না, কৃষি বিল পাস হওয়ার পর আদানিদের খাদ্য মজুত করার সাইলো তৈরি হয়নি
পাঞ্জাবের মোগায় সাইলোটি ২০০৭ সালে তৈরি হয়। বুম সংবাদ প্রতিবেদন ও ওই সংস্থাটির এক অধিকর্তার থেকে এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে।
সোশাল মিডিয়ায় মিথ্যে দাবি করে বলা হয়েছে যে, সংসদে কৃষি বিষয়ক তিনটি বিল পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদানি লজিস্টিক্স লিমিটেড একটি খাদ্য মজুত করার সাইলো তৈরি করে ফেলেছে। ওই মিথ্যে দাবির সঙ্গে দেওয়া হয়েছে একটি ছবি। সেটিতে ফুড করপোরেশন অফ ইন্ডিয়া-র (এফসিআই) সাইনবোর্ডের এক পাশে আদানি লজিস্টিক্স নিয়ন্ত্রিত একটি সাইলোর দিক নির্দেশ করা আছে। ওই কম্পানির এক অধিকর্তা বলেন সাইলোটি ১৩ বছরের পুরনো। সেটি সম্প্রতি গড়ে তোলা হয়েছে। সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই কথা জানা যায়।
ছবিটি নীচে দেওয়া হল।
টুইটারে নানা রকম দাবি করা হয়েছে।
মূল হিন্দিতে | অনুবাদে |
किसानों का धर्ना खत्म नहि हुवा अदानी ने अपना बोड़ लगा दिया इसीलिए संसद में बिना पूछे बिल पास कर दि सरकार | কৃষকদের প্রতিবাদ চলার মধ্যেই আদানি তাঁদের বোর্ড টাঙিয়ে ফেলেছেন। সেই জন্যই সংসদকে কিছু না জানিয়ে বিল পাস করিয়ে নিয়েছে সরকার। |
बिल पास हुए 2 दिन नहीं हुए ये बोर्ड पहले लगा दिया ,, अध्यादेश अदानी ने लिखकर दिए थे @nstomar और @narendramodi जी को शायद। | বিল পাস হওয়ার দু দিনের মধ্যেই, তাঁরা (আদানিরা) তাঁদের বোর্ড লাগিয়ে ফেলেছেন। মনে হচ্ছে নরেন্দ্র তোমার ও নরেন্দ্র মোদীকে আদানিই নির্দেশ দিয়েছিলেন। |
বলা হচ্ছে, সরকার বিতর্কিত উপায়ে বিলটি রাজ্য সভায় পাস করিয়ে নেন, ৮ সাংসদ সাসপেন্ড হন ও আইনটির বিরুদ্ধে কৃষক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাবিগুলি করা হয়েছে। তাছাড়া গৌতম আদানির তৈরি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী মোদী-নেতৃত্বাধীন সরকারের কাছের বলে যে ধারণা রয়েছে, এই পোস্টগুলি সেই ধারণার সঙ্গে খাপ খায়। আন্দোলনরত কৃষকরা মনে করেন, সংসদে পাস হওয়া বিলটি বড় বড় কম্পানিগুলিকে কৃষকদের শোষণ করতে সাহয্য করবে। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই শিরোমণি অকালি দলের সাংসদ হরসিমরাট কউর বাদল কেন্দ্রীয় কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন।
আরও পড়ুন: পুরনো সম্পর্কহীন ছবি সাম্প্রতিক কৃষক বিক্ষোভের দৃশ্য বলে ভাইরাল
তথ্য যাচাই
পাঞ্জাবের মোগার দাগ্রু গ্রামে আদানিদের সাইলোটি কৃষি বিল পাস হওয়ার পর গড়ে ওঠেনি। এফসিআই-এর খাদ্য মজুত করার সমস্যা কমাতে সেটি ২০০৭ সালে তৈরি হয়।
তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানতে বুম আদানি লজিষ্টিক্সের এক অধিকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে।
আদানি লজিস্টিক্সের টারমিনাল অপারেশন্স-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট পুনিত মেহেন্দিরত্ত বুমকে বলেন, "সেটির নির্মাণ শুরু হয় ২০০৫ সালে আর শেষ হয় ২০০৭-এ। ২০০০ সালে একটি জাতীয় প্রকল্পের অধীনে টেন্ডারের ভিত্তিতে আদানি কাজটি পায়।"
কাজটি কৃষি বিল পাস হওয়ার পর রাতারাতি হয়ে যাওয়ার দাবি উড়িয়ে দিয়ে উনি বলেন, ওই ধরনের প্রকল্পের কাজ শেষ হতে দু' বছর সময় লাগে।
কৃষকরা যে গম উৎপাদন করেন, এফসিআই তা কিনে ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে টাকা দিয়ে দেয়, আর সেই শস্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজটা করে আদানি লজিস্টিক্স। ওই কম্পানির কথা অনুযায়ী, গমের মালিক থাকে এফসিআই আর প্রথাগত মান্ডিগুলির তুলনায় উন্নত উপায়ে ওই গম মজুত রাখে কম্পানিটি। এফসিআই-এর সঙ্গে তাদের কী ব্যবস্থা রয়েছে, তা দেওয়া আছে সংস্থাটির ওয়েবসাইটে।
কৃষি বিল পাস হওয়ার আগেই সংবাদ প্রতিবেদনে মোগার সাইলোটির উল্লেখ পাওয়া যায়। তা থেকেও এটা বোঝা যায় যে, সেটি সম্প্রতি তৈরি হয়নি। ২০০৮ সালে প্রকাশিত ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এ। প্রকাশিত একটি লেখায় বলা হয়, আদানিদের সাইলো ব্যবসা ৫-৬ বছরের মধ্যে 'ব্রেকইভেন' বা লোকসান কাটিয়ে উঠবে। ২০১৫ সালে মিন্ট-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষি ক্ষেত্রে আদানি এগিয়ে থাকার পরিকল্পনা করছেন।
আরও পড়ুন: ২০১৮ সালে দিল্লিতে কিষান মুক্তি মার্চের ছবি ছড়াল সাম্প্রতিক বলে