ভুয়ো খবরের খপ্পরে ইমরান খান, সোশাল মিডিয়ায় শোরগোলে ডিলিট করলেন টুইট
বাংলাদেশের একটি ভাইরাল ভিডিওকে উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের উপর পুলিশের বর্বরতা বলে টুইট করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার তিনটি ভিডিও টুইট করে দাবি করেন, এগুলি ভারতে মুসলিমদের জাতিগত নির্মূল (এথনিক ক্লিনজিং) করার নিদর্শন। বুম এবং অন্য কয়েকটি সোশাল মিডিয়া তাঁকে ধরিয়ে দেয় যে, অন্তত এর মধ্যে দুটি ভিডিওর সঙ্গে তাঁর দাবির কোনও সম্পর্ক নেই। আর তার পরেই তিনি পুরো টুইটার থ্রেডটাই মুছে দেন।
ইমরানের পোস্ট করা প্রথম ভিডিওটি ছিল বাংলাদেশের একটি পুলিশি হানাদারির দৃশ্য। এই অস্বস্তিকর দৃশ্যটিতে বাংলাদেশের পুলিশকে হেলমেট, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট ইত্যাদি দাঙ্গা-রোধী পোশাক পরিহিত অবস্থায় আহত প্রতিবাদীদের উপর বেধড়ক মারধর করতে দেখা যাচ্ছে।
একটা গোটা দিন ধরে এই ভিডিওটি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ভুয়ো দাবি নিয়ে যে, এটি আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি কার্যকর করার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশি নির্যাতনের ছবি। ইমরান খান টুইট করার আগেই বুম এই ভিডিওটির তথ্য-যাচাই সম্পন্ন করেছিল।
ইমরান এই ভিডিওটি টুইট করেন এই বিভ্রান্তিকর ক্যাপশন দিয়ে: 'এটি উত্তরপ্রদেশে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতীয় পুলিশের নিপীড়নের চিত্র।'
এর সঙ্গে তিনি আরও দুটি ভিডিও জুড়ে দেন, যাতে প্রতিবাদীদের উপর পুলিশি পাশবিকতার ছবি রয়েছে। ক্যাপশন দেন: 'মোদী সরকারের মুসলিম বিতাড়নের নীতি রূপায়িত করতে ভারতীয় পুলিশের তৎপরতা।'
দ্বিতীয় ক্লিপটি অবশ্য উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের সময়কার ছবি বলেই মনে হচ্ছে, যদিও বুম সেটি এখনও যাচাই করে উঠতে পারেনি।
তৃতীয় ক্লিপটিতেও প্রতিবাদীদের উপর পুলিশি ধরপাকড় এবং লাঠি-চার্জের দৃশ্য স্পষ্ট।
এই ভিডিওটিকে মূল ফ্রেমে ভেঙে অনুসন্ধান চালিয়ে আমরা দেখি, এটি ইউটিউবে আপলোড হয়েছিল ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ ও তার বিরুদ্ধে পুলিশি বর্বরতা শুরু হওয়ার অনেক আগে। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে—এটি উন্নাওয়ে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর পুলিশি লাঠি-চার্জ ও কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগের ছবি। এবং তাতে আক্রান্তদের সম্প্রদায়ের কোনও উল্লেখ নেই।
ইমরান খানের টুইটার অনুগামীর সংখ্যা ১ কোটি, স্বভাবতই প্রায় সঙ্গে-সঙ্গেই তাঁর টুইটটি ভাইরাল হয়ে যায়। অচিরেই বহু টুইটার ব্যবহারকারী এবং বুমও প্রথম ভিডিওটির অর্থাৎ বাংলাদেশি পুলিশি হানাদারির তথ্যযাচাই শুরু করে দেন।
False. This video is from Bangladesh shot in May 2013 and is in no way related to India. #FakeNews https://t.co/iWrC70Wkf9 https://t.co/68dV6izDaw
— BOOM FactCheck (@boomlive_in) January 3, 2020
উত্তরপ্রদেশ পুলিশও এই কথোপকথনে যোগ দেয় এবং ইমরানকে পাল্টা টুইট করে জানায়, এটি অনেক পুরনো একটি ভিডিও এবং এর সঙ্গে সাম্প্রতিক পুলিশি তৎপরতার কোনও সম্পর্ক নেই।
This is not from U.P, but from a May,2013 incident in Dhaka,Bangladesh.The RAB(Rapid Action Battalion) written on the vests at 0:21s, 1:27s or the Bengali spoken, or these links would help you be better informed.
— UP POLICE (@Uppolice) January 3, 2020
1. https://t.co/Rp3kcKHz2K
2.https://t.co/zf7qk9bY7M@UPPViralCheck https://t.co/4krjmD38PK
তাঁর টুইটের প্রতিক্রিয়া এবং তথ্য-যাচাইয়ে ভিডিওগুলি ভুয়ো প্রতিপন্ন হওয়ার পর ইমরান গোটা টুইটার থ্রেডটাই মুছে দেন।