ফ্রান্সে শিরোচ্ছেদ প্রসঙ্গে রানা আয়ুবের ভুয়ো সম্পাদিত মন্তব্য ভাইরাল
বুম দেখে ‘মাত্র দুটি শিরচ্ছেদের ঘটনায় সব মুসলমানকে ঘৃণা করা যায় না' লেখা স্ক্রিনশটটি সম্পাদনা করে বানানো হয়েছে।
এক সংবাদ প্রতিবেদনের স্ক্রিনগ্র্যাবের সম্পাদিত একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। তাতে দাবি করা হয়েছে যে সাংবাদিক রানা আয়ুব ফ্রান্সে শিরচ্ছেদের ঘটনাকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং এই হিংসার পক্ষে যুক্তি খাড়া করেছেন।
তথ্য যাচাই
বুম অনুসন্ধান করে দেখল, যে স্ক্রিনগ্র্যাবটি ভাইরাল হয়েছে সেটি সম্পাদিত, এবং সিএনএন-এর আসল দৃশ্যটিতে এই রকম কোনও নিউজ টিকার ছিল না। এই স্ক্রিনশটটি সিএনএন-এ পয়লা মার্চ ২০২০ তারিখে সম্প্রসারিত ফরিদ জাকারিয়ার অনুষ্ঠান থেকে নেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ ফ্রান্সে হামলার বহু আগে।
তা ছাড়াও, দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে মন্তব্য করার সময় রানা আয়ুব শিরশ্চেদ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
যে সম্পাদিত স্ক্রিনগ্র্যাবটি ভাইরাল হয়েছে, তার নিউজ টিকারে লেখা রয়েছে, "মাত্র দুটি শিরশ্ছেদের ঘটনায় সব মুসলমানকে ঘৃণা করা যায় না।" অনুষ্ঠানটি চলার সময় পর্দায় আসল যে নিউজ টিকারটি ছিল, তাতে লেখা ছিল, " দিল্লিতে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সাম্প্রদায়িক হিংসায় বহু মানুষের মৃত্যু।"
১ মার্চ, ২০২০ তারিখে সিএনএন যে টুইটটি করেছিল, তার ১ মিনিট ৯ সেকেন্ড টাইমস্ট্যাম্পে আসল টিকারটি দেখা যাবে।
সিএনএন-এর ওয়েবসাইটে পাঁচ মিনিট পনেরো সেকেন্ড দৈর্ঘের গোটা সেগমেন্টটিই দেখা যাবে। ভাইরাল মেসেজটিতে যেমন দাবি করা হচ্ছে, এই ক্লিপটির কোথাও রানা আয়ুবকে তেমন কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। (দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন)। গত ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল, এই ক্লিপে সে বিষয়ে আলোচনা শোনা যাবে।
আয়ুব নিজেও টুইট করে জানান, তাঁর ছবিসমেত যে স্ক্রিনগ্র্যাবটি ঘুরছে, তা আদ্যন্ত ভুয়ো। তাঁর নামে যে উদ্ধৃতি সেখানে দেওয়া হয়েছে, সেটিও মিথ্যে। আয়ুব এই ছবিটিকে মর্ফড বলেন এবং দাবি করেন যে তিনি এই ভ্রান্ত তথ্যের বিরুদ্ধে লড়তে লড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
তুলনা
ভুয়ো স্ক্রিনগ্র্যাবটিতে আয়ুবের নামের বানানটি ভুল লেখা হয়েছে— ইংরেজি তিনি Ayyub লেখেন, কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে Ayub। নিউজ টিকারেও ব্যাকরণগত ও অন্যান্য ভুল রয়েছে।
আসল ও ভুয়ো স্ক্রিনগ্র্যাবের মধ্যে কিছু তুলনা নীচে দেওয়া হল।
ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে ফ্রান্সের আক্রমণের ঘটনা নিয়ে রানার উদ্ধৃতি বলে যে কথাগুলি লেখা হয়েছে, রানার তেমন কোনও বিবৃতির সন্ধান আমরা পাইনি।
ফ্রান্সে শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা করার পর বিভিন্ন অসম্পর্কিত ভিডিও ও ছবি কিছু মিথ্যে দাবিসমেত ভাইরাল হয়েছিল। বুম ইতিপূর্হে সেগুলির তথ্য যাচাই করেছে।