দিল্লির দাঙ্গায় হিন্দু মহিলা আক্রান্ত হওয়ার এই ছবিগুলি মিথ্যে
বুম দেখে ছবি চারটি পুরনো এবং দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসার সঙ্গে সেগুলির কোনও সম্পর্ক নেই।
একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কহীন চারটি ভয়ঙ্কর ছবির একটি সেট ভাইরাল হয়েছে এই বলে যে, সেগুলি দিল্লির সাস্প্রতিক হিংসার সঙ্গে যুক্ত। ক্যাপশনে মিথ্যে দাবি করা হয়েছে যে, ছবিতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁরা হলেন এক উন্মত্ত জনতার হাতে নিহত হিন্দু মহিলা।
দু'টি ছবিতে এক মহিলার শরীরে গভীর কাটা দাগ দেখা যাছে। বাকি দু'টিতে দেখা যাচ্ছে দুই মহিলার রক্তমাখা মৃতদেহ। তাদের মধ্যে একজন পড়ে আছেন মাটিতে। বীভৎস ছবিগুলির সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে যা বলা হয়েছে, তা এই রকম: "দিল্লির মৌজপুর আর শিব বিহার এলাকায় হিন্দুদের বাড়িতে জোর করে ঢুকে, মা বোনেদের হত্যা করা হয়েছে।"
(মূল হিন্দিতে বয়ান: दिल्ली के मौजपुर,शिव विहार इलाकों के हिंदू घरों में घुस-घुसकर माँ-बहनें के साथ मार काट की गई।)
উত্তর-পূর্ব দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছবিগুলি শেয়ার করা হচ্ছে। ওই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত অন্তত পক্ষে ৪৭ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে, যদিও নিহতের সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে। ওই হিংসার ঘটনায় ধর্মস্থান ভাঙচুর করা হয়েছে এবং এলাকার হেড কনস্টেবল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
তথ্য যাচাই
প্রথম দু'টি ছবি বুম ২০১৮ সালেই নস্যাৎ করে। সেই সময়, সাম্প্রদায়িক রঙ চড়িয়ে ছবিগুলি শেয়ার করা হচ্ছিল। বলা হচ্ছিল যে, এক হিন্দু মহিলা মুসলমানদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন।
ছবি ১ ও ২
বীভৎস ছবিগুলি বিহারের গোপালগঞ্জ জেলায় তোলা। এক ২০ বছরের মহিলা যখন মন্দিরে যাচ্ছিলেন, তখন সন্দীপ গিরি নামের এক ব্যক্তি তাঁকে আক্রমণ করেন। তাঁর কাঁধে আর হাতে গভীর ক্ষত দেখা যাচ্ছে। পুলিশ বুমকে জানায় যে, আক্রান্ত ও আক্রান্তকারী উভয়েই হিন্দু।
'দৈনিক জাগরণ', 'সিওয়াননিউজ' এবং 'প্রভাত খবর'-এর মতো খবরের ওয়েবসাইটে ওই ঘটনা সংক্রান্ত রিপোর্ট আমরা দেখতে পাই। তাতে বলা হয়, গোপালগঞ্জ জেলার কাটেয়া অঞ্চলের নেহরুয়া কালা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে।ছবি ৩ ও ৪
বুম দেখে যে তৃতীয় ও চতুর্থ ছবিও পুরনো এবং সম্পর্কহীন। তৃতীয় ছবিতে একটি মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, ২০১৮ সালে 'মিডিয়াম'-এ প্রকাশিত একটি ব্লগ উঠে আসে। কিন্তু ওই ব্লগটিতে ওই মহিলা বা তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না।
চতুর্থ ছবিটিতে দুজন মৃত মহিলাকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেটির উৎস ২০১৫ সালের একটি ব্লগ।
বুম তৃতীয় ও চতুর্থ ছবির স্থান বা অন্যান্য তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি ।