উত্তরাখন্ডে এক নিগ্রহকারীকে মারার পুরনো ভিডিও জিইয়ে উঠলো
বুম যাচাই করে দেখে যে ভিডিওটি ২০১৮ সালের অগস্ট মাসের। দেরাদুনে এক মহিলাকে শ্লীলতাহানি করলে রাস্তায় ফেলে তাকে মারা হয়।
সোশাল মিডিয়ায় সাধু বেশী এক বহুরুপীকে শ্লীলতাহানির অভিযেগে মারধোর করার দুবছরের পুরনো ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবি সহ শেয়ার করা হচ্ছে। ফেসবুকে দাবি করা হচ্ছে মুসলিমরা নাকি ওই সাধুর উপর আত্যাচার করছে।
১ মিনিট সময়ের ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, সারা গায়ে ছাই মাখা এক ব্যক্তিকে বেশ কয়েকজন যুবক ঘিরে ধরেছে রাস্তার এক পাশে। তাদের মধ্যে এক যুবক লাঠিপেটা করে ওই ব্যক্তিকে। জটা ধরে এক যুবককে টান দিতেও দেখা যায়। ওই ছাই মাখা ব্যক্তিটি কাকুটি মিনতি করে। আরেক যুবক ওই আক্রমণকারী করা যুবককে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। আক্রমণের শিকার হওয়া ওই ব্যক্তি পোঁটালা নিয়ে সরে যায় পরে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে হিন্দিতে লেখা হয়েছে, "যে মারছে সে মুসলিম এবং যে মার খাচ্ছে সে সাধু। যদি সঠিকভাবে ভিডিওটি শেয়ার হয় তাহলে তিনদিনের মধ্যে এর উত্তর পাবে।"
(মূল হিন্দিতে ক্যাপশন, "मारने वाला मुस्लिम और मार खानेवाला एक साधु ...!! 3 दिन के अंदर ये हाथ जोड़ता हुआ नजर आएगा ,अगर अच्छे से वायरल हुआ तो....!!")
ভিডিওটি ফেসবুকে একই বয়ানে বিভিন্ন জায়গায় শেয়ার করা হয়েছে।
টুইটারে ভাইরাল
ভিডিওটি টুইটারেও একই ক্যাপশন সহ জায়গায় শেয়ার করা হয়েছে।
मारने वाला मुस्लिम और मार खाने वाला एक साधु....!! 3 दिन के अंदर ये हाथ जोड़ता हुआ नजर आयेगा, अगर अच्छे से वायरल हुआ तो.....!! 👇👇👇👇👇 pic.twitter.com/azzaBPWZSm
— Arvind Pandey (@ArvindP77654600) May 15, 2020
নিতীন শুক্লা নামে এক ব্যক্তি এই ভিডিওটি টুইট করে বলেন যে, "#Palghar ঘটনা একটি দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত আক্রমণ। এখন সাধুদের বিভিন্ন জায়গায় অপদস্থ হতে হচ্ছে। যে মারছে সে মুসলমান। আগামীকাল কি আপনি হবেন? তারা কি আপনাকে বাড়িতে ঢুকে মারবে? দিল্লীর মতো? নিজেকে বাঁচাতে হলে এই আতঙ্কবাদীদের জেলে পাঠান।মনে হচ্ছে ঘটনাটি এখানকার Lane C 15,Turner Road, Dehradun".
#Palghar संयोग नही प्रयोग था, अब अलग अलग जगह साधुओं की लीनचिंग की जा रही है, मारने वाले मुसलमान हैं, कल आपका नंबर आने वाला है? ये सब आपको घर मे घुस कर मरेंगे? दिल्ली की तरह? बचना है तो इन आतंकवादियों को जेल भिजवाओ, मामला Lane C-15, Turner Road, Dehradun का मालूम पड़ता है pic.twitter.com/WGxAh15PPl
— Nitin Shukla (@nshuklain) May 15, 2020
(হিন্দিতে মূল ক্যাপশন, "#Palghar संयोग नही प्रयोग था, अब अलग अलग जगह साधुओं की लीनचिंग की जा रही है, मारने वाले मुसलमान हैं, कल आपका नंबर आने वाला है? ये सब आपको घर मे घुस कर मरेंगे? दिल्ली की तरह? बचना है तो इन आतंकवादियों को जेल भिजवाओ, मामला Lane C-15, Turner Road, Dehradun का मालूम पड़ता है")
ভিডিওটি টুইটারে সাম্প্রদায়িক রঙ মাখিয়ে শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে ঘটনাটি উত্তরাখণ্ডের। আরও এরকম একটি টুইট আর্কাইভ করা আছে এখানে।
আরও পড়ুন: মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের ছবিকে ভারতে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোগান্তি বলা হল
তথ্য যাচাই
বুম ভিডিওটি ২০১৮ সালে তথ্য যাচাই করেছিল। সাম্প্রদায়িক রঙ লাগিয়ে ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছিল এক নাগা সাধুকে মুসলিমরা প্রহার করছে।
"ভারতে ইসলামিক চরমপন্থীরা এক দরিদ্র ভিখারীকে মারছে," এই মর্মে ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ভিডিওটি টুইট করেন ইমাম তাওহিদি নামের এক অস্ট্রলিয়ার টুইটার প্রভাবক। পরে অবশ্য ওই টুইটটিকে মুছে দেন তিনি। টুইটটির ক্যাচে সংস্করণ আর্কাইভ করা আছে এখানে।
বলিউড অভিনেত্রী কোয়েনা মিত্র এই ভিডিওটি কোট করে টুইট করে বলেন, "ব্যক্তিটি একজন নাগা সাধু। এটি আমাদের দেশে প্রতিদিনই ঘটে।" টুইটটি পরে তিনিও মুছে দেন।
৩০শে আগষ্ট ২০১৮ সালে দেরাদুন পুলিশ তাঁদের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে বলেন যে, ঐ ব্যক্তি একজন বহুরূপী। ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নেশা করে মহিলাকে উত্যক্ত করার অভিযোগ আছে।
सोशल मीडिया पर एक व्यक्ति जिसे नागा साधु बताते हुए कुछ लोगों द्वारा पीटने का एक वीडियो वाइरल किया जा रहा है।
— SSP Dehradun (@DehradunSsp) August 30, 2018
उक्त संबंध में ज्ञात हो कि उक्त व्यक्ति एक बहुरूपिया है, जिसके विरुद्ध नशे की हालत में छेड़छाड़ की एक घटना में संलिप्त होने की शिकायत पर वैधानिक कार्यवाही की गयी है। pic.twitter.com/GB9uoDlsMs
বুমের তরফে সে সময় দেরাদুন পুলিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেরাদুন পুলিশ জানায় ভিডিওর প্রহৃত ব্যক্তি কোনও সাধু নয়। এক মহিলাকে শ্লীলতাহানি করার জন্য প্রহার করা হয়েছিল তাকে। পুলিস সূত্র বুমকে আরও জানায় ওই ব্যক্তিকে প্রহার করা ব্যক্তিদের কেউই মুসলিম ছিলেন না।
বুম কে পাটের নগরের ইন্সপেক্টর সূর্য ভূষণ নেগি জানান যে, ঘটনাটি ২০১৮ সালের ২৪ শে অগস্টের। ওই ব্যক্তি একটি বাড়িতে ঢুকে একা থাকা এক যুবতী মেয়েকে শ্লীলতাহানি করেছিল। মেয়েটির চিৎকার শুনে তার ভাই এসে লোকটিকে টেনে বের করে মারতে শুরু করে। মেয়েটির পরিবারও হিন্দু।
নেগি আরও বলেন, ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মহিলার বাড়ি থেকে থানায় এফআইআর করা হয়। ভিডিওটিতে কয়েকজন মুসলিম যুবক দাঁড়িয়ে ঘটনাটি দেখছেন, কিন্তু ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই।
বুমকে নেগি আরও জানান যে,কারা এই ভিডিও তুলেছে তার অনুসন্ধান চলছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দেরাদুন পুলিশ এই সম্পূর্ণ ঘটনার বিবরণ টুইট করে বলে যে এই ঘটনা জুড়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য রটানো হচ্ছে।
@tsrawatbjp @uttarakhandcops @DehradunDm@annantsrivastav
— SSP Dehradun (@DehradunSsp) September 2, 2018
सोशल मीडिया पर एक व्यक्ति जिसे नागा साधु बताते हुए कुछ लोगों द्वारा पीटने का एक वीडियो विभिन्न भ्रामक संदेशो के साथ वाइरल किया जा रहा है, उक्त प्रकरण में वास्तविक तथ्य निम्नवत् हैं- pic.twitter.com/pc3zYsKxvw
২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তথ্য যাচাই করা বুমের প্রতিবেদনটি পড়া যাবে এখানে।
আরও পড়ুন: তেলেঙ্গানায় রমজানের উপহার বিলি নিয়ে সুদর্শন নিউজের সম্পাদকের ভুয়ো দাবি