আইসল্যান্ড কি ধর্মকে মানসিক অসুখ ঘোষণা করেছে?
মূল লেখাটি 'প্যাথিঅস' বলে এক ওয়েবসাইটের ব্যঙ্গাত্মক লেখার বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে।
'প্যাথিঅস'-এ প্রকাশিত একটি ব্যঙ্গাত্মক লেখায় বলা হয়েছে যে, আইসল্যান্ডের পার্লামেন্ট ধর্মকে মানসিক অসুখ বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু লেখাটিকে সত্যি মনে করে অনলাইনে শেয়ার করা হচ্ছে।
'আইসল্যান্ড সব ধর্মকে মানসিক রোগ ঘোষণা করল', এই শিরোনামে লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে ওই ওয়েবসাইটের 'লাফিং ইন ডিসবিলিফ' (বা 'হেসে খুন') নামের ব্যঙ্গ রচনার বিভাগে। প্যাথিঅস ধার্মিক ও অধার্মিক দৃষ্টিকোণের লেখা প্রকাশ করে।
লেখায় বলা হয়েছে, সব বাইবেলের ওপর 'মানসিক ব্যাধি সতর্কবার্তা' লাগানো এবং আমেরিকান টেলিভিশন-ধর্মপ্রচারকদের নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট পড়ার পর, আইসল্যান্ড ওই পদক্ষেপ নেয়। লেখাটিতে বলা হয়েছে, বাইবেলের ওপর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কবার্তা আইনসিদ্ধ করার জন্য জনপ্রতিনিধিরা ভোট দেন ও বিপুল ভোটে তা পাস হয়।
লেখাটির একটি অংশে বলা হয়েছে:
"উত্তর অতলান্তিকের এই দ্বীপের মত ছোট দেশটি নানা বিতর্কের বাসা। সে দেশের সংসদ, ২০১৭ সালে ভোটের মাধ্যমে সব বাইবেলের ওপর মানসিক রোগের সতর্কবাণী লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই একই বছর, দেশটি আমেরিকান টেলিভিশন-ধর্মপ্রচারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে, আরও একটি ধর্মনিরপেক্ষ পদক্ষেপ নেয়। এখন থেকে আইসল্যান্ড সব ধর্মকে মানসিক ব্যাধি হিসেবে ঘোষণা করছে। আলপিংগি (দেশের সংসদ) এই আইনের পক্ষে বিপুল ভাবে ভোট দেয় (৬০-৩)। যে তিনজন সাংসদ বিপক্ষে মত দেন, তাঁরা মনে করেন আইনটি যথেষ্ট নয়।"
(ইংরেজিতে লেখা হয়, "This small island country in the North Atlantic is home to many controversies. The country's parliament voted in 2017 to place mental health warnings on all Bibles. In that same year, the nation took another secular step forward by banning American televangelists. Iceland is now declaring all religions to be psychological disorders. The Alþingi (the nation's parliament) voted overwhelmingly in favor of the statute 60-3. The three politicians who voted against the decree reportedly believed the measure didn't go far enough.")
আরও পড়ুন: চন্দ্রযান ২-এর ব্যর্থতার জন্য কংগ্রেস দায়ী, এমন একটি ব্যঙ্গচিত্রকেই বিশ্বাস করে বসলেন নেটিজেনরা
নাম না করে, একজন জনপ্রতিনিধির উদ্ধৃতিও দেওয়া হয়েছে লেখায়। উনি বলছেন, "আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা সৌদি আরবের মত হতে চাই না। চাই কি?"
বুম দেখে অনেক নেটিজেন লেখাটিকে সত্যি মনে করে বলেছেন, এটি একটি "যুগান্তকারী পদক্ষেপ"।
Iceland: all religions are mental disorders
— Kaustubh Chandra (@kauz_i_say_so) January 23, 2020
India: my mental disorder is better than your mental disorderhttps://t.co/N5COMm3XfJ
Revolutionary step taken by Iceland but instead they should have declared that all the religious leaders r Mentally sick.
— Harjndersingh (Nehruvian ) (@Hajindersingh2) January 25, 2020
For me religion is personal belief but show off is mental disorder. https://t.co/cqkeTc3siC
Huge Respect to #Iceland for declaring all the religions as mental disorder. I would kill to migrate to your beautiful nation. ❤️ pic.twitter.com/WgIQvbH9Ve
— Krispin K (@krispin1991) January 23, 2020
- বুম জেনেছে যে, লেখাটি ব্যঙ্গধর্মী, এবং ওই ধরনের কোনও রিপোর্ট মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।
আরও পড়ুন: বিন লাদেনের জন্য মরণোত্তর অনুতাপ - কাশ্মীরি ওয়েবসাইট বিদ্রূপাত্মক রচনাকে সত্য ধরে নিয়েছে
তাছাড়া লেখাটি ওই ওয়েবসাইটের হাস্যকৌতুক বিভাগে প্রকাশিত হয়। সেখানে ব্যঙ্গাত্মক লেখাই ছাপা হয়ে থাকে। এমনকি, লেখাটি ট্যাগ করা হয় 'স্যাটায়ার' (ব্যঙ্গ) শব্দটির সঙ্গে। তার স্ক্রিনশট দেওয়া হল নীচে।
এ ছাড়া, লেখাটির চরিত্রের সঙ্গে মেলে সে রকম কিছু হাস্যকর ও অবিশ্বাস্য লেখা লিঙ্ক করে দেওয়া হয় সেটির সঙ্গে। সেরকম কিছু লেখার তালিকা নীচে দেওয়া হল। সেগুলিও ওই পাতায় দেখা যায়।
বুম জেনেছে যে, লেখাটি ব্যঙ্গধর্মী, এবং ওই ধরনের কোনও রিপোর্ট মূলস্রোতের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।
- আইসল্যন্ড ধর্মাচারনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে
- অনলাইন সাইট স্টারবাকস ও লাইব্রেরিস এ ঢোকায় খ্রিস্টানদের মানা
প্যাথিঅসের হাস্যকৌতুক বিভাগের লেখক অ্যান্ড্রু হলেরও খোঁজ পায় বুম। তিনি নিজের সব লেখাকে ব্যঙ্গাত্মক বলেই বর্ণনা করেন। উনি ধর্ম সংক্রান্ত ব্যঙ্গাত্মক লেখাই বেশি লেখেন ও নিজেকে "হাস্যরসের একক কর্মীর কারখানা" বলে থাকেন। তার জীবনী পড়া যাবে এখানে।
শুনুন পডকাস্ট: কীভাবে ব্যাঙ্গে থাকা ভুয়ো খবর চিনবেন?