বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল সিপিআইএমএল নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের সম্পর্কহীন ছবি
বুম যাচাই করে দেখে ভাইরাল গ্রাফিকের উক্তি সিপিআইএমএল নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের নয়। ২০১৫ সালে অমিত মিত্র ওই দাবি করেন।
সোশাল মিডিয়ায় কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মার্কস ও লেলিনবাদী) (CPIML) দলের সাধারণ সম্পাদক (General Secretary) দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের (Dipankar Bhattacharya) ছবি সহ একটি গ্রাফিক বিভ্রান্তিকরভাবে (misleading claims) ছড়ানো হচ্ছে।
২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করেন চিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইয়াংচাও বলেছেন সে দেশের রিপোর্ট অনুযায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের সবচেয়ে সৎ নেত্রী। সংশ্লিষ্ট মন্তব্যের সঙ্গে সিপিআইএমএল সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কোনও যোগ নেই।
ফেসবুক পোস্টে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের একটি সম্পর্কহীন ছবি ব্যবহার করে গ্রাফিক পোস্টের শিরোনামে লেখা হয়েছে, "মমতা ভারতের সবচেয়ে সৎ নেত্রী, চীনা রিপোর্ট" নিচে দীপঙ্করের ছবির উপরে লেখা হয়েছে, "চীনের নেত্রী আমাদের নেত্রী"।
এই গ্রাফিক পোস্টের মাধ্যমে সিপিআইএমএল দলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যকে নিশানা করা হয়েছে। গ্রাফিকটি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "এই ব্যাপার.."
ফেসবুক পোস্টটি দেখুন এখানে।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়াল ২০১৬ সালে রোহিত শর্মার অস্ত্রোপচারের ছবি
তথ্য যাচাই
বুম গুগলে "মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ভারতের সবচেয়ে সৎ নেত্রী কিওয়ার্ড সার্চ" করে একাধিক প্রতিবেদন দেখতে পায়।
৬ নভেম্বর, ২০১৫ প্রকাশিত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম লেখা হয়, "চীনা ভিপির সাক্ষাৎ 'সবচেয়ে সৎ ভারতীয় রাজনীতিক' মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের সঙ্গে, বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "চিনা সমীক্ষা অনুযায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সবচেয়ে সৎ রাজনীতিক। চিনের সহ সভাপতি লি ইয়াংচাও (Li Yuanchao) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সক্ষাতের শুরুতে এই মন্তব্য করেছেন।"
সেসময় আনন্দবাজার অনলাইন-এ অমিত মিত্রের ওই দাবির নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যার শিরোনাম, "চিনের চোখেও সততার প্রতীক মমতা, দাবি করলেন অমিত"। ওই গণমাধ্যমের দাবি, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এই সব প্রশংসাবাক্য লি'র মুখে অবশ্য প্রকাশ্যে শোনা যায়নি।"
বুম বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই চিনা রাজনীতিক লি ওই প্রশংসাসূচক মন্তব্যের বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি সে সময়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এবং আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে অমিত মিত্রের দাবিকেই উল্লেখ করা হয়েছে। একই দাবি করা হয়েছে ইকনমিক টাইমসে প্রকাশিত ২০১৫ সালের প্রতিবেদনেও।
বুম ভাইরাল গ্রাফিকে দাবি করা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এই ধরণের কোনও মন্তব্য খুঁজে পায়নি।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের নির্বাচনে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসকে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরোক্ষ সমর্থন জানালেও, বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনে প্রাক্তন বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়কে তৃণমূলের প্রার্থী করা এবং উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সিপিআইএমএল সাধারণ সম্পাদককে সমালোচনা করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান আইডল ১২ তে অরুণিতা ও পবনদ্বীপ "লক্ষ্মীর ভাণ্ডার" গান শোনালেন?