না, এটি অভিনেতা ইরফান খানের শেষ মুহূর্তের ছবি নয়
বুম দেখে যে, কাঁচা হাতে জোড়াতালি দিয়ে অভিনেতার মুখ ২০১৫ সালে তোলা একটি সম্পর্কহীন ছবির ওপর বসানো হয়েছে।
অভিনেতা ইরফান খানের আকস্মিক মৃত্যুর পরের দিনই তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো খবর সোশাল মিডিয়ায় ছড়াতে শুরু করে।
'দ্য নেমসেক', 'মকবুল ও 'লাইফ অফ পাই'-এর মতো ছবির কিংবদন্তী অভিনেতা, ২৯ এপ্রিল ২০২০-তে মুম্বাই শহরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩। এই বহুমুখী অভিনেতা হলিউডেও কাজ করেন। ২০১৮ সালে তাঁর শরীরে নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার ধরা পড়ে। এই সপ্তাহের শুরুতে, ইরফান তাঁর মাকে হারান, যিনি জয়পুরে পরলোকগমন করেন। কোলোন বা মলাশয়ে সংক্রমণ হওয়ায় ইরফানকে কোকিলাবেন ধিরুভাই আম্বানি হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
দুটো ছবি দিয়ে তৈরি একটি কোলাজ এখন সোশাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, সেটি অভিনেতার শেষ মুহূর্তের ছবি। ওই কোলাজের একটি ছবি প্রয়াত অভিনেতার। অন্যটি হলো কোনও এক রোগীর, যাঁর শরীরের ওপর খানের মুখ ফোটোশপ করে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
পোস্ট-করা ছবিটিতে ইরফানের মুখে যেন মৃত্যুর ছায়া পড়েছে। তার পাশে অভিনেতার আরও একটি ছবি দেওয়া হয়েছে যাতে তাঁকে সুস্থ-সবল দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ৩ মে থেকে টিকটক বন্ধ, ছড়ালো ভিত্তিহীন ভুয়ো গুজব
হিন্দি ক্যাপশনসহ ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, "যাঁরা বলেন আমরা মুসলমানদের ঘৃণা করি, তাঁরা এবার ইরফানের প্রতি দেশবাসির ভালবাসা দেখুন। ঘৃণা তো কেবল কাসাবের কাজের প্রতি। কালাম এবং ইরফান তো আমাদের হৃদয়ে বেঁচে আছেন।"
(হিন্দি ক্যাপশন: मुस्लिमों से नफरत करते है बोलने वालों आज इरफान खान के लिए देशवासियों का प्यार भी देख लेना | नफरत कसाब वाली करतूतों से है कलाम और इरफान तो दिलों में बसते है|)
পোস্টটি নীচে দেখুন; আর্কাইভ সংস্করণের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
ওই একই ছবি বেশ কয়েকটি অখ্যাত স্থানীয় নিউজ ওয়েবসাইটে দেখানো হয়।
তথ্য যাচাই
বুম ভাইরাল ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে দেখা যায়, ২০১৫ সালে প্রায় একই ধরনের ছবি ছাপা হয় বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদনে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫'য় 'হিন্দুস্থান টাইমস'-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে, ওপরের ছবিতে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে ৫৭ বছর বয়সী সুরেশভাই প্যাটেল বলে শনাক্ত করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ তাঁকে মাটিতে ফেলে মারধোর করলে উনি গুরুতর ভাবে যখম হন এবং আংশিক পক্ষাঘাত দেখা দেয় তাঁর শরীরে। প্যাটেল অ্যালাবামার হান্টসভিল-এ নিজের ছেলের কাছে গিয়েছিলেন।
প্যাটেল পরিবার পরে মামলা করে এই অভিযোগ করে যে, জাতিগত কারণেই ওই প্রৌঢ়কে নিশানা করা হয়। ওই ঘটনা সম্পর্কে আরও পড়ুন এখানে ও এখানে ।
রিপোর্টে প্যাটেলের যে ছবিটি ছিল এবং ভাইরাল ছবিটি আমরা ভাল করে মিলিয়ে দেখি। দেখা যায় ছবি দুটি একই। ছবি দুটির মিলের অংশগুলি আমরা চিহ্ন দিয়ে রাখি। মিলগুলি দেখে নিন।
আরও পড়ুন: সংবাদ উপস্থাপক রুবিকা লিয়াকতের ইফতার গ্রহণের পুরনো ছবি জিইয়ে উঠলো