"নিরীহ লোকদের ওপর লাঠি চালাতে পারি না": পুলিশও কি প্রতিবাদে সামিল?
মূল ছবিতে রয়েছে নভেম্বর মাসে আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের প্রতিবাদে পুলিশ আধিকারিকদের হাতে ধরা অন্য বয়ানের পোস্টার।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে প্ল্যাকার্ড হাতে পুলিশ ধর্নায় বসেছে, এমন একটি ভুয়ো এবং ফোটোশপ করা ছবি শেয়ার করা হচ্ছে। মূল ছবিটি ৫ নভেম্বর ২০১৯ এর দিল্লি পুলিশের উকিলদের বিরুদ্ধে ধর্ণার।
এটা এ ধরনের দ্বিতীয় ছবি যাতে দাবি করা হচ্ছে যে, পুলিশ ওই নতুন আইনটির বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। ছবিটা এমন সময় প্রকাশিত হচ্ছে, যখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-এর প্রতিবাদে দেশ জুড়ে গণবিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছেl এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছে, যার অধিকাংশই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পরিণামে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ তিনটি আলাদা পোস্টার তুলে ধরে আছে: "নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নয়, জাতীয় নাগরিকপঞ্জিও (এনআরসি) নয়", "আমরা এনআরসি ও সিএএ-র বিরোধিতা করি" এবং একটি হিন্দিতে লেখা পোস্টার, যার অনুবাদ হলো—"নিরীহদের ওপর পুলিশ লাঠি চালাবে না।"
তিনটি পোস্টারই ভুয়ো এবং সেগুলি ছবির সঙ্গে ফোটোশপ করে জোড়া হয়েছে।
এরকম একটি পোস্ট আর্কাইভ করা আছে এখানে।
তথ্য যাচাই
একটু নিবিড়ভাবে ছবিটি পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যাবে, পোস্টারের ধারগুলি ঘষে তোলা হয়েছে, যাতে এগুলির ফোটোশপ হওয়ার সম্ভাবনার দিকেই ইঙ্গিত করে।
ছবিটি অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, এটি ২০১৯-এর ৫ নভেম্বরে তোলা, যখন আইনজীবীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর পুলিশ কর্তারা যে ভাবে সাধারণ কনস্টেবলদের সঙ্গে আচরণ করেছেন, তার প্রতিবাদে আইটিও-য় পুলিশের সদর-দফতরে বিক্ষোভ দেখানো হয়l
২ নভেম্বর পার্কিং নিয়ে বিরোধের জেরে তিস হাজারি আদালতের বাইরে পুলিশের সঙ্গে আইনজীবীদের সংঘাত বাধেl সংঘর্ষে উভয় পক্ষেই বেশ কয়েকজন গুরুতরভাবে আহত হন এবং বেশ কিছু গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা গোটা দেশকেই আলোড়িত করে।
মূল ছবিটি প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার (পিটিআই), যা দ্য স্ক্রল-এর একটি প্রতিবেদনে এবং অন্য কয়েকটি সংবাদ-ওয়েবসাইটও ব্যবহৃত হয়েছিল
এই মূল ছবির পোস্টারগুলিতে লেখা: "আমরা ন্যায়বিচার চাই", আর হিন্দিতে লেখা পোস্টারগুলোর অনুবাদ করলে দাঁড়ায়—"কে আমাদের কথা শুনবে, কার কাছে আমরা অভিযোগ জানাব" এবং "আজ পুলিশের ওপর, কাল?"
মূল ছবিটি ৫ নভেম্বর ২০১৯ এর দিল্লিতে উকিলদের বিরুদ্ধে পুলিশের ধর্ণা দেওয়ার। (সৌজন্য: পিটিআই)