এনআরসি নিয়ে মিথ্যে দাবিতে ছড়াল গুজরাতের হিংসায় দোষীর ছবি
বুম দেখে ভাইরাল ছবি ২০০২ সালে গুজরাতে ধর্মীয় হিংসায় দোষী এক ব্যক্তির জেলে যাওয়ার মুহূর্তে ছেলেকে সান্ত্বনা দেওয়ার দৃশ্য।
২০১২ সালে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির আমদাবাদে কারাবাসে যাওয়ার মুহূর্তে ছেলেকে সান্ত্বনা দেওয়ার ছবি সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল (CAA) বিরোধী বক্তব্য সহ মিথ্যে দাবিতে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।
ছবিতে এক মর্মস্পর্শী দৃশ্য ধরা হয়েছে দোষী সাব্যস্ত বাবা ও তাঁর ছেলের ঠিক তার পরেই বাবাকে কারাবাসে নিয়ে যাওয়ার। এই দাবি সহ ছবিটি শেয়ার করা হচ্ছে যে জনৈক বিজেপি সমর্থকের নাগরিকত্বের তালিকায় নাম না ওঠায় অসম পুলিশ তাঁকে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাচ্ছে।
বাংলায় নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক ময়দানে বারবার উঠে এসেছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি-র প্রসঙ্গ। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, অসমে ভোট মিটতেই ফের বাঙালিদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকের কাছেই নতুন করে নাগরিকত্ব প্রমাণের নোটিস যাচ্ছে।
ছবিটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়, "যারা বি.জে.পি.র হয়ে মিটিংয়ে যাচ্ছেন এবং ভোট দিতে চান তাদেরকে বলছি, ছবিতে যাকে দেখছেন জালঘেরা গাড়িতে ২০১৬ আসামের নির্বাচনে ইনি ও আপনার মত মোদী আমিত শা র হয়ে,প্রচার করে বি.জে.পি.কে ক্ষমতায় এনেছিলো, তারপর অসমে যে নাগরিক দের নামের তালিকা প্রকাশ হয়,,, পরিবারের অন্য সদস্যদের নাম থাকলেও তার নামটা বাদ যায়। আসামের পুলিশ তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যাবার সময় করুন মুহূর্ত , বাবা এবং ছেলের।,,,,,, কে জানে বাঙলায় যদি বি.জে.পি ক্ষমতায় আসে এই অবস্থা আপনার সঙ্গে ও ঘটতে পারে।আপনি যতই বি. জে.পি করুন না কেন।"
পোস্টটিকে দেখা যাবে এখানে। পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: মণিপুরের ভিডিও ছড়িয়ে বলা হল কোচবিহারে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তাণ্ডব
তথ্য যাচাই
বুম ছবিটিকে রিভার্স সার্চ করে এনবিসি নিউজ-এর ২০১২ সালের এক ফোটো ব্লগে খুঁজে পায়। ছবিটিকে ওই গণমাধ্যম নারদা পাটিয়া হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত ছবি বলে প্রবন্ধে প্রকাশ করে।
ছবিটি সম্পর্কে ক্যাপশনে লেখা হয়, "২২ অগস্ট, ২০১২ তারিখে ভারতের আহমেদাবাদে ২০০২ সালের একটি ধর্মীয় হিংসার মামলায় আদালতে রায় দেওয়ার পরে একজন আসামীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় সে তার ছেলেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে। পশ্চিম ভারতের আদালতটি ভয়ানক ধর্মীয় হিংসায় দাঙ্গা থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অংশগ্রহণের জন্য ৩২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। ধর্মীয় দাঙ্গাটি ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ট্রেনে আগুন লাগার ঘটনা থেকে শুরু হয় যাতে ৬০ জন হিন্দু তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছিল। মুসলমানদের সেই আগুনের জন্য দোষ দেওয়া হয় যার কারণে কয়েক সপ্তাহের দাঙ্গায় হিন্দুরা শহর ও গ্রামে মুসলিমদের বাড়িঘর ও দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়।"
ছবি সৌজন্য হিসেবে সংবাদসংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের উল্লেখ করা হয়েছে। একই তথ্য সহ ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায় অ্যাসোসিয়েট প্রেস-এর ওয়েবসাইটে।
আরও পড়ুন: ভোটের কাজে ব্যবহার হওয়া গাড়িতে বিজেপির পতাকা? ভাইরাল ছবি ২০১৯ সালের