
না, এটি অষ্টাদশী মাদার টেরিজার ছবি নয়
বুম দেখে এই ছবিটি ২০০৮ সালে প্রয়াত আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় ট্রান আনহ ফুয়ং নামে এক ভিয়েতনাম বংশোদ্ভূত সমাজসেবিকার।

মাদার টেরিজার ১৮ বছর বয়সের ছবি এই ভুয়ো দাবি সহ আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় এক প্রয়াত মহিলার ছবিকে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। ২৬ অগষ্ট মাদারের জন্মদিন থাকার প্রেক্ষিতেই নতুন করে ওই ভুয়ো ছবিটি জিইয়ে উঠেছে। নেটজেনদের অনেকেই এই ছবিকে মাদার টেরিজার অষ্টাদশীর সত্যিকারের ছবি ভেবে শেয়ার করেছেন।
বুম যাচাই করে দেখেছে ছবিটি মাদার টেরিজার ছবি নয়। ছবিটি ভিয়েতনাম বংশোদ্ভূত ট্রান আনহ ফুয়ং নামে এক সমাজসেবিকার, যিনি আমেরিকার ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে থাকতেন। ২০০৮ সালের ২০ এপ্রিল তিনি মারা যান।
ফেসবুকে পোস্ট করা ছবিতে ডান দিকে বড় মাপে এক তরুনী এবং বাম দিকে নীচে রয়েছে মাদার টেরিজার পরিণত বয়েসের একটি ছবি। পোস্টের স্ক্রিনশটটিতে লেখা হয়েছে, "মাদার তেরেসা'র দুর্লভ একটি ছবি। তখন তার বয়স ১৮...।"
একই ক্যাপশন সহ একাধিক ব্যক্তি ফেসবুকে ছবিটি শেয়ার করেছে চলেছেন ২৬ অগস্টের পরেও!
বুম ক্যাপশন সার্চ করে দেখে ছবিটি প্রতিবছর অগষ্টের শেষ সপ্তাহে মাদারের জন্মদিনের সময় ফিরে ফিরে আসে। ২০১৪ সালেও এই ছবি টুইট হতে দেখা গেছে। সোনি রাজদান ছবিটিকে টুইট করেন।
"@HistoryInPics: Mother Teresa at the age of 18 pic.twitter.com/OjGsbTU45y"
— Soni Razdan (@Soni_Razdan) December 26, 2014
গণমাধ্যমে ব্যবহার
২০১৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায় তাঁর ছবিটিকে যাচাই করতে পারেননি। প্রতিবেদনটি আর্কাইভ করা আছে এখানে। ছবিটি আইবি টাইমসের এক প্রতিবেদনে ব্যবহার করা হয়েছে।
এনটিভি কেনিয়া ২০১৬ সালের একটি রিপোর্টে এই ভাইরাল ছবিটিকে মাদারের ছবি বলে চালায়। ৫৮ সেকেন্ড সময়ে দেখা যাবে এই ছবির ব্যবহার।
তথ্য যাচাই
বুম যাচাই করে দেখেছে এই ছবিটি ভিয়েতনাম বংশোদ্ভূত আমেরিকা নিবাসী এক সামজসেবিকার যাঁর নাম ট্রান আনহ ফুয়ং।
বুম গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'চিলড্রেন ভিয়েতনাম ডট অরগ' এই ওয়েবসাইটে ওই মহিলার ছবি খুঁজে পায়। ওই ওয়েবসাইটে ট্রান আনহ ফুয়ং-এর ২০ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মৃত্যুর পর একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনের বাসিন্দা ওই সমাজসেবিকা মাত্র ৩৩ বছর বয়সে মারা যান।
সাউথ ইস্ট এশিয়া কলেজে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করেন ট্রান আনহ ফুয়ং। কম বয়সে তিনি ভিয়েতনামি ভাষার প্রশিক্ষক হিসেবে সেনাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ফোর্ট ব্লিশে যোগ দেন। এই শোক সংবাদের শুরুতে মাদার টেরেসার একটি মন্তব্য ব্যবহার করায় অনেকে এটিকে মাদারের ছবি বলে ভুল করেছেন।
অ্যাগনেস টেরিজার ১৮ বছর বয়সী ছবির দেখা মেলে গেট্টি ইমেজেস-এর ওয়েবসাইটে। ভিত্তোরিয়ানো রাসতেলির সৌজন্যে একাধিক মাদার টেরিজার ছবি দেখতে পাওয়া যায় ওই ওয়েবসাইটে। বুম ভাইরাল হওয়া ট্রান আনহ ফুয়ং-এর ছবি, মাদার টেরিজার ১৮ বছরের ছবি ও আরেকটি কম বয়সের ছবি তুলনা করে দেখেছে। ঠোঁটের গঠন, থুতনির ও গালের হাড়ের অমিল স্পষ্ট করে বোঝা যায়। মাদার টেরিজার বেশ কয়েটি দুর্লভ ছবি দেখা যাবে হাফিংটন পোস্টেপোস্টের এই প্রতিবেদনে।
বাম দিক থেকে প্রথমে ভাইরাল ছবি; পরের দুটি মাদার টেরিজার ছবি।
ক্যাথলিক দুনিয়ার খবরের ওয়েবাসাইট অ্যালেটিয়া ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে বিষয়টির প্রথম তথ্য যাচাই করে। আন্তর্জাতিক তথ্য যাচাইকারী সংস্থা 'স্নোপস'ও বিষয়টি নিয়ে তথ্য যাচাই করেছে।
দেখুন আমাদের ফ্যাক্ট-চেক ভিডিও:
Updated On: 2020-09-22T12:54:00+05:30
Claim : ছবির দাবি ১৮ বছর বয়সী মাদার টেরিজা
Claimed By : Facebook Posts
Fact Check : False
Next Story