তৃণমূলের আপত্তির পর স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যসভায় কেন ইস্তফা দিলেন?
দলত্যাগ-বিরোধী আইন ভঙ্গ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র অভিযোগ তোলার পরপরই রাজ্যসভায় ইস্তফা দিলেন স্বপন দাশগুপ্ত।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে(West Bengal Vote) বিজেপি প্রার্থী (BJP Candidate) স্বপন দাশগুপ্ত (Swapan Dasgupta) সংসদের রাজ্যসভার (Rajya Sabha) মনোনীত সদস্যের (member) পদ থেকে ইস্তফা (resigned) দিয়েছেন। স্বপন দাশগুপ্তর নাম দলের একজন প্রার্থী হিসেবে বিজেপি ঘোষণা করার পর, তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra) আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, রাজ্যসভার কোনও মনোনীত সদস্য কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন না। তাঁর অভিযোগ, স্বপন দাশগুপ্তকে দলের একজন প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে, বিজেপি রাজ্যসভার নিয়ম ভেঙ্গেছে।
রাজ্যসভার পোর্টালে সদস্যদের যে তালিকা রয়েছে, তাতে দেখা যায় যে, একজন মনোনীত সদস্য (nominated) হিসেবেই স্বপন দাশগুপ্ত থেকেছেন। কোনও পার্টির সঙ্গে যুক্ত হননি। তালিকাটি নিচে দেওয়া হল।
১৪ মার্চ, টুইট করে স্বপন দাশগুপ্ত জানান যে উনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে তারকেশ্বর (Tarakeshwar) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচন লড়বেন।
এই ঘোষণার পর, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র একাধিক টুইট করে রাজ্যসভা থেকে স্বপন দাশগুপ্তর পদত্যাগ দাবি করেন। উনি অভিযোগ করেন যে, বিজেপিতে যোগ দিয়ে দাশগুপ্ত দলত্যাগ-বিরোধী আইন ভেঙেছেন।
আরও পড়ুন: জেনে নিন পশ্চিমবঙ্গে জেলা ভিত্তিক বিধানসভা ভোটের দিন
তাঁর টুইটগুলি থেকে স্পষ্ট যে, স্বপন দাশগুপ্তর রাজ্যসভার সদস্যপদ বাতিল করার দাবি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যসভার অধ্যক্ষ ও উপরাষ্ট্রপতি এম বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে যোগাযোগ করার পরিকল্পনা করেছিল।
তবে 'এনডিটিভি' কে দাশগুপ্ত বলেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে মহুয়া মৈত্র অভিযোগ করেছেন বলে উনি পদত্যাগ করেছেন, তেমনটা নয়। "এটা আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নয়। আমি কেবল বলছি যে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে অনেকগুলি অসমাপ্ত কাজ শেষ করা প্রয়োজন, সংসদ সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার ব্যাপার আছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে সেগুলি সবই সম্পন্ন করা হবে।"
দলত্যাগ-বিরোধী আইন কী বলে?
দলত্যাগ-বিরোধী আইন সংবিধানের ১০ নং তফসিলের মধ্যে পড়ে। ওই আইন রাজনৈতিক দল, তাদের সদস্য, আইনসভায় তাদের পদ – এই সবের সম্পর্কগুলি নির্ধারণ করে। নির্বাচিত সদস্যরা কী ভাবে ভোট দেবেন আর দল ছাড়বেন, তাও পড়ে এই আইনের আওতায়।
সংসদ ও রাজ্য বিধান সভায় মনোনীত সদস্যদের ক্ষেত্রে এই আইনে বলা আছে যে, সেই ধরনের কোনও ব্যক্তি তাঁর সদস্যপদ পাওয়ার ছ'মাস পরে যদি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, তাহলে সংসদে বা রাজ্য বিধানসভায় তাঁর সদস্য পদ বাতিল করে দেওয়া হবে।
A nominated member of a House shall be disqualified for being a member of the House if he joins any political party after the expiry of six months from the date on which he takes his seat after complying with the requirements of article 99 or, as the case may be, article 188.
রাষ্ট্রপতি ১২ জনকে রাজ্যসভার সদস্যপদের জন্য মনোনীত করতে পারেন। প্রযুক্তিবিদ, বিশিষ্টজন আর বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতি ব্যক্তিদের মনোনীত করা হয়। অ্যাঙ্গলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের দু'জনকে রাষ্ট্রপতি লোকসভার সদস্যপদের জন্য মনোনীত করার আগের আইনটি সংবাধিনের ১২৬ তম সংশোধনের মাধ্যমে বাতিল করা হয়েছে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে।
তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১৬ সালেক এপ্রিল মাসে দাশগুপ্তকে রাজ্যসভার সদস্য পদের জন্য মনোনীত করেন।
২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত আট দফায় নির্বাচন হবে পশ্চিমবঙ্গে। ভোট গণনা হবে ২ মে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন বামফ্রন্টের নির্বাচনী ইস্তেহারে কী কী বিষয়ে জোর