মাদ্রাসায় বাচ্চাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দাবিতে ছড়াল আল জাজিরার তথ্যচিত্র
বুম দেখে আল জাজিরার তথ্যচিত্রটিতে আসলে দেখানো হয়েছে কীভাবে আইএসআইএস আফগানিস্তানে বাচ্চাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
আল জাজিরার (Al Jazeera) তৈরি একটি তথ্যচিত্রে দেখানো দৃশ্য মিথ্যে দাবির সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। ওই তথ্যচিত্রে আসলে দেখানো হয়েছে, কী ভাবে আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএস) বাচ্চাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আল জাজিরার ওই তথ্যচিত্রর দৃশ্য ভারতে মাদ্রাসায় বাচ্চাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার দৃশ্য বলে মিথ্যা দাবি করে শেয়ার করা হয়েছে।
বুম যাচাই করে দেখে তথ্যচিত্রটি আল জাজিরার তৈরি এবং তাতে দেখানো হয়েছে কী ভাবে আফগানিস্তানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি ছোট বাচ্চাদের অস্ত্র এবং গ্রেনেড ব্যবহার করতে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
রাজধানী দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন অংশে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে।
১ মিনিট ৪২ সেকেন্ড দীর্ঘ ভিডিওটি হিন্দিতে লেখা যে টেক্সটের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তার অনুবাদ, "ছাত্ররা মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষা পাচ্ছে।"
(হিন্দিতে লেখা মূল টেক্সট मदरसे में छात्र उच्च शिक्षा प्राप्त करते हुए)
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবি—পাবজি আসক্তিতে হাসপাতালে কিশোরের গেম খেলার ভঙ্গিমা
তথ্য যাচাই
আমরা ভিডিওটির সঙ্গে ইংরেজিতে লেখা সাবটাইটেল দেখতে পাই এবং ভিডিওটির ১৪ সেকেন্ডের মাথায় নীচে বাঁ কোণে কাতারের সংবাদসংস্থা আল জাজিরার লোগো দেখতে পাওয়া যায়।
বাচ্চাদের অস্ত্র ব্যবহার এবং আল জাজিরা এই সব শব্দ দিয়ে আমরা গুগুল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি, এবং 'আইএসআইএল অ্যান্ড দ্য তালিবান' নামে তথ্যচিত্রর বিষয়ে আল জাজিরার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই। প্রতিবেদনটি ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে পুরো তথ্যচিত্রটি দেখানো হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কী রকম নজিরবিহীন ভাবে নাজিবুল্লাহ কুরেশি এবং জ্যামি ডরান আইএসআইএল-এর প্রধান নেতাদের কাছাকছি পৌঁছে গিয়েছেন এবং দেখেছেন যে, এমনকি পাঁচ বছর বয়সি শিশুদেরও অস্ত্রশিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং খিলাফতের প্রতি নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে শেখানো হচ্ছে।
ওই প্রতিবেদনে তথ্যচিত্রটিতে ব্যবহৃত ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, এবং আলোচ্য ভাইরাল ভিডিওটির একটি দৃশ্যের সঙ্গে সেই ছবিগুলির একটির অবিকল মিল রয়েছে।
৪৭ মিনিট দীর্ঘ ভিডিওটি আমরা খুঁটিয়ে দেখি, এবং ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ৪৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের মাথায় আমরা একই দৃশ্য দেখতে পাই। ইউটিউবে সার্চ করে আমরা দেখতে পাই যে, আল জাজিরা এই একই ভিডিও ২০১৫ সালের ২ নভেম্বর একই শিরোনামের সঙ্গে আপলোড করেছিল। নীচে ভিডিওটি দেখতে পাবেন।
আরও পড়ুন: না, ভাইরাল ছবিটি স্বাধীন ভারতের প্রথম ইফতার পার্টির দৃশ্য নয়