বিশ্বের গহন কালো সৌন্দর্য কি গিনেস বুকে নাম তুললো? ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তরফে জানানো হয়েছে গায়ের রঙের জন্য তাদের কোনও প্রতিযোগিতার বিভাগ নেই।
সোশাল মিডিয়ায় দক্ষিণ সুদান বংশদ্ভূত এক মডেল ন্যাকেম গেটওয়েচের রূপ লাবণ্যের কদর করতে গিয়ে এক বিভ্রান্তিকর ভুয়ো তথ্য শেয়ার করা হচ্ছে। ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে ওই মডেল বিশ্বের সবচেয়ে 'কালো সুন্দরী'র শিরোপা অর্জন করে, নাম তুলছেন গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডের।
ফেসবুকে ন্যাকেম গেটওয়াচের ছবি শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, ''একদম কালো পাথরের ভাস্কর্য ভেবে ভুল করে বসবেন না। রক্ত মাংসে গড়া এক নারী। বিরলতম এই কৃষ্ণ সুন্দরী সুদানের মডেল ন্যাকেম। ইতিমধ্যে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ডে বিশ্বের সবচেয়ে কালো সুন্দরী হিসেবে নাম তুলে ফেলেছেন।''
ফেসবুক পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বুম দেখে ন্যাকেম গেটওয়েচের ছবিগুলি এপ্রিল মাস থেকে ইংরেজিতে একই বয়ানে ফেসবুকে শেয়ার করা হচ্ছে।
পোস্টটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: নাম ভাঁড়ানো ফেসবুক পেজ-গ্রুপ নিয়ে সরব বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়
তথ্য যাচাই
বুম 'সুদানের মডেল ন্যাকেম' 'গিনেস বুক অফ রেকর্ডস' প্রভৃতি কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখে ন্যাকেম গেটওয়েচের গায়ের রঙের জন্য গিনেস বুম অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এর তালিকায় নাম ওঠেনি।
কেনিয়ার গণমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ডকে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে গিনেস বুক অফ রেকর্ডস' এর মুখপাত্র জেসিকা স্পিলানে ইমেল প্রত্যুত্তরে জানিয়েছে যে, ''গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস গায়ের রঙের জন্য কোনও তালিকা রাখেনা।''
গিনেস বুক অফ রেকর্ডস এর তরফে ২৪ এপ্রিল ২০২০ বিষয়টি টুইট করে জানানো হয়। @iChopTweets নামে এক টুইটার ব্যবহারীকে কোট করা হয় ওই টুইটে। পরে ওই টুইটার ব্যবহারকারী ন্যাকেম গেটওয়েচের সঙ্গে হওয়া টুইটার বার্তালাপের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে ন্যাকেম গেটওয়েচও জানান, গিনেস বুক অফ রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ তাঁর বা তাঁর টিমের সঙ্গে এরকম কোনও ব্যাপার নিয়ে যোগাযোগ করেনি।
I spoke to her too and couldn't confirm the record. Apologies for the wrong information, nevertheless she deserves all the recognition. pic.twitter.com/yGQiIhJayx
— The DRS ™ (@iChopTweets) April 27, 2020
২৭ বছর বয়সী ন্যাকেম গেটওয়েচ কেভিন ক্লেয়েন, ফ্যাশন নোভা ও কসমোপলিটন প্রভৃতির জন্য মডেল হয়েছেন। এই 'কালো হরিণ চোখ'-এর সুন্দরী বাবা মায়ের আদি বাস দক্ষিণ সুদানের মাইয়ুটে। জন্মের পর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দক্ষিণ সুদান পেরিয়ে তাঁর ঠাঁই হয় কেনিয়ার উদ্বাস্তু শিবিরে। ১৪ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে আমিরিকায় আসেন শরনার্থী হিসেবে। এখনও ন্যাকেম গেটওয়েচ নিজেকে দক্ষিণ সুদানের নাগরিক হিসেবে ভাবতে ভালোবাসেন।