ইউক্রেনে রুশ তাণ্ডব বলে ছড়াল ২০১৪ সালের সরকার বিরোধী প্রতিবাদের ছবি
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল ছবিটি ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সরকার বিরোধী প্রতিবাদের তাণ্ডব দৃশ্য।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের (Ukraine) কিয়েভে (Kiev) সরকার (anti-government) বিরোধী প্রতিবাদের পুরনো দৃশ্য রাশিয়ার ইউক্রেন (Russia Ukraine Conflict) আগ্রাসনের বিভৎসতার ছবি বলে ভুয়ো দাবি সহ সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন আক্রমণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। এরপর থেকে ক্রমাগত রকেট, বোমা ও মিসাইলের হানায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের নানা ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। যুদ্ধের ভয়াবহতা রুখতে ইতিমধ্যেই বিশ্বের নানা মহল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার আর্জি এসেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের কাছে। এর প্রেক্ষিতেই গ্রাফিক ছবিটি সোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে।
ভাইরাল হওয়া গ্রাফিক ছবিতে দেখা যায়, ধোঁয়াপূর্ণ জায়গায় পুড়ে যাওয়া গাড়ির অবশেষ। পাশে ইউক্রেনের পতাকা হাতে দেখা যায় জনগণদের। গ্রাফিক পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, "গোটা বিশ্বে যখন চেনা ছন্দ ফিরে এসেছে, কাটিয়ে মহামারীর বিভ্রান্তি, তখন রাশিয়া আক্রমণ করেছে ইউক্রেনের মাটিতে, লুটতে সেখানকার বাসিন্দাদের শান্তি।"
ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "আমরা কোনো দেশকেই সাপোর্ট করিনা, আমরা চায় শান্তিপূর্ণ ভাবে সব কিছুর মীমাংসা হোক"।
পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে ।
আরও পড়ুন: রাশিয়া কি ইউক্রেনে আটক ভারতীয়দের গাড়িতে তেরঙা লাগাতে নির্দেশ দিয়েছে?
তথ্য যাচাই
বুম রিভার্স সার্চ করে ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রকাশিত ডেইলি মেলের এক প্রতিবেদনে ছবিটিকে খুঁজে পায়। ইউক্রেনের কিয়েভে সরকার বিরোধী প্রতিবাদ সংক্রান্ত সেই প্রতিবেদনে ছবিটির ক্যাপশন লেখা হয়, "বিক্ষোভ এখন দেশের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ান-ভাষী পূর্বের কিছু শহর, ইয়ানুকোভিচের সমর্থনের ভিত্তি"।
ছবিটি তোলার কৃতিত্ব সেখানে ইউরোপিয়ান প্রেসফোটো এজেন্সি (ইপিএ)-কে দেওয়া হয়।
এই তথ্য সূত্র ধরে ইউরোপিয়ান প্রেসফোটো এজেন্সির ওয়েবসাইটে বিষয়টি সম্পর্কিত কিওয়ার্ড সার্চ করলে ছবিটিকে খুঁজে পাওয়া যায়। ইপিএর তরফে ছবিটি তোলেন সের্গেই ডজহেন।
ছবিটি সম্পর্কে লেখা হয়, "২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি বিক্ষোভকারীরা ইউক্রেনের ডাউনটাউন কিয়েভে একটি সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। ইউরোপ-পন্থীদের বিক্ষোভের কারণে ইউক্রেন উত্তপ্ত হয় কারণ প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ নভেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি অ্যাসোসিয়েশন চুক্তির পরিবর্তে রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বেছে নিয়েছিলেন। ২৫ জানুয়ারি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুসারে কিয়েভে রাতারাতি আরও লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ঢিল ও জ্বলন্ত বস্তু ছোঁড়েন।"
ছবিটি দেখা যাবে গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক ছবির গ্যালারিতেও।
আরও পড়ুন: ২০১৮ সালে গাজায় ইজরায়েলি বোমা বর্ষণ ভিডিও ইউক্রেনে রুশ হামলা বলে ছড়াল