ভিডিওতে তৃণমূলের বিধায়ক নয়, পুলিশকে মারছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি কাউন্সিলর
বুম দেখে ভাইরাল ভিডিওটি ২০১৮ সালের। ভিডিওতে উত্তরপ্রদেশের মীরাটের তৎকালীন বিজেপি কাউন্সিলর এক পুলিশকর্মীকে মারধর করছে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ভিডিওতে এক ব্যক্তিকে একজন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে ঘটনাটি পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) এবং ভিডিওতে পুলিশ অফিসারকে মারছেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) এক মুসলিম বিধায়ক।
বুম দেখে দাবিটি ভুয়ো। আমরা যাচাই করে দেখি ২০১৮ সালের এই ভিডিওতে উত্তরপ্রদেশের মীরাটের তৎকালীন বিজেপি কাউন্সিলর মনীশ চৌধুরীকে পুলিশের উপর হামলা করতে দেখা যাচ্ছে।
২৯ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে একটি রেস্তোরাঁর ভিতরের দৃশ্য দেখা যায় যেখানে এক উর্দিধারী পুলিশকর্মীকে মারধর করছে এক ব্যক্তি। ভিডিওতে একজন ভদ্রমহিলাকেও দেখা যায়। এই ভিডিওটি চলতি লোকসভা নির্বাচনের মাঝে সাম্প্রদায়িক দাবিসহ শেয়ার করা হচ্ছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এই ভিডিওটি আগেও একটি ভিন্ন দাবিসহ ভাইরাল হয়েছিল।
একজন এক্স ব্যবহারকারী ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশন হিসাবে লিখেছেন, "বাংলার বিধায়ক মনসুর মহম্মদ দিমিরকে দেখুন। পুলিশের ইউনিফর্মে কর্তব্যরত পুলিশের এই যখন অবস্থা, তখন বাঙালির কী অবস্থা হবে...! এই ভিডিওটি শেয়ার করুন যাতে এটি সারা ভারতে দেখা যায়।"
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে ।
একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী একই ক্যাপশনসহ ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
পোস্টটি দেখুন এখানে, আর্কাইভ দেখুন এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে এই ভিডিওটি এই বছরের ফেবরুয়ারি মাসে একই ভুয়ো দাবিসহ ভাইরাল হয়েছিল এবং তার আগে ২০১৯ সালে ভিন্ন একটি ভুয়ো দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছিল। আমরা সেসময় তার তথ্য যাচাই করি। দেখুন এখানে ও এখানে।
আমরা জানতে পারি ঘটনাটি ২০১৮ সালের। ২০১৮ সালে প্রকাশিত দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী ভাইরাল ভিডিওটি উত্তরপ্রদেশের মীরাটের বিজেপি কাউন্সিলর মনীশ চৌধুরীর মালিকানাধীন একটি রেস্তোরাঁয় তোলা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ভিডিওর পুলিশকর্মী সুখপাল সিং পানওয়ার মদ্যপ অবস্থায় মনীশ চৌধুরীর রেস্তোরাঁয় গেছিলো এবং তার হোটেলের কর্মীদের সঙ্গে ঝগড়া হয় যার ফলে তাকে শেষ পর্যন্ত মারধর করে তৎকালীন বিজেপি কাউন্সিলর। ওই পুলিশের সঙ্গে একজন মহিলা আইনজীবীও ছিলেন যাকে ভিডিওতে দেখা যায়। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
এই ঘটনা সংক্রান্ত প্রকাশিত আরও একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ৩৯৫ এবং ৩৫৪ এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
এছাড়াও, আমরা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিধায়কদের তালিকা দেখি। সেই তালিকায় আমরা মনসুর মহম্মদ দিমির নামক কোনো বিধায়ক খুঁজে পায়নি।