এই ভিডিওটিতে কি জেএনইউ পড়ুয়াদের গালি গালাজ করতে দেখা যায়? একটি তথ্য যাচাই
২০০৮ সালে এক্সএলআরআই ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের কুরুচিকর কথা বলার ভিডিওটিকে জেএনইউ-এর পড়ুয়াদের অভব্য আচরণ বলা হচ্ছে।
৫ জানুয়ারি ২০২০ জওহরলাল নেহরু ইউনিভারসিটির পড়ুয়াদের ওপর হামলার পর, ওই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে মিথ্যে খবরের জোয়ার বইছে। ২০০৮ সালে জামশেদপুরের জেভিয়ার্স লেবার রিলেসন্স ইনস্টিটিউট-এ (এক্সএলআরআই) তোলা ভিডিও মিথ্যে দাবি সমেত ভাইরাল হয়েছে এই বলে যে, সেটি দিল্লির জেএনইউতে তোলা।
ভিডিওটিতে একদল ছাত্রীকে একটি ক্যাম্পাসে গালিগালাজ করতে দেখা যাচ্ছে। ওই মেয়েরা ক্যাম্পাসের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের দেখে ছি-ছি করেন।
কুরুচিকর শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বলে বুম ভিডিওটি এখানে দেয়নি।
ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। দাবি করা হয়েছে: "ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলাকালে, জিএনইউর ছাত্রীরা জঘন্য ভাষা ব্যবহার করে। এবং জেএনইউতে তাদের পড়াশোনার জন্য আমরা ভরতুকি দিই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জেএনইউ নামক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।"
নভেম্বর ২০১৯-এও ভিডিওটি একই মাধ্যমটিতে ভাইরাল হয়েছিল। তখনও বলা হয়, "#জেএনইউর মেয়েরা: জেএনইউতে এই ধরনের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। দেখুন, ভিসির বিরুদ্ধে তারা কিরকম অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়ার সময় এসেছে।"
জেএনইউর ভিডিও বলে বুমের হেল্পলাইনেও সেটি আসে।
তথ্য যাচাই
বুম দেখে ভিডিওটি ২০০৮ সালের। রিভার্স ইমেজ সার্চ করে আমরা জানতে পারি যে, আসল ভিডিওটি ২০০৮ সালে এক্সএলআরআই-এর জামশেদপুর ক্যাম্পাসে তোলা হয়। ভিডিওতে একজনকে বলতে শোনা যায়, "এটা আইআইএমসি"। আর সেই ভাবে এক্সএলআরআইতে আইআইএম কলকাতার মেয়েদের উপস্থিতি জানানো হয়। যে সব ওয়েবসাইট কলেজ ফেস্টিভাল নিয়ে আলোচনা করে, তাদের মধ্যে 'পাগল গায়' সহ আরও বেশ কয়েকটিতে আইআইএমসি আর এক্সএলআরআই-এর মধ্যে রেষারেষির কথা উল্লেখ করা হয়। বুম অবশ্য নিজস্ব উপায়ে ওই মেয়েরা আইআইএমসি-র কিনা তা যাচাই করতে পারেনি।
আমরা ২০০৯ সালের একটি আরও বড় ভিডিও পাই। তাতে দেখা যায় অন্য একদল মেয়ে—তাদের একজনের পোশাকে এক্সএলআরআই লেখা ছিল—ওই ছাত্রীদের দেখে ছি-ছি করছে।
এই ভুয়ো দাবিকে 'কুইন্ট' আগে মিথ্যে বলে প্রমাণ করেছে। এক্সএলআরআই-এর পড়ুয়ারা কুইন্টকে জানিয়েছিলেন যে একটি স্পোর্টস অনুষ্ঠানের সময় ওই ঘটনা ঘটে। তবে কোন সালে সেটি ঘটেছিল, সেটা তারা বলতে পারেননি।