না, এটি কৃষি বিল বিরোধী বিক্ষোভে নাজির মহম্মদের শিখ সাজার ভিডিও নয়
বুম দেখে ২০১১ সালে পুলিশ এক শিখ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পাগড়ি খুলে দেয়, পরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় ওই পুলিশের বিরুদ্ধে।
২০১১ সালের একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় নতুন করে শেয়ার করে মিথ্যে দাবি করা হচ্ছে এক মুসলিম ব্যক্তি হরিয়ানাতে শিখ সেজে কৃষকদের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে।
১৫ সেকেন্ডের ওই ক্লিপটিতে দেখা যাচ্ছে যে, একজন পুলিশ ও এক নিরাপত্তা কর্মী একজন শিখকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আর তারই মধ্যে, অন্য এক পুলিশ এসে, ওই শিখের মাথার পাগড়ি জোর করে খুলে দেন।
শিখ পুরুষরা মাথায় পাগড়ি পরেন এবং সেটির ধর্মীয় তাৎপর্য আছে।
ফেসবুকে ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশন লেখা হয়েছে, "এসডিপিআই কর্মী নাজির মহাম্মদ সর্দারজি সেজে হরিয়ানার কৃষকদের ধর্মঘটে সকালবেলা গ্রেফতার"
(মূল ইমরেজিতে: "Nazir Mohammed an SDPI worker, dressed as a Sardarji in farmers strike in Haryana is arrested this morning.")
ফেসবুকে একই বয়ানে ভাইরাল হয়েছে ছবিটি।
ছবিটি টুইট করে একজন লিখেছেন, "কৃষকদের প্রতিবাদের নেপথ্যে আসল সত্য। শিখ সম্প্রদায়কে খাটো করা।" পরে অবশ্য টুইটটি ডিলিট করে দেওয়া হয়। টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
২০১৯ সালে ভাইরাল
বুম দেখে এই ভিডিওটি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ ও প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ভাইরাল হয়েছিল।
ভিডিওটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
একই ক্যাপশন সমেত ভিডিওটি টুইটারেও ভাইরাল হয়েছিল সে সময়।
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: হায়দরাবাদ কর্পোরেশন ভোটের আগে জিইয়ে উঠল ওয়েইসি-ইরানির ২০১৬ সালের ছবি
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটির ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তথ্য যাচাই করেছে।
ক্লিপটির প্রধান ফ্রেমগুলি বেছে নিয়ে, বুম রিভার্স ইমেজ সার্চ করে। তার ফলে শিখনেট-এ প্রকাশিত একটি পুরনো লেখা নজরে আসে। ওই লেখাটিতে ওই ভিডিও থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশট ব্যবহার করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, "ছাঁটাই করা গ্রামীণ ভেটেরিনারি ফার্মাসিস্ট ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ দেখানোর সময়, পুলিশ আধিকারিকরা এক শিখ যুবককে আলাদা করে নিয়ে যায় এবং বিনা কারণে জোর করে তার পাগড়ি খুলে দেয়। যে পুলিশ আধিকারিক এ কাজটি করেন, তিনি হলেন মোহালি ফেজ-৩-এর স্টেশনহাউস অফিসার সাবইনস্পেক্টর কুলভূষণ। উনি বলেন যে, উনি মোহালির পুলিশ সুপার প্রীতম সিংয়ের নির্দেশেই ওই কাজ করেন।"
ওই লেখাটির সূত্র ধরে আমরা ইউটিউবে ২০১১ সালের মার্চ মাসে আপলোড করা ওই একই ভিডিওর সন্ধান পাই।
২০১১-য় মার্চের শেষ সপ্তাহে মোহালিতে বেশ বড় ধরনের এক বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে পড়ে। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী ছাঁটাই হওয়া ভেটেরিনারি ফার্মাসিস্ট ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ওই ফার্মাসিস্টরা তাঁদের চুক্তি ভিত্তিক চাকরিকে স্থায়ী করার দাবি করছিলেন।
মোহালির পিসিএ স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ওই বিক্ষোভ সংগঠিত হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসেও ওই ঘটনার প্রকাশিত হয়েছিল। তার সারাংশ নীচে দেওয়া হল।
"পাঁচ বা তার বেশি ব্যক্তি কোনও জায়গায় জমায়েত হতে পারবে না, এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগে কয়েক'শ বিক্ষোভকারীকে, যাঁরা সকলেই ক্লাস-৪ কর্মচারী, হেফাজতে নেয় পুলিশ। দুপুর ১২.৪৫-এ কয়েক'শ ছাঁটিাই হওয়া ভেটেরিনারি ফার্মাসিস্ট স্টেডিয়ামের দিকে হাঁটা দেন। ৩০ মার্চ যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ওই ফার্মাসিস্টরা 'অনির্দিষ্টকালের জন্য' বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন। - ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
আরও পড়ুন এখানে।
আমরা ৯ বছর আগে ইউটিউবে আপলোড করা ভিডিও খুঁজে পায়।