মাস্ক পরা নিয়ে সরকারের পুরনো প্রচার ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে ভাইরাল
বুম দেখে ভিডিওটি ২০২০ সালের মার্চ মাসের। সে সময় লোকালয়ে শুধু করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের মাস্ক পরার নিদান দেওয়া হয়।
![মাস্ক পরা নিয়ে সরকারের পুরনো প্রচার ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে ভাইরাল মাস্ক পরা নিয়ে সরকারের পুরনো প্রচার ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে ভাইরাল](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/07/08/952473-madhya-pradesh-government-ad-on-wearing-masks-revived-and-shared-without-context.webp)
কোভিড ১৯ অতিমারির (Pandemic) একদম শুরুর দিকে নির্দেশাবলী বিষয়ক জনপ্রচারের একটি ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় জিইয়ে তোলা হয়েছে।
বুম দেখে ২০২০ সালের মার্চ মাসে মধ্যপ্রদেশ সরকার ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন (National Health Mission) জনস্বার্থে প্রচারের স্বার্থে ওই ভিডিওটি প্রকাশ করেছিল। সে সময় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ততটা সংকটজনক না হওয়ায় ভারতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ছিল না।
ভাইরাল হওয়া ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওটির শেষ দৃশ্যে মধ্যপ্রদেশ সরকার ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের লোগো রয়েছে। নেটিজেনরা এই ভিডিওটিকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের সাম্প্রতিক প্রচারের অঙ্গ বলে ভুল করছেন এবং মাস্ক পরার বিরোধিতা করে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
ভিডিওটিতে মাস্ক পরার কয়েকটি শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে এবং সুস্থ্য ব্যক্তিদের মাস্ক পরতে নিষেধ করা হয়েছে। তার মধ্যে কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখা দিলে, হাসপাতালে গেলে ও অসুস্থ্য হওয়ার প্রবণতা থাকলে মাস্ক পরার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "National health mission-এর এই বিজ্ঞাপন দ্যাখার পর নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না। সেই তো বাবা আমাদের পথেই এলি, তা এত দেরি কেন?"
![](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2021/07/08/952474-national-health-missions-advt-showing-mask-is-not-mandatory-in-public-places.webp)
আরও পড়ুন: শিকল বাঁধা ভাইরাল ছবির বৃদ্ধ ব্যক্তি স্ট্যান স্বামী নন
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির মূল কয়েকটি ফ্রেম রিভার্স সার্চ করে ১৯ মার্চ ২০২০ মধ্যপ্রদেশের জেলা শাসকের ফেসবুক পেজে ভিডিওটিকে দেখতে পায়। ওই সময় ভারতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সে সময় বলা হয়েছিল যাদের কাশি, জ্বর-সর্দির মত কোভিড-১৯ এর প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিয়েছে সাবধানতা হিসেবে মাস্ক পরা উচিত।
২০২০ সালের মার্চ মাস নাগাদ যখন প্রথম কোভিড-১৯ অতিমারি দেখা দেয় সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংগঠনগুলির তরফে হাসপাতালের কর্মী, সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকা ব্যক্তিবর্গকে এবং যাঁদের শরীরে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য লক্ষণ দেখা যাচ্ছে তাঁদের মাস্ক পরা উচিত বলে জানায়। ভারতের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকরি করা হয়েছিল কারণ স্বাস্থ্যকর্মীরা সে সময় কালোবাজরি ও উৎপাদন ঘাটতির ফলে নিয়মিত মাস্ক পেতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এন৯৫ মাস্কের হটাৎ সংকট দেখা দেয় জনগন ওই মাস্ক মজুত করে রাখছিলেন বলে।
গতবছরের এপ্রিল মাসের পর পরই উত্তরোত্তর সারা পৃথিবী জুড়ে উপসর্গহীন সার্স কোভ-২ রুগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। স্বাস্থ্যবিষয়ক সংস্থাগুলি তখন নানা দেশে লক্ষণ না দেখা দেওয়া ব্যক্তিদেরও মাস্ক পরার নিদান দেন।
মুম্বই এবং দিল্লিতে প্রথমে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। ওই নির্দেশে সার্জিকাল বা এন৯৫ মাস্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ১৪ এপ্রিল ২০২০ মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক বলে নির্দেশিকা জারি করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২৫ এপ্রিল ২০২১ থেকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে।
ভারতের আগে ভেনেজুয়েলা, ভিয়েতনাম, চেক রিপাবলিক সহ আরও আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের অন্যান্য দেশগুলি মাস্ক পরাবাধ্যতামূলক করে।
বিভ্রান্তিকর দাবিতে ২০২০ সালের অগস্ট মাসে ভিডিওটি ভাইরাল হলে বুম প্রথম এটির তথ্য-যাচাই করে।
আরও পড়ুন: কানাডায় তাপপ্রবাহে দাবানল বলে গণমাধ্যম দেখাল ২০০৭ সালের গ্রিসের ছবি