পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার পুরনো ছবি দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বলে ছড়াল
বুম দেখে ছবিটি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের সময় ২০১৯ সালে গুজরাতে তোলা হয়েছিল।
বেশ কয়েকজন বিজেপি (BJP) সদস্যকে দেখা গেল মাটিতে লুটিয়ে পড়া একজন পুলিশকে এক ব্যক্তির দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ছবি পোস্ট করতে, যেটিকে দিল্লির (Delhi) জাহাঙ্গিরপুরী এলাকার সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার ছবি বলে চালানো হচ্ছে।
বুম দেখে ছবিটির সাথে করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর, কারণ এটি আসলে গুজরাটে ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে হওয়া আন্দোলনের সময় তোলা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৬ এপ্রিল হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে উত্তর-পশ্চিম দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরী এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশের বক্তব্য, সেই সংঘর্ষে ব্যাপক ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয় এবং এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়l ২ জন পুলিশ অফিসারও নাকি ওই সংঘর্ষে আহত হন।
বিজেপির মহিলা মোর্চার ভারপ্রাপ্ত জাতীয় মিডিয়া প্রধান নীতু সিং একটি ছবি টুইট করে হিন্দি ক্যাপশনে লেখেন, "জেহাদি আবদুল পুলিশকে পাথর মেরে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেয়, কেননা সে ভয়কে জয় করে ফেলেছেl দিল্লির দাঙ্গা।"
পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি এমএলএ প্রেমনারায়ণ পান্ডে ওই একই ছবি টুইট করে ক্যাপশনে লেখেন, "দিল্লি পুলিশেরই এখন এ রকম অবস্থা! একবার ভাবুন, সাধারণ হিন্দুদের অবস্থাটা কী রকম!"
এই পোস্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
বিজেপির দিল্লির মুখপাত্র নবীন কুমার জিন্দল, যুব শাখার জাতীয় দফতরের ভারপ্রাপ্ত বিনীত ভাটস ত্যাগীও এই একই ছবি অনুরূপ ক্যাপশন দিয়েই টুইট করেছেন।
এমনকী দৈনিক সংবাদপত্র স্টেটসম্যান-ও একই ছবি দিয়ে ১৬ এপ্রিল দিল্লির সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: না, আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সমর্থকরা জয়পুরে 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' স্লোগান দেননি
তথ্য যাচাই
অথচ ছবিটির বিষয়ে খোঁজখবর করতে বুম অনুসন্ধান চালিয়ে দেখে, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে ছবিটি প্রথম ছাপা হয়েছিল।
ছবিটার ক্যাপশন ছিল, "আহমদাবাদের শাহ-এ-আলম এলাকায় বৃহস্পতিবার জনতা পুলিশকে আক্রমণ করছে।"
প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল, "বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আহমদাবাদের শাহ-এ-আলম এলাকায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে জনতার প্রতিবাদ পুলিশের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘর্ষের সৃষ্টি করে। তাতে একজন ডেপুটি কমিশনার, একজন সহকারী কমিশনার এবং ১২ জন পুলিশ কনস্টেবল সহ অন্তত ৩০ জন পাথরের ঘায়ে ও সংঘর্ষে আহত হন।"
২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর নবভারত টাইমস-এও গুজরাতে একই ধরনের প্রতিবাদ ও সংঘর্ষের খবর আমরা প্রকাশিত হতে দেখি। প্রতিবেদনের সঙ্গে একটি ভিডিও টুইট করা হয়, যাতে প্রতিবাদ আন্দোলনের সময় জনতা পুলিশ অফিসারদের আক্রমণ করছে দেখা যায়।
টুইটটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন: বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের ছবির সঙ্গে বিভ্রান্তিকর দাবিতে জুড়ল পেট্রোলের দাম