মন্দিরে মাংস ছোঁড়া নিয়ে সাম্প্রদায়িক গুজব নস্যাৎ করলো ইউপি পুলিশ
হাথরস জেলার পুলিশ এই ঘটনায় কোনও সাম্প্রদায়িক রঙ খুঁজে পায়নি।
উত্তরপ্রদেশের হাথরস জেলায় স্থানীয় মুসলিমরা একটি মন্দিরের দিকে মাংসের টুকরো ছুঁড়েছে বলে সোশাল মিডিয়ায় যে গুজব ছড়ানো হয়েছে, পুলিশই তাকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
হাথরস পুলিশ জানিয়েছে, এক মুরগির মাংসের বিক্রেতা তার বাতিল মাংসের টুকরোগুলো কাছের একটি ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিল, যেগুলো রাস্তার কুকুররা টনে-টেনে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে দেয়।
টুইটার এবং ফেসবুকে ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপে একটি কুকুরকে দেখাও যাচ্ছে এক টুকরো মাংস টেনে নিয়ে যেতে, যেখানে চারপাশে স্থানীয় লোকজন এবং কিছু পুলিশও রয়েছে। এই ক্লিপটাই ভাইরাল করে ভুয়ো সাম্প্রদায়িক প্রচার চালানো হচ্ছে। হিন্দিতে প্রচার করা ভুয়ো দাবিটার অনুবাদ এ রকম: "হাথরস জনপদের নাই কা নাগলা মহল্লা একটি মিশ্র জনবসতির এলাকা, যেখানে মুসলমানরা একটি পবিত্র হিন্দু মন্দিরে মাংসের টুকরো ছড়িয়ে দিয়েছে। হিন্দু মন্দিরগুলোতে আর কতকাল এমন অনাচার চালানো হবে?"
(হিন্দিতে মূল টুইট: नाई का नगला मोहल्ला जनपद हाथरस में जहां मिश्रित आबादी रहती है वहां मुसलमानों द्वारा हिन्दुओ के पवित्र स्थल मंदिर के आसपास माँस के लोथड़े फेंके गए है| हिन्दुओ के मंदिरों के साथ ये व्यवहार आखिर कब तक ?? @Banswal_IPS @dgpup @igrangeagra @digrangealigarh @Uppolice @myogiadityanath)
টুইটটি আর্কাইভ করা আছে এখানে।
উপরের টুইটটির স্ক্রিনশট ফেসবুকেও শেয়ার করা হয়েছে।
ফেসবুকেও ভাইরাল হয়েছে ভিডিওটি।
তথ্য যাচাই
বুম টুইটটির মন্তব্য অংশে দেখেছে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ হাথরসের পুলিশকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছে এবং হাথরস পুলিশও জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং সেটি তদন্ত করে দেখতে একটা দলও গঠন করেছে।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের টুইটটি নীচে দেখা যেতে পারে।
@hathraspolice - कृपया सूचनार्थ एवं तत्काल आवश्यक कार्यवाही हेतु।
— UP POLICE (@Uppolice) February 13, 2020
তদন্ত করে অবশ্য ঘটনাটিতে কোনও সাম্প্রদায়িক ঝোঁক পাওয়া যায়নি এবং হাথরস পুলিশ সে কথা টুইট করে জানিয়েও দিয়েছে।
हाथरस पुलिस द्वारा उक्त खबर का खंडन किया जाता है। pic.twitter.com/Ov0O0thAKe
— HATHRAS POLICE (@hathraspolice) February 13, 2020
হাথরস পুলিশের বিবৃতির অনুবাদ নীচে দেওয়া হলো।
অস্বীকার
একটি ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, হাথরস জনপদের নাই কা নাগলা এলাকায় মুসলমানরা একটি পবিত্র হিন্দু মন্দিরে মাংসের টুকরো ছড়িয়ে রেখেছে। তদন্তকারী অফিসার যখন সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, তখন দেখা যায়, অন্য কোনও মাংস নয়, মুরগির মাংসের কয়েকটি টুকরো ছড়ানো, যেগুলো রাস্তার কুকুররা ডাস্টবিন থেকে টেনে-টেনে নিয়ে গেছে। মুসলমানরা হিন্দু মন্দিরের দিকে ওই মাংস ছুঁড়েছে, এমন কোনও তথ্য কোনও উত্স থেকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ একজন মুরগির দোকানির ফেলে দেওয়া কিছু বাতিল মুরগির দেহাবশেষও ডাস্টবিনে দেখতে পেয়েছে।
তাই হাথরস পুলিশ এই অভিযোগটি অস্বীকার করছে
সোশাল মিডিয়া সেল, হাথরস পুলিশ
কাছাকাছি কোনও মন্দির রয়েছে কিনা, সেটা স্পষ্ট নয়, কেননা ভিডিও ক্লিপটিতে কোনও মন্দির দেখা যাচ্ছে না।
বুম-এর ভিশুয়াল তদন্তে ছাড়ানো মুরগির দেহাবশেষ দেখেছে যা ভিডিওটিতেও শেষের দিকে রয়েছে।
উপরের ছবিতে যে কাঁচা মাংসের টুকরোগুলো দেখা যাচ্ছে, সেগুলো ফেলে দেওয়া মুরগির দেহাবশেষ। আর নীচের ছবিতে (যা ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিরই স্ক্রিনশট) একটা ডাস্টবিনও দেখা যাচ্ছে, যেটার ছবি তুলতে ভিডিওকারী ঘুরে দাঁড়াতে একটা রাস্তার কুকুরকেও অদূরেই দেখা যাচ্ছে।