বাতিল কাগজওয়ালা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক? ভাইরাল ছবিটি ভুয়ো
আসল ছবিতে নবাব মালিকের মুখ আলাদা করে কেটে বসানো হয়েছে।
![বাতিল কাগজওয়ালা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক? ভাইরাল ছবিটি ভুয়ো বাতিল কাগজওয়ালা মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক? ভাইরাল ছবিটি ভুয়ো](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/11/12/962316-962136-nawab-malik-photoshopped-image.webp)
একটি ছবিতে মহারাষ্ট্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী নবাব মালিককে (Nawab Malik) বাতিল কাগজওয়ালা (Scrap Seller) হিসাবে দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। ছবিটি আসলে সম্পাদনা করা এবং ভুয়ো (Fake)। বুম যাচাই করে দেখে যে, ছবিটিতে নবাব মালিকের মুখ কম্পিউটারের মাধ্যমে কেটে বসানো হয়েছে।
বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) এই নেতা খবরের শিরোনামে রয়েছেন। এই বছর অক্টোবর মাসে মাদক নেওয়ার অভিযোগে আরিয়ান খানকে মুম্বইয়ের একটি প্রমোদতরী থেকে গ্রেফতার করা হয়। নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) মুম্বই জোনের ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সদস্য মোহিত কম্বোজ এবং মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবীসের বিরুদ্ধে এই মন্ত্রী একের পর এক অভিযোগ করে চলেছেন।
মালিক অভিযোগ করেছেন যে, আরিয়ান খানকে অপহরণ করে ওই প্রমোদতরীতে নিয়ে আসা হয় পরে যেখানে এনসিবি তল্লাশি করে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, পুরো পরিকল্পনা ছিল কম্বোজের এবং ওয়াংখেড়ে ছিলেন তার সহযোগী। কম্বোজ প্রত্যুত্তরে মালিকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেন। কম্বোজের ওই অভিযোগের উত্তরে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর মন্ত্রী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "আমার পুরানো কাগজের ব্যবসা আছে এবং কাগজওয়ালা হিসাবে আমি গর্বিত। আমার পরিবার এখনো ওই ব্যবসা করেন। আপনারা আজও ওখানে গিয়ে দেখতে পারেন। লুকানোর কিছু নেই।"
ভাইরাল হওয়া ভুয়ো ছবিটি যে ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে, তাতে মালিককে নিশানা করে অভিযোগ করা হয়েছে যে, তিনি এক জন পুরানো কাগজ বিক্রেতা ছিলেন, এবং তাঁর জামাইকে অন্য একটি মাদক সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল।
"কিছু বছর আগে যে লোকটি ছেঁড়া চটি ও ফাটা কাপড় পরত, সে এখন হাজার কোটি টাকার মালিক। এর নাম নবাব মালিক। এর জামাই মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অপরাধে আট মাস জেলে থেকে সম্প্রতি জামিন পেয়েছে।"
পোস্টটি দেখুন এখানে।
(হিন্দিতে লেখা মূল লেখা: कुछ साल पहले टुटी हबाई चप्पल और फटे कपड़े पहनने वाला यह आदमी हजारों करोड़ का मालिक है,नाम है नबाव मलिक। इनका दामाद ड्रग डीलिंग मामले में आठ महीने जेल रहकर हाल हाल में जमानत पर छुटा है।)
ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে
ছবিটি ফেসবুকেও একই ক্যাপশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জগদ্ধাত্রী পুজো: চন্দননগরে সপ্তমী থেকে দশমী রাতে কার্ফু শিথিল, গ্রাফিক ছড়াল বিভ্রান্তি
তথ্য যাচাই
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে ডিজিটালি মালিকের মুখ আলাদা করে সম্পাদনা করে বসানো হয়েছে। রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আসল ছবিতে অন্য এক ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে।
সার্চ করে আমরা হিউম্যনস অব ইন্ডিয়ার মুম্বইয়ের পুরানো কাগজ বিক্রেতাদের উপর করা একটি প্রতিবেদনে আসল ছবিটি দেখতে পাই।
ছবিটির সঙ্গে যে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে তাতে লেখা হয়েছে, "১৭ বছর আগে বম্বেতে আসার পর থেকে আমি আবার ব্যবহারযোগ্য বাতিল জিনিস হাতে টানা ঠেলায় করে বয়েছি; পরে আমার ভাইয়ের সাহায্যে এই বাতিল জিনিসের দোকান খুলেছি। আমি উত্তরপ্রদেশে জন্মেছি এবং সেখানেই বড় হই। আমার স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। আমার বাবা মারা গেছেন, আর মা উত্তরপ্রদেশেই থাকেন। আমি সকাল সাড়ে ৯ থেকে ১০ টার সময় দোকানে আসি। দুপুরে খাওয়ার সময় কোনও পাহারা ছাড়াই কোনও চুরি ডাকাতির ভয় ছাড়াই দোকান খুলে রেখে চলে যাই। কেউ যখন প্রশ্ন করেন যে এর কারণ কী, আমি বলি, "সব ওপরওয়ালেকি উপর হ্যায়" অর্থাৎ "আমি সব কিছুই ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দিয়েছি"। আমার ৩২ বছরের জীবনের বেশির ভাগ সময় আমি বোম্বেতে কাটিয়েছি। মাসে আমি ১০,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা রোজগার করি।"
আসল ছবি এবং ভুয়ো ছবি পাশাপাশি রেখে ছবি দুটির মধ্যে একটি তুলনা নীচে দেওয়া হল।
দুটি ছবিতেই 'হিউম্যানস অব ইন্ডিয়ার' জলছাপ দেখা যাচ্ছে।