ভুয়ো বার্তার দাবি মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় ভারত সরকারের খয়রাতি ৩০, ৬২৮ টাকা
ভাইরাল বার্তা ব্যবহারকারীর নাম জানতে চেয়ে ভুয়ো ওয়েবসাইটে নিয়ে যায় তারপর বার্তাটি ছড়াতে বলে।
হোয়াটসঅ্যাপ ও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভুয়ো বার্তা। তাতে এই মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে, মুদ্রাস্ফীতির (Inflation) মোকাবিলা করতে সরকার ৩০,৬৮২ টাকা অনুদান দেবে।
ওই বার্তায় যে লিঙ্কটি দেওয়া আছে, সেটি আপাতদৃষ্টিতে অর্থমন্ত্রকের (finmin.nic.in) মনে হলেও, যে ওয়েবসাইটে যাওয়ার নির্দেশ তাতে দেওয়া আছে, সেই ওয়েব সাইটটি সন্দেহজনক ও সরকারের সঙ্গে সেটির কোনও সম্পর্ক নেই।
সারা বিশ্বে দ্রব্যমূল্য বেড়ে চলেছে এবং ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। এপ্রিলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৭৯%, যা আট বছরে সর্বোচ্চ।
বার্তাটি নীচে দেখা যাবে। সেটি বুমের হোয়াটসঅ্যাপ হেল্পলাইনেও আসে (৭৭০০৯০৬৫৮৮)।
আরও পড়ুন: জো বাইডেন উপেক্ষা করেন নরেন্দ্র মোদীকে? ভিডিওটি ছাঁটাই করা
হোয়াটসঅ্যাপে বার্তাটি এলে, মনে হয় সেটি বোধহয় কোনও এক সরকারি ওয়েবসাইটের লিঙ্ক – বিশেষ করে অর্থমন্ত্রকের ওয়েবসাইটের লিঙ্ক বলে মনে হবে।
নীচে, বার্তাটি টুইটারেও দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু লিঙ্কটিতে ক্লিক করলে, ব্লগস্পট-এর একটি ওয়েবসাইটে পৌঁছে যান ব্যবহারকারী।
"ভারতের নাগরিকদের আর্থিক সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে, অর্থমন্ত্রক প্রতিটি নাগরিককে অনুদান (৩০,৬২৮ টাকা) দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাঁরা কিছুটা সুরাহা পান।" সেই সঙ্গে নিজেকে নথিভুক্ত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ক্লিক করতে বলা হয়েছে।
ওয়েবসাইটটি একটি ফেসবুক পেজের মতো দেখতে। কিন্তু পাতাটি যত বারই রিফ্রেস করা হোক না কেন, প্রতিবারই শুরুর তথ্যগুলিই সামনে আসে:
- ১৬০,০০০ লাইকস
- ৪০,০০০ শেয়ার
- ৬০,০০০ লাইকস
প্রতিবারই, জনৈক 'অর্পিতা গাঙ্গুলি'র করা প্রথম মন্তব্যটি একই থাকে। সেটির সময় চিহ্নেরও কোনও পরিবর্তন হয় না। তাছাড়া মন্তব্যগুলি সব একই ক্রমান্বয়ে সাজানো থাকতে দেখা যায়। এরপর, ওয়েবসাইটটি ব্যবহারকারীকে তাঁর নাম দিতে বলে।
কিন্তু নামে কিছু এসে যায় না। কারণ, যে কোনও দু'টি শব্দ লিখলেই ওয়েবসাইটটির পরের ধাপে এগনো যাবে। ওয়েবসাইটটিতে এরপর বার্তাটি হোয়াটসঅ্যাপে যে কোনও ১৫ জনের সঙ্গে শেয়ার করতে অনুরোধ করা হয়। তারপর "টাকা পাওয়ার জন্য" একটি কোড শেয়ার করে ওই ওয়েবসাইট।
শেষের পাতাটি অবশ্য লোড করা যায় না। বুম আরও দেখে যে লিঙ্কটি দেওয়া হয় সেটিতে ক্লিক করলে দু'টি 'ফিশিং' বা তথ্য চুরি করার ভাইরাস লাগানো ওয়েবসাইট খুলে যায়।
তাছাড়া, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দুরুণ নাগরিকদের অসুবিধে কমানোর জন্য তাঁদের টাকা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনার প্রমাণ বুম দেখতে পায়নি। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোও ওই দাবি নস্যাৎ করে।
বুম এর আগে 'দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' সংক্রান্ত ভুয়ো ওয়েবসাইট যাচাই করে ছিল।
আরও পড়ুন: নৈনিতালের ইসলামকরণ হচ্ছে মিথ্যে দাবিতে ছড়াল বাংলাদেশের পুরনো ছবি