকে ৪ মে পোস্ট করা ভাইরাল হওয়া বাংলা সংবাদমাধ্যম নিউজ টাইম বাংলার গ্রাফিক উইন্ডোটিতে দেখা যায় লেখা রয়েছে, "৫ কেন্দ্রে পুনর্গণনাতে জিতেছে বিজেপি।"
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন : নিহত দলীয় কর্মী বলে বিজেপি ছড়াল ইন্ডিয়া টুডে'র সাংবাদিকের ছবি
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে "৫ কেন্দ্রে পুনর্গণনাতে জিতেছে বিজেপি" এই ধরণের কোনও সংবাদ পরিবেশন হয়নি গণমাধ্যমে। ভোট গণনা হয় দফায় দফায় কয়েক রাউন্ডে। সেখানে থাকে বিভিন্ন কেন্দ্রের পোস্টাল ব্যালট ও ইভিএম এর গণনা।
নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গের কোনও বিধানসভা কেন্দ্রেই ভোট পুনর্গণনার নিয়ে নতুন কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি।
বুম নিউজ টাইম এর নিউজ হেড ও ডিরেক্টর সুপ্রিয় রায় কর্মকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, "এই খবরের কোনও সত্যতা নেই, আমাদের নাম ব্যবহার করে কেউ ভুল খবরটা করেছে। নিউজ টাইম এই ধরনের কোনও খবর টেলিভিশনে সম্প্রচার করেনি।"
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন থেকে একই ফলাফল রয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের কোনও হেরফের হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোনও রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হলে আদালতে যেতে পারে। ভোটগণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে গুজরাতে বিজেপি বিধায়ক ও রাজ্যর শিক্ষা, ন্যায় ও আইনমন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিংহ চুদাসমার বিরুদ্ধে আদালতের দারস্থ হন কংগ্রেস নেতা অশ্বীন রাঠোর। ২০১৭ সালের ধোকলা বিধানসভা কেন্দ্রে ৩২৭ ভোটে জয়লাভ করে ভুপেন্দ্র সিংহ চুদাসমা। গণনা চলাকালীন রিট্রানিং অফিসারের ৪২৯ টি পোস্টার ব্যালট বাতিল করার সিদ্ধান্তকে খারিজ করে আদালত। ২০২০ সালের মে মাসে ওই নির্বাচনকে বাতিল করেন গুজরাত হাইকোর্টের বিচারপতি পরেশ উপাধ্যায়। পরে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত হাইকোর্টের ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার সঙ্গে জড়াল ধর্ষণ ও খুন হওয়া নির্যাতিতার ছবি