বিজেপিকে নিশানা করা দৈনিক ভাস্করের হোর্ডিংয়ের ভাইরাল ছবি ভুয়ো
বুম দেখে ফোটোশপ করে হোর্ডিং-এর ছবিটা তৈরি করা হয়েছে।
হিন্দি সংবাদপত্র 'দৈনিক ভাস্কর' (Dainik Bhaskar) কেন্দ্র ও উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) বিজেপি-র সরকারের (BJP Government) প্রতি বিরূপ কটাক্ষ করছে বলে দাবি করা হোর্ডিং-এর ভাইরাল হওয়া ছবিটি ভুয়ো এবং ফোটোশপ করা। বুম দেখে এই ছবিটা আসলে অন্য একটি হোর্ডিং-এর ছবির উপর জুড়ে বানানো হয়েছে।
২২ জুলাই আয়কর দফতর সারা দেশ জুড়ে দৈনিক ভাস্কর সংবাদপত্র গোষ্ঠীর বিভিন্ন অফিসে আয়কর ফাঁকি ধরার অভিযোগে হানা দেয়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত একটি খবর অনুসারে আয়কর দফতর দিল্লি, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট ও রাজস্থানের মোট ৩২টি জায়গায় দৈনিক ভৈাস্কর গোষ্ঠীর কর্মকর্তাদের আবাসনে ও অফিসে হানা দেয়।
ইতিমধ্যেই অবশ্য দৈনিক ভাস্কর গোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে এক বার্তায় জানানো হয়েছে কোভিড অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণেই প্রতিশোধ হিসাবে সরকার এই হানাদারি চালাচ্ছে। এই মর্মে হিন্দি দৈনিকটি টুইটও করেছে। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
আয়কর হানার পরেই সোশাল মিডিয়ায় দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা গোষ্ঠীর সাহসী সাংবাদিকতার প্রশংসার বন্যা বয়ে যায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন টুইটার-ব্যবহারকারী উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিশেষত সমাজবাদী পার্টি ও বহুজনসমাজ পার্টির সমালোচনা করে পত্রিকা গোষ্ঠীর লাগানো পুরনো হোর্ডিং-এর ছবিও তুলে ধরেন।
ভাইরাল হওয়া পোস্টটিকে এই প্রেক্ষিতেই বিচার করতে হবে।
দৈনিক ভাস্কর-এর নামে লাগানো হোর্ডিং-এর ভাইরাল করা ছবিতে একটি হিন্দি স্লোগান রয়েছে, যার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, "মঠের মোহন্তও নন, ভুয়ো সন্ন্যাসীও নন!"
হোর্ডিং-এর হিন্দি ক্যাপশনে লেখা, "দমনকারী সরকার দৈনিক ভাস্কর-এর কণ্ঠ রোধ করার অপচেষ্টা করেছিল । তার পর যা হয়েছে, সে তো আপনারা চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছেন l"
(হিন্দি: ना मठ का महंत ना फेंकू संत)
(হিন্দি: 'दमनकारी सरकार' ने 'दैनिक भाष्कर' की आवाज़ दबाने की कोशिश की, फिर जो दैनिक भाष्कर ने किया वह आपके सामने है)
এখানে উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ গোরক্ষপুর মঠের মোহন্তও বটে!
একই ক্যাপশন সহ একই ছবি বেশ কিছু ফেসবুক পোস্ট ও টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুস্তিতে প্রিয়া মালিকের সোনা জয় ভুল করে ছড়াল টোকিও অলিম্পিক বলে
তথ্য যাচাই
ভাইরাল হওয়া পোস্টের নীচে বাঁ-দিকে 'যোগী ঝুঠা হ্যায়' বলে একটি লোগো রয়েছে। আমরা ওই শব্দগুলি খোঁজ লাগিয়ে একই নামের একটা ফেসবুক পেজ এবং একটা ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল পাই।
যোগী ঝুঠা হ্যায় ফেসবুক পেজটিতে ২২ জুলাই ওই হোর্ডিং-এর ছবিটাই শেয়ার করে লেখা হয়, "দমনকারী সরকার দৈনিক ভাস্করের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। এর পরিণাম কী হবে, তা আপনারা দেখতেই পাবেন।"
(হিন্দি: 'दमनकारी सरकार' ने 'दैनिक भाष्कर' की आवाज़ दबाने की कोशिश की, फिर जो दैनिक भाष्कर करना चाहेगा वह आपके सामने है)
তবে এই ফেসবুক পেজ-এ শেয়ার হওয়া পোস্টটি দেখলে মনে হয়, এর ছবিটি আসল নয়।
যোগী ঝুঠা হ্যায় ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলেও একই ছবি শেয়ার করা হয়েছে।
বুম অনেক খোঁজখবর চালিয়ে দেখে, এই স্লোগানটি দৈনিক ভাস্কর তার কোনও হোর্ডিং-এ ব্যবহার করেছে কিনা। তার বদলে আমরা উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজনসমাজ পার্টিকে নিশানা করে ক্যাপশন দেওয়া হোর্ডিং দেখতে পাই।
তবে অন্য একটা হোর্ডিং আমাদের নজরে পড়ে, যেটা সম্ভবত ফোটোশপ করে এই ভাইরাল ছবিটি বানানো হয়ে থাকতে পারে। সেটি যাচাই করতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: না, সাঁওতালি মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিকে অনিমা মুর্মু ২০২১ সালে প্রথম হননি