সম্পর্কহীন মর্মান্তিক এক পারিবারিক বিয়োগান্তক ঘটনাকে লকডাউনের সঙ্গে জোড়া হল
বুম দেখে ছবিগুলি ২০১৯ সালের জুন মাসের এক ঘটনার এবং বর্তমান লকডাউনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্কই নেই।
নিজের তিন সন্তানকে হত্যা করার পর এক মহিলার আত্মহত্যা করার একগুচ্ছ অস্বস্তিকর ছবি মিথ্যে দাবি সহ অনলাইনে শেয়ার করা হচ্ছে করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় চলতে থাকা বর্তমান লকডাউনের পরিণাম হিসাবে।
বুম দেখে, ছবিগুলি কর্নাটকের একটি ঘটনার, যেটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের জুন মাসে। তাই ২০২০ সালের ২৪ মার্চ ঘোষণা করা লকডাউন-এর সঙ্গে ঘটনাটির কোনও সম্পর্কই থাকতে পারে না।
পোস্টের হিন্দি ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "সমাজের ব্রাহ্মণ্যবাদী ব্যবস্থার কারণে ভুল ভাবে কার্যকর করা লকডাউনের পরিণতিতে এই অতিশয় দুঃখদায়ক ঘটনাটি ঘটেছে।"
ছবিগুলিতে এক নিষ্প্রাণ মহিলার সিলিং থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝোলার এবং তিনটি শিশুর মুখ গুঁজে মাটিতে পড়ে থাকার দৃশ্য ধরা রয়েছে, যে শিশুগুলি সম্ভবত জলে ডুবিয়ে মারা হয়েছে।
বুম এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য এই প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতে এপর্যন্ত ১১৪ জনের এবং সারা বিশ্বে ৭৪,৮৫৫ জনের প্রাণ হরণ করা মারাত্মক করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২১ দিনের লকডাউন এ দেশে জারি করা হয়েছে। এই লকডাউন এবং করোনাভাইরাস নিয়ে একের পর এক ভুয়ো খবরের মধ্যেই এই খবরটিও ছড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: না, মাস্ক বিক্রি করা বাচ্চা ছেলের এই ভাইরাল ছবিটি কাশ্মীরের নয়
তথ্য যাচাই
বুম ওই পোস্ট থেকে একটি ছবি বেছে নিয়ে খোঁজখবর চালিয়ে দেখেছে, তেলুগু দৈনিক সংবাদপত্র সাক্ষী-তে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতেও একই ছবি ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ১৮ জুন কর্নাটকের কোপ্পল জেলার একটি গ্রামে। মৃতদের শনাক্ত করা হয়েছে ইয়েলাম্মা, অক্সতা, কাব্য এবং নাগরাজ নামে। নিজে গলায় দড়ি দেবার আগে মহিলা তাঁর দুই শিশুপুত্র ও এক কন্যাকে হত্যা করেন।
বুম ঘটনাটির অন্যান্য রিপোর্টেরও খোঁজ চালায়। এই ছবিটি অন্য কোথাও দেখতে না পেলেও এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট টাইমস অফইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে এ কথাও উল্লেখ করা হয় যে, মহিলার স্বামী উমেশ পলাতক। কিন্তু কোনও রিপোর্টেই কেন মহিলা এই ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ নিলেন, সে বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু বলা নেই।
আরও পড়ুন: মিথ্যে: প্রধানমন্ত্রী মোদীর রাত ৯ টায় ৯ মিনিট সংহতির আলোকিত ভারতের ছবি