ফ্যাক্ট চেক
২০০১'র বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রতিবাদের ছবি বিভ্রান্তির দাবি সহ ভাইরাল
আফগানিস্তানে তালিবানদের প্রাচীন মূর্তি ধ্বংসের প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ২০০১ সালে কোরান জ্বালিয়ে প্রতিবাদে অংশ নেয়।
তালিবানদের হাতে আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক মূর্তি ধ্বংসের প্রতিবাদে ২০০১ সালে দিল্লিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীদের কোরান জ্বালানোর ছবি ধর্মীয় রং লাগিয়ে বিভ্রান্তিকর ভাবে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। নেটিজেনরা এই ছবিটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা বলে ভুল করছেন।
ফেসবুকে শেয়ার হওয়া ভাইরাল ছবিটি আসলে একটি ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট। ওই স্ক্রিনশটের ছবিটিতে দেখা যায় কয়েকজন ব্যক্তি একটি কোরানে আগুন ধরাচ্ছে। ওই পোস্টে লেখা হয়েছিল, "প্রকাশ্যে কোরান শরীফে আগুন লাগিয়ে দিল হিন্দুরা। রক্তে এক ফোটা ঈমান থাকলে সবাই কে জানান হে আল্লাহ, এদের হেদায়ের করেন না হয় ধবংস করেন-আমিন"
ফেসবুক পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বুম ক্যাপশন সার্চ করে দেখে জুন-এপ্রিল মাসে এই ছবিটি একই বয়ানে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল।
তথ্য যাচাই
বুম ইন্টারনেটে এই ছবির রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধান করে দেখেছে এই ছবিটি প্রায় ১৯ বছর আগেকার এবং এই ছবির কিছু সূত্র খুঁজে পায়।
বুম ড্যানিশ সংবাদত্র 'বার্লিনক্স' এর ওয়েবসাইটে ২০১০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হওয়া একটি প্রতিবেদনে এই ছবিটি দেখতে পায়। ওই প্রতিবেদনে ছবিটির স্বত্ব দেওয়া আছে রয়টর্সকে এবং চিত্রগ্রাহক হিসেবে কমল কিশোরের নাম উল্লেখ রয়েছে।
বুম রয়টর্স এর ওয়েবসাইটে মূল ছবিটিকে খুঁজে পেয়েছে। বুম দেখে ছবিটি তোলা হয়েছিল ২০০১ সালের ৫ মার্চ। ছবিটির বর্ণনায় লেখা রয়েছে, "২০০১ সালের ৫ মার্চ নতুন দিল্লিতে রাষ্ট্রসংঘের দপ্তরের বাইরে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীরা পবিত্র কোরান জ্বালিয়ে আফগানিস্তানে তালিবানদের দ্বারা সেদেশের সমস্ত ঐতিহাসিক মূর্তি ধবংস করার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। ভারত তালিবানদের এই সমস্ত মূর্তি ধবংস করার প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে এবং মূর্তিগুলিকে অন্য দেশে নিরাপদে স্থানান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছে। কেকে/ সিপি"
(মূল ইংরেজিতে ক্যাপশন: Activists of the World Hindu Council burn a copy of the holy Koran to protest against a decision by the Taliban regime in Afghanistan to destroy all the historic statues in the country, outside the United Nations office in New Delhi March 5, 2001. India has denounced the Taliban plan to destroy the statues as barbaric and offered to arrange for transfer of the statues into the country for safekeeping. KK/CP)
নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে আফগানিস্তানে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। দেশের ক্ষমতা চলে যায় কট্টর তালিবানদের হাতে। ক্ষমতা দখলের পর তারা দেশ থেকে বিভিন্ন মূর্তি ধবংস করার পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে অন্যতম বামিয়ান উপত্যকায় পর্বতের গায়ে খোদাই করা ৬ শতকের বুদ্ধ মূর্তি। ইউনেস্কো এই মূর্তিগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০১ সালের মার্চ মাসে তালিবানরা ডিনামাইট ব্যবহার করে এই মূর্তি গুলিকে ধবংস করে দেয়।
Claim : ছবির দাবি দাবি হিন্দুরা কোরান জ্বালিয়ে দিচ্ছে
Claimed By : Facebook Posts
Fact Check : False
Next Story