ভিডিওটি দিল্লির আইনজীবী সৌরভ কীর্পালের নাচের দৃশ্য নয়
বুম দেখে ভিডিওর ব্যক্তি আইনজীবী সৌরভ কীর্পাল নন, ইনস্টাগ্রাম ভিডিও ক্রিয়েটর দমনদীপ সিংহ চৌধুরী।
একটি ভিডিওতে বলিউডের এক গানের সঙ্গে এক ব্যক্তিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। এবং তাঁকে অভিজ্ঞ আইনজীবী ও সক্রিয় এলজিবিটিকিউআইএ+ (LGBTQI+) কর্মী সৌরভ কীর্পাল (Saurabh Kirpal) হিসেবে ভুল করে শনাক্ত করা হয়েছে।
বুম দেখে, আসলে উনি হলেন এক প্রতিভা যোগানকারী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও ডিজিটাল প্রোগ্রাম নির্মাতা দমনদীপ সিংহ চৌধুরী। উনি নিয়মিত নিজের নাচের ভিডিও পোস্ট করে থাকেন।
ভিডিওতে বাদশাহ ও পায়েল দেব-এর গাওয়া ‘সাজনা সে ইয়েস টু দ্য ড্রেস’ গানটির সঙ্গে একজনকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। ক্যাপশনে ওই ব্যক্তিকে ভুলবশত কীর্পাল বলে শনাক্ত করে কটাক্ষ করা হয়েছে তাঁকে। “ইনি হলেন সৌরভ কীর্পাল। ভবিষ্যতের এসসি বিচারপতি। *তাঁর বাবা বিএন কীর্পাল ২০০২তে এসসি’র প্রধান বিচারপতি ছিলেন*। তাই পরিবারতন্ত্রের প্রয়োজনে, প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের পক্ষে সমকামী বিবাহকে মান্যতা দেওয়া খুবই জুরুরি।”
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আর্কাইভের জন্য এখানে।
পোস্টটি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছে।
টুইটটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন। আর্কাইভ দেখতে এখানে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওর ব্যক্তিটি হলেন দমনদীপ সিংহ চৌধুরী। তিনি অভিজ্ঞ আইনজীবী সৌরভ কীর্পাল নন। ভিডিওটির প্রধান ফ্রেমগুলি দিয়ে গুগলে সার্চ করলে আমরা একটি টুইট দেখতে পাই। তাতে ওই ভিডিওটি ছিল এবং সেই সঙ্গে ছিল ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল @damandiaries নামটিও।
আমরা ইনস্টাগ্রামে ওই হ্যান্ডলটির খোঁজ করি। দেখা যায়, সেটির স্বত্বাধিকারী হলেন দমনদীপ সিংহ চৌধুরী। উনি নিয়মিত নিজের নাচ ও বলিউডের তারকাদের সঙ্গে তাঁর ছবি পোস্ট করে থাকেন।
৪ মে, সৌরভ কীর্পালের আপলোড করা টুইটও আমরা দেখতে পাই। তাতে উনি স্পষ্ট করে দেন যে, ভিডিওর নৃত্যরত ব্যক্তিটি তিনি নন। ওই টুইটে তিনি মিথ্যে ভাইরাল পোস্টে সমকামীদের প্রতি বিদ্বেষের সমালোচনাও করেন।
সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম, সৌরভ কীর্পালকে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করার সুপারিশ করেছে। যদি তিনি সেই পদে আসীন হন, তাহলে তিনিই হবেন ভারতের প্রথম, ঘোষিত সমকামী বিচারপতি। কিন্তু কলেজিয়ামের কথা অনুযায়ী, কেন্দ্র তাঁর নিয়োগে সম্মতি দেয়নি কারণ, তাঁর সঙ্গী হলেন একজন সুইস নাগরিক এবং সমকামিতা সম্পর্কে কীর্পালের খোলা মনোভাবের জন্য। কীর্পাল হলেন সেই আইনজীবীদের একজন, যাঁদের প্রচেষ্টার ফলে সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের ২০১৮’র যুগান্তকারী রায়ে, সমকামিতা থেকে অপরাধের তকমা মুছে দেন।
বর্তমানে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়া্ই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির একটি বেঞ্চ সমকামীদের বিয়ের সমানাধিকার নিয়ে একটি পিটিশন শুনছেন। আবেদনকারীদের পক্ষে সওয়াল করছেন আইনজীবী মানেকা গুরুস্বামী ও মুকুল রোহতগি।