অসমের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাশবিকতার ভিডিও? আসল ঘটনা
বুম দেখে ভিডিওটি শ্রীলঙ্কার একটি জেলে তোলা হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার জেলে পুলিশের নৃশংসতার দৃশ্যের ১১ মাসের পুরনো একটি ভিডিও মিথ্যে দাবি সহ ভাইরাল হয়েছে। বলা হচ্ছে, ভিডিওটি অসমের এক ডিটেনশন ক্যাম্পে মুসলমানদের অত্যাচারের ছবি।
বুম ৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পায়। তাতে বন্দিদের অত্যাচার করতে দেখা যাচ্ছে জেল আধিকারিকদের।
সতর্কতা: ভিডিওটি কারও কাছে অস্বস্তিকর মনে হতে পারে
বুম ক্যাপশনটি দিয়ে সার্চ করে। দেখা যায়, ২৪ ঘন্টার মধ্যে, একই ক্যাপশন সহ ভিডিওটি ফেসবুকে একাধিকবার শেয়ার করা হয়।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন(এনসিআর)-এর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ চলাকালে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্ত করাই এগুলির উদ্দেশ্য। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এগুলি ভারতীয় মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক।তথ্য যাচাই
ভিডিওটি খুঁটিয়ে দেখলে লক্ষ করা যায় যে, 'ট্রুথলঙ্কা.কম' লেখা আছে এক কোণে। সেটি শ্রীলঙ্কার একটি সংবাদ ওয়েবসাইট, যেটি এখন আর কাজ করে না।
এর পর, প্রধান শব্দগুলি দিয়ে সার্চ করা হয়। তার ফলে ১৭ জানুয়ারি ২০১৯-এ 'এশিয়া টাইমস'-এ প্রকাশিতে একটি লেখা সামনে আসে। সেটির সঙ্গে ছিল ভাইরাল ভিডিওটি থেকে নেওয়া একটি স্ক্রিনশট। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় বন্দিদের মাটিতে খত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং তারপর মারধোর করা হচ্ছে তাদের। এ কাজটা করছেন শ্রীলঙ্কার অঙ্গুনাকোলাপেলেস্সা জেলের অফিসাররা।
এশিয়া টাইমস বলে যে, ভিডিওটি নভেম্বর ২০১৮ সালে তোলা হয়। সেই সময়, শ্রীলঙ্কা একটি সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল এবং সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল।
"ভিডিওটি জেলের ঘেরা জায়গাটিতে বসানো দুটি ক্যামেরার সাহায্যে তোলা। নভেম্বর ২২ তারিখের সকাল ৮.৫৬ থেকে ৯.১৮'র মধ্যে বন্দিদের ধরে এনে তাদের মারধোর করা হয়," জানায় রিপোর্টটি।
বুম ওই ভিডিওর একটি ছোট সংস্করণও পায়। সেটি ১৬ জানুয়ারি ২০১৯-এ 'কলম্বো টেলিগ্রাফ' নামে এক সংবাদ ওয়েবসাইট ইউটিউবে আপলোড করেছিল। সেটির শিরোনামে বলা হয়, "অঙ্গুনাকোলাপেলেস্সা জেলের প্রতিবাদী বন্দিদের নির্মমভাবে মারা হয় – পর্টি ১।" তা থেকে প্রমাণ হয় যে ভিডিওটি দক্ষিণ শ্রীলঙ্কার একটি জেলে তোলা হয়েছিল।