মিথ্যে দাবিতে ছড়াল চিত্রনাট্য আধারিত মেয়েদের মদ্যপানের ভিডিও
বুম দেখে চিত্রনাট্য অনুযায়ী তৈরি একটি ভিডিও অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারকে কটাক্ষ করে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।
একটি ভিডিওতে দু'জন মহিলাকে (Girls) খোলা জায়গায় বসে মদ (drinking) খেতে দেখা যাচ্ছে। এমনকি যিনি তাঁদের ছবি তুলছেন, মহিলারা তাঁকেও গালাগালিও করছেন। কিন্তু মিথ্যে ক্যাপশান সমেত ভিডিওটি এখন অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) সরকারের মদ সংক্রান্ত নীতির সমালোচনা করে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে।
বুম দেখে ক্লিপটি চিত্রনাট্য অনুযায়ী তৈরি একটি বড় ভিডিও থেকে নেওয়া। এবং মিথ্যে দাবি সমেত শেয়ার করা হচ্ছে সেটি।
২.৯ মিনিটের ভিডিওটিতে, দু'জন মহিলাকে খোলা জায়গায় বসে মদ খেতে দেখা যাচ্ছে। একটি লোক ওই দৃশ্য রেকর্ড করার চেষ্টা করলে, ওই মহিলারা তাঁকে গালিগালাজ করেন।
টুইটার ব্যবহারকারী রেণুকা জৈন (Renuka Jain) ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। সেই সঙ্গে ক্যাপশনে উনি লিখেছেন, "দিল্লিকে মদের রাজধানী করে তোলার জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অভিনন্দন।"
অশ্রাব্য ভাষা থাকার কারণে, ভিডিওটিকে এই প্রতিবেদনের সঙ্গে দেওয়া হল না। ভাইরাল ভিডিওটিতে গালিগালাজ রয়েছে। তাই সেটি দেখবেন কিনা, পাঠকরা তা বিবেচনা করবেন।
ভিডিওটি ফেসবুকে হিন্দি ক্যাপশন সহ ভাইরাল হয়েছে।
একটি ফেসবুক পোস্টে, ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, "কেজরিওয়াল সরকার দিল্লির ওলিতে-গলিতে মদের ঠেক খুলে দিয়েছে। তার ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন: दिल्ली में केजरीवाल सरकार ने जो दारु के ठेके हर गली मोहल्ले में खोल दिए हैं उसके रुझान आने चालू हो गए)
আরও এক ফেসবুক ব্যবহারকারী একই দাবি সমেত ভিডিওটি আরও বড় একটি হিন্দি ক্যাপশন সমেত শেয়ার করেন। পোস্টটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন: রাম মন্দিরের সমালোচনা জন্য ইমরান খানকে বাদ দিল ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা?
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওটিতে লেখা আছে. "Instagram - Mr_thakur1612"। তাছাড়া ভিডিওটির ১:১৭ সময়ে একটি ঘোষনা দেখা যায়। তাতে বলা হয়, "এই ভিডিওটি কেবল মাত্র বিনোদন ও প্রচারমূলক কাজের জন্য তৈরি। এটি 'ফেয়ার ইউজ ল'র (ভাল উদ্দেশ্যে ব্যবহার আইন) অধীনে পড়ে। এটিকে বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করার কোনও উদ্দেশ্য আমাদের নেই। শিল্পীদের সৃজনশীলতা তুলে ধরাই এই বিষয়বস্তুর উদ্দেশ্য। এবং এটা একান্তই প্রচারের জন্য তৈরি।"
বুম ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেল @মি_ঠাকুর১৬১২ যাচাই করে দেখে যে, সেটির মালিক হলেন সানি ঠাকুর নামের এক ব্যক্তি। ওই প্রোফাইলটি যাঁর, তিনি নিজেকে শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেন।
এই সূত্র ধরে আমরা ফেসবুকে সার্চ করি। তার ফলে, দেখা যায় যে, 'ঠাকুর প্রাঙ্ক' নামের একটি পেজে'এ ওই ভিডিওটির একটি দীর্ঘ সংস্করণ আপলোড করা হয়।
ফেসবুকে পোস্ট করা বড় ভিডিওটিতে, ঠাকুরকে শেষের দিকে (৭:৩৯ থেকে) দেখা যায়। সেখানে তিনি স্পষ্ট করেন যে, ভিডিওটিতে চিত্রনাট্য অনুযায়ী অভিনয় করা হয়েছে। এবং 'জ্ঞানের' জন্য তৈরি করা হয় সেটি।
বুম ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, উনি বলেন যে, সচেতনতা বাড়াতে উনি ওই ধরনের ভিডিও তৈরি করে থাকেন।
"ফেসবুকে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, সেটি কেটে নেওয়া হয়েছে ও কোনও পরিপ্রেক্ষিত ছাড়াই শেয়ার করা হচ্ছে। খোলা জায়গায় মদ খাওয়ার মতো আপত্তিকর আচরণের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই আমরা ভিডিওটি তৈরি করি। সেটির কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই," বুমকে বলেন ঠাকুর।
আরও পড়ুন: গুজরাতের ছবিকে মুলায়ম সিংহ জামানায় উত্তরপ্রদেশের ঘটনা বলে চালনো হল