না, এগুলি গাজিয়াবাদে নির্মমভাবে নিগৃহীত বালকের ছবি নয়
বুম দেখে ভাইরাল এই ছবিগুলি ইয়েমেনের আল মাহইত প্রদেশের এক বালকের, যাকে তার বাবা ২০২০ সালের অক্টোবরে বেধড়ক পেটায়।
শরীরে মারাত্মক ক্ষতচিহ্ন সহ ইয়েমেনের এক শিশুর এক গুচ্ছ ছবি এই ভুয়ো দাবি সহ শেয়ার হচ্ছে যে, এগুলি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে (Ghaziabad) এক হিন্দু মন্দিরে জল খেতে ঢুকে পড়ার অপরাধে নির্মমভাবে প্রহৃত এক মুসলিম বালকের ছবি।
ছবিগুলো দেখলে মনে হয়, খুব জোরে এবং নিষ্ঠুরভাবে চাবুক মেরে-মেরে ওই ক্ষতগুলো করা হয়েছে।
২০২১ সালের ১২ মার্চ গাজিয়াবাদের এক হিন্দু মন্দিরে ১৪ বছরের একটি মুসলিম বালক জল খেতে ঢুকে পড়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস রিপোর্ট করে যে প্রহারকারী ব্যক্তিটি নির্মমভাবে বালকটিকে লাথি ও ঘুষি মারার ছবির ভিডিও প্রচার করেl সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল হওয়ার পর গাজিয়াবাদের পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত শৃঙ্গীনন্দন যাদব এবং তার সহযোগী শিবানন্দকে গ্রেফতার করে। পড়ুন এখানে।
ছবিগুলো অস্বস্তিকর বলে বুম তার প্রতিবেদনে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করেনি।
ছবিগুলো যে ক্যাপশন সহ শেয়ার হচ্ছে, তা এই রকম: "তোমার সঙ্গে যা করা হয়েছে, তা ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় l যে ব্যবস্থা এর জন্য দায়ী, তা অমার্জনীয়। এসো এর প্রতিকার করি।"
টুইটারেও ভাইরাল
টুইটারেও একই ছবি নেতিবাচক ক্যাপশন সহ প্রচারিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: টিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ রাণীর, কৌতুক ছবি ছড়াল আসল বলে
তথ্য যাচাই
বুম দেখেছে, ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো ইয়েমেনের আল মাহইত প্রদেশের ২০২০ সালের অক্টোবরের, যেখানে এক পিতা তার ছেলেকে বেঁধে তার ও চাবুক দিয়ে বেধড়ক মেরেছে।
গুগল ইমেজ খুঁজে আমরা দেখেছি, ভাইরাল এই ছবিগুলো সহ ইয়েমেনের ওয়েবসাইটগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এক পিতার নিজের পুত্রকে এমন নৃশংসভাবে নিগ্রহ করার খবর বের হয়।
ইয়েমেনি ওয়েবসাইট ক্রেটার স্কাই গত ৪ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে লেখে—ইয়েমেনের আল মাহইত-এ এক পিতা তার পুত্রকে ওই রকম নিষ্ঠুরভাবে মেরেছিল, ওই অপরাধে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলে পুরেছে।
ইয়েমেনের আল মাহইত প্রদেশের পুলিশ ৪০ বছর বয়স্ক রশিদ মহম্মদ আল কাহিলিকে গ্রেফতার করে তার শিশুপুত্রকে এমন নির্মমভাবে নির্যাতন করার অপরাধেl গত ৫ অক্টোবর ইয়েমেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বিজ্ঞপ্তিতেই সে কথা জানানো হয়েছিল।
রিপোর্টটিতে পুলিশকে উদ্ধৃত করে আরও জানানো হয় যে, রশিদ তার ছেলেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তার এবং চাবুক দিয়ে বেদম মেরেছিল, যার জন্য বালকটির শরীরে ওই ধরনের রক্তাক্ত ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: বিজেপির কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্ট সংক্রান্ত এবিপি আনন্দের গ্রাফিকটি ভুয়ো