ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন সাজায় তাঁর স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া ছড়াল পুরনো ভিডিও
বুম দেখে ভিডিওটি ২০১৯ সালের। মুশাল হুসেন মালিক সে সময় সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন ইয়াসিন মালিককে এনআইএ অবৈধ আটক করেছে।
একটি ভিডিওতে ইয়াসিন মালিকের (Yasin Malik) স্ত্রী মুশাল হুসেন মালিককে (Mushaal Hussein Mullick) কাঁদতে দেখা যাচ্ছে। এই ভিডিওটি পুরানো। ভিডিওটি শেয়ার করে মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে যে, বুধবার ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি'র (NIA) বিশেষ আদালত কাশ্মীরের ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতার যাবজ্জীবন (life imprisonment) কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করার পর তাঁর স্ত্রীর কান্নায় (Crying) ভেঙে পড়েছেন।
জম্মু কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য অর্থ সংগ্রহের মামলায় তাঁর ভূমিকার জন্য দিল্লির এক বিশেষ এনআইএ আদালত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেয়। তা ছাড়াও, ষড়যন্ত্র সহ আরও একাধিক অপরাধে বিশেষ এনআইএ বিচারক পারভীন সিং মালিক তাঁকে যাবজ্জীবন ছাড়াও দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। বিচারক ব্যাখ্যা করেন যে, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে মৃত্যু পর্যন্ত কারাবাস এবং সমস্ত কারাবাসের সাজা একই সঙ্গে চলতে থাকবে। এ ছাড়াও ওই আদালত তাঁকে ১০ লাখ টাকার জরিমানাও করেছে।
ভিডিওটির সঙ্গে হিন্দিতে লেখা একটি ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে। ওই ক্যাপশনের অনুবাদ, "ইয়াসিন মালিকের যাবজ্জীবন সাজা হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী…।"
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন: यासी'न मलिक की बेगम... and यासीन मलिक को उम्रकैद की सजा मिलते ही उसकी बेगम)
তথ্য যাচাই
'ইয়াসিন মালিকের স্ত্রীর কান্না' এই কিওয়ার্ড দিয়ে আমরা ইউটিউবে সার্চ করি এবং দেখতে পাই যে, ২০১৯ সালে বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলে এই একই ভিডিও আপলোড করেছিল। ভিডিওটি আসলে তখনকার, যখন মুশাল হুসেন মালিক লাহোর থেকে একটি সংবাদিক বৈঠক করেন, এবং তাঁর স্বামীর জন্য আবেদন করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল পাকিস্তানের একটি নিউজ চ্যানেল লাহোর নিউজ এই ভিডিওটি আপলোড করেছিল। মুশালকে ওই ভিডিওতে বলতে শোনা যায় যে, তাঁর স্বামীকে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি বেআইনি ভাবে আটক করেছে, এবং তাঁকে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং আইনি সাহায্য নিতে দেওয়া হচ্ছে না। ভিডিওতে তিনি মন্তব্য করেন, "গত ১২ দিন ধরে তিনি অনশন করছেন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু সেখানে তিনি যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছেন না।"
মুশালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি যেমনটা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দাবি করা হয়েছে।
ভিডিওটি দেখা যাবে এখানে।
এই সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে সংবাদের খোঁজে আমরা রিভার্স ইমেজ সার্চ করি এবং ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল ফোটো এজেন্সি অ্যালামির আপলোড করা একটি ছবি দেখতে পাই। ওই ছবিতে মুশালকে একই সাদা সালওয়ার কামিজ পরে দেখা যাচ্ছে যেমনটা ভাইরাল ছবিতে দেখা গেছে।
ছবিটি দেখুন এখানে।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের টাইমফ্রেমে আমরা 'ইয়াসিন মালিকের অনশন' এই কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন দেখতে পাই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে মালিকের পরিবার অভিযোগ করেছে যে, "জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের (জেকেএলএফ) মুখ্য নেতা ইয়াসিন মালিক ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিভ এজেন্সি'র (এনআইএ) তাঁকে বেআইনিভাবে আটক করার প্রতিবাদে অনশনে বসেন এবং তার পর তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।"
আরও পড়ুন: ভুয়ো বার্তার দাবি মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় ভারত সরকারের খয়রাতি ৩০, ৬২৮ টাকা