"পদ্মাবত" চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে আক্রান্ত বাসের ছবি সাম্প্রতিক বলে চালানো হচ্ছে
বুম দেখেছে, ভিডিওটি হরিয়ানার গুরুগ্রামের, যেখানে করণী সেনার লোকজন একটি স্কুল-বাসের উপর হামলা চালায়।
![পদ্মাবত চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে আক্রান্ত বাসের ছবি সাম্প্রতিক বলে চালানো হচ্ছে পদ্মাবত চলচ্চিত্রের প্রতিবাদে আক্রান্ত বাসের ছবি সাম্প্রতিক বলে চালানো হচ্ছে](https://bangla.boomlive.in/h-upload/2019/12/22/821946-821777-school-bus-attack.webp)
হরিয়ানার গুরুগ্রামে করণী সেনার দ্বারা আক্রান্ত স্কুল-বাসের ভিতর ভীত সন্ত্রস্ত শিশু পড়ুয়াদের একটি দু বছরের পুরনো ভিডিওকে সাম্প্রতিক বলে চালানো হচ্ছে।
ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল করা হয়েছে দেশ জুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ আন্দোলন এবং ১৭ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব দিল্লির সিলমপুর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে।
১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, স্কুল-বাসটির জানলা ভাঙা এবং বাচ্চারা ভয়ে চিৎকার করে কাঁদছে এবং হামলা থেকে বাঁচতে মাথা নামিয়ে নিচ্ছে। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ক্যাপশন: "শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ? সত্যি? বলে দাও, এটাও দিল্লি পুলিশেরই অপকর্ম!"
অন্য একটি ভিডিওয় একই ছবি দিয়ে সেটিকে দিল্লির সিলমপুরের ঘটনা বলে ক্যাপশন দেওয়া হয়েছে: "স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে সিলমপুরে শান্তিপ্রিয় ইসলামি জেহাদিরা কী করছে! এই জেহাদিরা বাসের বাইরে থেকে পাথর ছুঁড়ছিল আর বাসের ভিতরে সন্ত্রস্ত শিশুরা কান্নাকাটি করছিল।"
তথ্য যাচাই
ভিডিওটিকে মূল কয়েকটি ফ্রেমে ভেঙে আমরা গুগল-এর মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখি, এটি মোটেই কোনও সাম্প্রতিক ঘটনার ছবি নয়, বরং অনেক পুরনো। ভিডিওটি হরিয়ানার গুরগ্রামের এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তোলা, যখন একটি স্কুল-বাসে আক্রমণ করা হয়েছিল।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর রিপোর্ট জানাচ্ছে, ঘটনাটি ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারির, যখন পদ্মাবত চলচ্চিত্রের মুক্তির প্রতিবাদের সময় দুষ্কৃতকারীরা একটি বেসরকারি স্কুলের দু-দুটি পড়ুয়াবাহী বাসে হামলা চালায়।
২৪ জানুয়ারি জি-বিজনেস-এ আপলোড করা একটি সংবাদের অংশ হিসাবেও ২৩ সেকেন্ড সময়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির দৃশ্যই ধরা রয়েছে।
প্রতিবাদ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিল করণী সেনা, যারা সঞ্জয় লীলা ভনশালীর পদ্মাবত চলচ্চিত্রের মুক্তির প্রতিবাদ জানাচ্ছিল এই যুক্তিতে যে, তাতে ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছেl
২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি ইন্ডিয়া টুডে রিপোর্ট করে যে, পুলিশ গুরগ্রামে স্কুল-বাসে হামলা ও হিংসাত্মক ঘটনা ঘটানোর দায়ে শ্রীকরণী সেনার জাতীয় সচিব সুরজ পাল আমুকে সন্দেহ করছে।
পুলিশ সে সময় আমুকে গ্রেফতারও করে এবং বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে দেয়l তবে ইন্ডিয়া টুডে এও রিপোর্ট করে যে, পুলিশ তার এফআইআর-এ কর্নি সেনার নাম উল্লেখ করেনি।
২০১৯-এর ১৭ ডিসেম্বর দিল্লির সিলমপুরে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা শিশুদের নিয়ে যাওয়া একটি স্কুল-বাসকে আটক করেছিল ঠিকই। কিন্তু, টাইমস অফ ইন্ডিয়া রিপোর্ট করে যে, পুলিশ শিশু পড়ুয়াদের আটক বাস থেকে নামিয়ে তাদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।