ফ্যাক্ট চেক
Fact Check: Modi সরকার বিদ্যুতে 'এক দেশ এক দাম' আইন আনতে চলেছে?
বুম এব্যাপারে কোনও নির্দেশ খুঁজে পায়নি, তবে ২০১৯ সালে অর্থমন্ত্রী বিদ্যুৎ মাশুলে 'এক দেশ এক দাম'-এর ইঙ্গিত দেন।
কেন্দ্রীয় সরকার দেশে বিদ্যুত মাশুলের ক্ষেত্রে নতুন ''এক দেশ এক দাম" আইন প্রণয়ন করতে চলেছে বলে সোশাল মিডিয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে বিভ্রান্তিকর পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে।
বুম যাচাই করে দেখে যে ভারতের সংসদে (Parliament of India) এই নিয়ম চালু করার প্রস্তাব আনা হলেও এইরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়নি।
কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ সরকার ২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে প্রশাসন এবং পরিসেবাক্ষেত্রকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিপরীতে একক পরিসরে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। অনেকক্ষেত্রে কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে বা কিছু রুপায়ন হয়েছে যেমন, 'এক দেশ এক কর' এই পরিকল্পনাকে জিএসটি এর মাধ্যমে রুপায়ন করা হয়েছে, 'এক দেশ এক রেশন কার্ড' - এই পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত ১১ টি রাজ্যে রুপায়ন করা হয়েছে। নেটিজেনরা সেই প্রসঙ্গেই এই বিদ্যুতের এক দেশ এক দাম' এই আইন চালু নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য নিজেদের ফেসবুক ফিডে শেয়ার করেন।
ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ছবি এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) প্রতীক সহ একটি গ্রাফিক ছবি শেয়ার করা হচ্ছে, এই ছবিতে লেখা রয়েছে, "বিদ্যুতের দাম এক হবে গোটা দেশে, 'এক দেশ এক দাম' আইন আনতে চলেছে মোদী সরকার।"
এই গ্রাফিক ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "বিদ্যুতের দাম এক হবে গোটা দেশে সকল মিলে আওয়াজ তুলুন জয় শ্রীরাম"
বুম ফেসবুকে কিওয়ার্ড দিয়ে খোঁজ করে দেখে যে একইরকম দাবি সহ পোস্ট এবং সংবাদ প্রতিবেদন ২০১৯ সাল থেকেই ফেসবুকে রয়েছে। বুম দেখে বিভ্রান্তিকর শিরনাম সহ 'বিদ্যুতের জন্য এক দেশ এক দাম'নিয়ম চালু নিয়ে বাংলা হান্ট, ইন্ডিয়ারাগ, বংনিউজ ২৪X৭ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
একই গ্রাফিক এবং একই ক্যাপশনে শেয়ার হওয়া পোস্টগুলি দেখা যাবে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখে ভারতে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে 'এক দেশ এক দাম' এইরকম কোনও আইন প্রণয়ন করা হয়নি। বুম এই সংক্রান্ত কোনও সাম্প্রতিক সরকারি নির্দেশিকা খুঁজে পায়নি।
ইন্টারনেটে খোঁজ করে কিছু প্রতিবেদন ঘাটিয়ে বুম দেখে ২০১৯ সালে লোকসভার বাজেট অধিবেশনে (Budget Session 2019) দেশের পাওয়ার গ্রিড (Power Grid) বণ্টন এবং বিদ্যুৎ মাশুল (electricity Tariff) নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) এবং পাঞ্জাব থেকে বিজেপি (BJP) রাজ্যসভার সাংসদ শ্বেত মালিক (Shwait Malik) কিছু ঘোষণা এবং প্রস্তাব রাখেন।
২০১৯ সালের ৫ জুলাই লোকসভায় বাজেট পেশ করার সময়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দেশে বিদ্যুতের দাম এবং গ্রিড ব্যবস্থা নিয়ে শীঘ্রই কিছু পদক্ষেপ যেমন, 'এক দেশ এক গ্রিড' ও বিদ্যুৎ মাশুল সংস্কার নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। বিস্তারিত পড়া যাবে এখানে।
আবার ওই বাজেট অধিবেশনে ২০১৯-২০ সালের বাজেটের উপর আলোচনায় রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ শ্বেত মালিক দেশে 'এক দেশ এক বিদ্যুতের দাম' এই নীতি গ্রহণের জন্য প্রস্তাব রাখেন। শ্বেত মালিক ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই রাজ্যসভার সভা চলাকালীন নিজের বক্তব্যে বলেন যে, "পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে পাঞ্জাবে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মাশুল সব থেকে বেশি, পাঞ্জাবে প্রতি ইউনিট ৮ টাকা, যেটা হিমাচলে ৬ টাকা, জম্মু কাশ্মিরে ৩ টাকা। তাই পাঞ্জাবে গরীব মানুষজন নিজেদের ঘরে ফ্যান বন্ধ করে রাখে, শিল্প-কারখানা বেশিরভাগ সময়ে বন্ধ রাখা হয়। আমি চাই জিএসটি (GST) এর মতো এক দেশ এক বিদ্যুতের মাশুল এই নিয়ম চালু হোক।" বিস্তারিত পড়া যাবে এখানে।
শ্বেত মালিকের রাজ্যসভা বক্তৃতা দেখা যাবে এখানে।
বিষয়টি নিয়ে সংসদে কোনও বিল পাশ করানো হয়নি বা মন্ত্রীসভার কোনও বৈঠকেও এইরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বুম শক্তি মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এই সংক্রান্ত কোনও পরিকল্পনা নিয়ে নির্দেশিকা খুঁজে পায়নি।
Claim : মোদী সরকার ভারতে বিদ্যুত মাশুলে 'এক দেশ, এক দাম' আইন আনতে চলেছেন
Claimed By : Facebook Posts & News Outlets
Fact Check : Misleading
Next Story